গত চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিতে মুখোমুখি হয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ ও ম্যানচেস্টার সিটি। সেবার রিয়ালকে দুই লেগ মিলিয়ে ৫-১ গোলে বিধ্বস্ত করেছিল সিটি। এবার শেষ আটের ম্যাচে আবারও মুখোমুখি হচ্ছে দুই দল। আজ (মঙ্গলবার) দিবাগত রাতে সান্তিয়াগো বার্নাবুয়ে প্রথম লেগে রিয়াল-সিটির দ্বৈরথ দেখা যাবে।

প্রতিশোধের ম্যাচে রিয়ালের সামনে বড় বাধা হতে পারেন সিটির রদ্রি। ক্লাব ও জাতীয় দলের হয়ে ৬৪ ম্যাচে অপরাজিত ২৭ বছর বয়সী স্প্যানিশ এই তারকা। সর্বশেষ ২০২৩ সালের মার্চে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ইউরো ২০২৪ বাছাইপর্বে স্পেনের হয়ে পরাজয়ের স্বাদ পেয়েছিলেন। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে গোল করে সিটিকে শিরোপা উপহার দিয়েছেন। সিটির হয়ে প্রিমিয়ার লিগ, এফএ কাপ, উয়েফা সুপার কাপ ও ক্লাব ওয়ার্ল্ড কাপের শিরোপা জয়েও ভূমিকা রেখেছেন। একইসঙ্গে স্পেনের নেশন্স লিগের শিরোপা জয়েও অবদান রেখেছেন।

সিটি বস পেপ গার্দিওলা নিয়মিতভাবেই রদ্রিকে ‘বিশ্বের সেরা মিডফিল্ডার’ হিসেবে প্রশংসা করে থাকেন। দলে বেশ কয়েকজন তারকা খেলোয়াড় থাকলেও গার্দিওলার জন্য রদ্রি যেন অপরিহার্য্য একজনে পরিণত হয়েছেন। দীর্ঘ ইনজুরির কারণে এবারের মৌসুমে প্রায় বেশিরভাগ ম্যাচে সিটিজেনরা আর্লিং হালান্ড ও কেভিন ডি ব্রুইনাকে দলে পায়নি।

অন্যদিকে, এবারের মৌসুমে সব ধরণের প্রতিযোগিতায় সিটির চারটি পরাজয়ের ম্যাচেই নিষেধাজ্ঞার কারণে অনুপস্থিত ছিলেন রদ্রি। একইভাবে এক বছর আগে হ্যাম্পডেন পার্কে স্কটিশদের কাছে হারের পর গত মাসে প্রীতি ম্যাচে কলম্বিয়ার কাছে স্পেনের একমাত্র পরাজয়ের ম্যাচটিতে পুরো ৯০ মিনিট বদলি বেঞ্চে ছিলেন রদ্রি।

সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে দুই সপ্তাহ আগে স্পেন ও ব্রাজিলের ৩-৩ গোলের ড্রয়ের প্রীতি ম্যাচটিতে জোড়া গোল করেছেন রদ্রি। গত সপ্তাহে অ্যাস্টন ভিলার বিপক্ষে মৌসুমের অষ্টম গোল করার পর গার্দিওলা বলেছেন, ‘রদ্রিই সেরা। তার পজিশনে সেই সেরা, যে কারণে আমার কাছে মনে হয় আমার দলে সবকিছু আছে। যেভাবে রদ্রি ম্যাচের আবহ বুঝতে পারে তাতে মনে হয় সবসময় সে প্রস্তুত থাকে। অনেক দিক থেকেই সে সেরা। উপস্থিতি, শারিরীক সক্ষমতা, সব মিলিয়ে একজন পরিপূর্ণ খেলোয়াড় হিসেবে রদ্রি মাঠে নামে।’

গত গ্রীষ্মে জুড বেলিংহামকে দলে ভেড়ানোটা রিয়াল মাদ্রিদের জন্য অনেক বড় একটি সফলতা ছিল। আর্থিকভাবে লাভবান প্রিমিয়ার লিগের কোন ক্লাবই তাদের ঘরের ছেলেকে ধরে রাখতে পারেনি। কিন্তু সিটি বিশ্বাস করে মাদ্রিদে জন্ম নেওয়া রদ্রি প্রায় একইভাবে বেলিংহামের মতই নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করে চলেছে। ভিয়ারিয়াল থেকে মাত্র এক মৌসুম অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদে কাটানোর পর ২০১৯ সালে ৬২ মিনিয়র ইউরোতে রদ্রিকে দলে ভেড়ায় সিটি।

বেলিংহাম ও রদ্রির মধ্যে হেড-টু-হেড লড়াইয়ে কে জিতবে তা সময়ই বলে দেবে। কিন্তু এই দুজনই যে তাদের নিজ নিজ দলের লম্বা রেসের ঘোড়া তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। গত তিন মৌসুমে স্প্যানিশ ও ইংলিশ জায়ান্টের মধ্যে এটি তৃতীয় প্রতিদ্বন্দ্বিতা।

দুই বছর আগে বার্নাব্যুতে সিটি দুই গোলে এগিয়ে থাকলেও স্টপেজ টাইমের গোলে ফিরে এসে রিয়াল ১৪তম ইউরোপীয়ান কাপের শিরোপা ঘরে তুলেছিল। এক বছর পর আরও এক সেমিফাইনালে গার্দিওলার দল মাদ্রিদকে তাদের ঘরের মাঠে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করে মধুর প্রতিশোধ নেয়।

এফআই