সময়টা ২০০০ সালের সেপ্টেম্বর। বয়সটা তখন সবে ১৩ বছর। বার্সেলোনার ট্রায়ালে সবাইকে চমকে দিলেন লিওনেল মেসি। এরপর একদিন হঠাৎ বার্সার ক্রীড়া পরিচালক কার্লোস রেক্সাস মেসির পরিবারকে দুপুরের খাবারের নিমন্ত্রণ জানালেন। ১৪ ডিসেম্বর রেস্তোরাঁর এক টুকরো ন্যাপকিন পেপারে (হাত ও মুখ মোছার কাগজ) প্রাথমিক চুক্তি সই হয়েছিল বার্সেলোনা ও খুদে মেসির।

এরপরের গল্পটা প্রায় সবার জানা। রূপকথার মতো উত্থান এ অমিত প্রতিভার। মেসি বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলার হয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বিখ্যাত হয়েছে তার সই করা সেই ন্যাপকিনও। যা এবার নিলামে উঠতে চলেছে।

বার্সেলোনার হয়ে টানা ১৭ বছর খেলেছেন মেসি। ৭৭৮টি ম্যাচ খেলে ৬৭২ গোল করেন ক্লাবটির ইতিহাসের সেরা এই ফুটবলার। জিতেছেন ১০টি লা লিগা, ৪টি চ্যাম্পিয়নস লিগ। এখনও ক্লাবের সমর্থকরা ভুলতে পারেনি তাকে। প্যারিস ঘুরে এখন ইন্টার মায়ামিতে খেলছেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা। এতদিন পর হঠাৎ আলোচনায় সেই ন্যাপকিন পেপার। 

এ ন্যাপকিন চুক্তি এতদিন রাখা ছিল বার্সেলোনার মিউজিয়ামে। চাইলে তা দেখতেও পারতেন সমর্থকরা। সেখান থেকে হঠাৎই নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী মার্চে ব্রিটিশ নিলামকারী প্রতিষ্ঠান বোনহামস এটিকে নিলামে তুলছে। নিলামে ন্যাপকিন পেপারটির ভিত্তিমূল্য ধরা হয়েছে ৩ লাখ পাউন্ড। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা দাঁড়ায় পায় ৪ কোটি ১৯ লাখ টাকায়।

এই নিলাম প্রসঙ্গে বোনহামসের দুষ্প্রাপ্য বই ও পাণ্ডুলিপি বিভাগের প্রধান ইয়ান এহলিং বলেন, ‘আমি নিলাম পরিচালনা করেছি, এমন জিনিসগুলোর মধ্যে এটি সবচেয়ে রোমাঞ্চকর। হ্যাঁ, এটি ন্যাপকিন পেপার। কিন্তু এটা সেই ন্যাপকিন পেপার, যেটার মাধ্যমে লিওনেল মেসির ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল। এটা বার্সার ভবিষ্যৎ আর মেসির জীবন পরিবর্তন করে দিয়েছিল। ফুটবলে বিশ্বের কোটি সমর্থককে চমৎকার মুহূর্ত উপহার দিয়েছে।’

ন্যাপকিনটি এতদিন সযত্নে রেখে দিয়েছিলেন মেসির তৎকালীন স্থানীয় অভিভাবক হোরাসিয়ো গ্যাগিয়োলি। তাতে মেসি ছাড়াও সই রয়েছে বার্সেলোনার তৎকালীন টেকনিক্যাল সচিব কার্লেস রেক্সাচ এবং মেসির আবিষ্কর্তা হিসাবে পরিচিত জোসেফ মারিয়া মিগুয়েলার। সেদিনের সেই চুক্তিপত্রে লেখা ছিল,  ‘বার্সেলোনায় ১৪ ডিসেম্বর, ২০০০ সালে মিনগেলা, হোরাশিও আর বার্সার ক্রীড়া পরিচালক কার্লোস রেক্সাসের উপস্থিতিতে পূর্ণ দায়িত্বের সঙ্গে নির্দিষ্ট অঙ্কে লিওনেল মেসিকে সই করানোর ব্যাপারে একমত হওয়া গেল।’

এফআই