দলবদলে নেই চট্টগ্রাম আবাহনী, মৌসুম শেষেও শাস্তি নেই গোপালগঞ্জের
গত ৫ জুন ছিল প্রিমিয়ার ফুটবল লিগের ক্লাবগুলোর বয়সভিত্তিক লিগে নিবন্ধনের শেষ সময়। ঘরোয়া ফুটবলের ঐতিহ্যবাহী ক্লাব চট্টগ্রাম আবাহনী অনূর্ধ্ব-১৮ লিগে কোনো খেলোয়াড় নিবন্ধন করায়নি। এ ছাড়া নির্ধারিত সময়ে রেজিষ্ট্রেশন সম্পন্ন করেছে প্রিমিয়ারের অন্য সকল ক্লাবই। ২২-২৫ জুনের মধ্যে অ-১৮ লিগ শুরু হওয়ার কথা।
এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (এএফসি) গাইডলাইন অনুযায়ী প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবগুলোর বয়সভিত্তিক দল থাকা বাধ্যতামূলক। বাংলাদেশের ক্লাবগুলোর সেভাবে আর্থিক ভিত্তি নেই। তাই কোনো ক্লাবই বছরজুড়ে বয়সভিত্তিক খেলোয়াড়দের লালন-পালন করে না। ফেডারেশন আয়োজিত টুর্নামেন্ট/লিগের আগে ফুটবলার জোগাড়ের পর অংশগ্রহণ করে নামকাওয়াস্তে। এবার প্রিমিয়ার লিগ থেকে অবনমিত হওয়া ব্রাদার্স ইউনিয়ন জুনিয়র লিগে দল গড়লেও, চট্টগ্রাম আবাহনী করেনি। সাবেক জাতীয় ফুটবলার ও চট্টগ্রাম আবাহনীর প্রিমিয়ার লিগ ফুটবল দলের ম্যানেজার আরমান আজিজ বলেন, ‘আমার দায়িত্ব শুধু প্রিমিয়ার লিগ দলের। অ-১৮ নিয়ে আমাকে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। বিগত সময়ে জুনিয়র লিগের দল আমাদের মহাসচিব (শামসুল হক চৌধুরী) মহোদয় করেছিলেন।’
বিজ্ঞাপন
চট্টগ্রাম আবাহনী ফুটবল ক্লাব মূলত চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য শামসুল হক চৌধুরীর। ক্লাবটির এই মহাসচিব পটিয়ার কয়েকবারের এমপি ও জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ। তিনি বাফুফের একাধিকবারের নির্বাহী সদস্য এবং সর্বশেষ বাফুফে নির্বাচনে কাজী সালাউদ্দিনের প্যানেলের প্রধান সমন্বয়কারীও ছিলেন। সালাউদ্দিনের মেয়াদের অন্তিম মুহূর্তে শামসুলের চট্টগ্রাম আবাহনী জুনিয়র লিগে অংশগ্রহণ করছে না। যা চট্টগ্রাম আবাহনীর ঐতিহ্য এবং মহাসচিব শামসুলের রাজনৈতিক প্রভাব, আর্থিক সামর্থ্যের সঙ্গে মোটেও মানানসই ও গ্রহণযোগ্য নয়। ২০১৬ সাল থেকে চট্টগ্রাম আবাহনী ফুটবল দল দেখছেন মূলত সাইফ পাওয়ারটেকের কর্ণধার তরফদার রুহুল আমিন। চট্টগ্রাম আবাহনীকে টানা সাত-আট মৌসুম ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি দেখভাল করেছেন। একা ক্লাব টানতে টানতে তিনিও যারপরনাই ক্লান্ত।
লিগের বাইলজ অনুযায়ী জুনিয়র লিগে অংশগ্রহণ করা বাধ্যতামূলক। চট্টগ্রাম আবাহনী বাইলজ ভঙ্গ করায় শাস্তির মুখে পড়েছে। লিগ কমিটি বিষয়টি ডিসিপ্লিনারি কমিটির কাছে প্রেরণ করবে, তারাই নির্ধারণ করবে শাস্তি।
সদ্য সমাপ্ত মৌসুমে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে দলবদল শেষ হওয়ার দিন গোপালগঞ্জ স্পোর্টিং ক্লাব অংশগ্রহণের অপরাগতা প্রকাশ করে। সেই মৌসুম শেষ হয়ে ১ জুন থেকে নতুন মৌসুম শুরু হয়েছে। বাফুফে এখনও গোপালগঞ্জের শাস্তিই দিতে পারেনি। ডিসিপ্লিনারি কমিটির চেয়ারম্যান দেশের বাইরে ছিলেন বেশ কয়েক মাস। তিনি দেশে ফিরছেন এক মাস হয়েছে। এর মধ্যে ডিসিপ্লিনারি কমিটির এক সভা হলেও গোপালগঞ্জের শাস্তির বিষয়টি তোলেনি বাফুফে সচিবালয়।
সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব ফুটবল লিগ থেকে দল প্রত্যাহার করে নেওয়ায় দুই মৌসুম আগে ৩০ লাখ টাকা জরিমানা করেছিল বাফুফে। সেই সিদ্ধান্ত বেশ দ্রুতই নিয়েছিল বাফুফে। গোপালগঞ্জের ক্ষেত্রে আকস্মিকভাবে তাদের ‘ধীরে চলো’ নীতি। দেশের ফুটবলে সর্বোচ্চ স্তরে না খেলার শাস্তি হতে এক মৌসুম পেরিয়ে যায়। সেখানে জুনিয়র লিগে অংশগ্রহণ না করে কতটুকু শাস্তি হবে সেটাও বড় প্রশ্ন। ক্লাবগুলোকে ফেডারেশন শাস্তি/সতর্ক করলেও বাফুফে অভিভাবক সংস্থা হিসেবে ক্লাবগুলোর প্রতি সঠিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ। ফেডারেশনের কাছে ক্লাবগুলোর লিগ/টুর্নামেন্টের অংশগ্রহণ ফি ও প্রাইজমানির বড় অঙ্কের বকেয়া রয়েছে।
এজেড/এএইচএস