কবে, কখন, কোথায়?
বার্সেলোনা-অ্যাটলেটিকো 
রাত ৮-১৫ মি., শনিবার
ন্যু ক্যাম্প, বার্সেলোনা

লিওনেল মেসি আর লুই সুয়ারেজ খেলছেন ন্যু ক্যাম্পে। এর আগেও বহুবার খেলেছেন। তবে এবারের সঙ্গে আগের সব বারের পার্থক্য, এবার যে দুই বন্ধু খেলছেন ভিন্ন দুই দলে! সুয়ারেজের অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিরুদ্ধে আজ যখন মাঠে নামবেন, বিষয়টা কি মেসি-সুয়ারেজদের মগজেও কাজ করবে না একটু?

তবে আবেগের রেশটা কেটে গেলেই দুজনকে পা রাখতে হবে বাস্তবতার জমিনে। যেখানে প্রথম যে বিষয়টা বিবেচ্য, তা হচ্ছে লিগের সমীকরণ। লা লিগার শীর্ষে থাকা অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ আর তিনে থাকা বার্সেলোনা লড়বে মাঠে, যেখানে সুয়ারেজের দল মেসিদের চেয়ে এগিয়ে ২ পয়েন্টে। ৭৬ পয়েন্টে থাকা অ্যাটলেটিকোকে আজ ৭৪ পয়েন্টে থাকা বার্সা হারিয়ে দিলেই উঠে যাবে লিগের শীর্ষে, চলতি ‘ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ’ মৌসুমে প্রথমবারের মতো। আর পা হড়কালেই লিগের আশা শেষ হয়ে যাবে এখানেই। 

এমন এক ম্যাচে যখন নামবে দল, প্রতিপক্ষ ডাগআউটে থাকবেন যখন দিয়েগো সিমিওনের মতো ধুরন্ধর ট্যাকটিশিয়ান, সে ম্যাচেই কিনা কোচ রোনাল্ড কোম্যানকে নিষেধাজ্ঞার জন্য পাবে না বার্সা! বড় ম্যাচে কোচ না থাকা যে কোনো দলের জন্যেই বড় একটা অসুবিধার কারণ। কিন্তু সে ‘বড় ম্যাচটা’ যদি হয় যাদের সঙ্গে মূল লড়াই তাদের বিপক্ষেই, কাজটা তখন এভারেস্টসম হয়ে যায় আরও।

এমন ম্যাচের আগে তাই দলকে উদ্বুদ্ধ করতে মেসি নিজের ঘরেই আয়োজন করেছিলেন ডিনারের, ডেকেছিলেন সব সতীর্থকে। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম জানাচ্ছে, পার্টি শেষে শোনা গিয়েছিল, ‘ক্যাম্পিওনেস ক্যাম্পিওনেস, ওলে! ওলে!! ওলে!!!’ রবও। সেটা কোপা দেল রে জয়ের উদযাপন হলেও, অ্যাটলেটিকো ম্যাচের আগে আয়োজনের কারণ যে অ্যাটলেটিকো ম্যাচই তা বলাই বাহুল্য। তবে সে পার্টি মেসিদের দলকে কতোটা অনুপ্রাণিত করতে পেরেছে তারই একটা প্রমাণ মিলবে আজকের ম্যাচে।

সমীকরণ

৩৪ ম্যাচ শেষে বার্সার সংগ্রহ ৭৪ পয়েন্ট। সমান ম্যাচ শেষে অ্যাটলেটিকোর অর্জন ৭৬ পয়েন্ট। আজ জিতলে লিগ জেতার পথে অন্তত একটা প্রতিদ্বন্দ্বীকে নকআউট করে দিতে পারবে সিমিওনের দল, আশা ‘প্রায়’ শেষ হয়ে যাবে বার্সার। বার্সেলোনা জিতলে অ্যাটলেটিকোকে টপকে যাবে, লিগ জেতার আশাটাও টিকে থাকবে মেসিদের। 

তবে ড্র হলে চূড়ান্ত লাভটা হবে রিয়াল মাদ্রিদের। তখন দুই দলের সংগ্রহ হয়ে যাবে যথাক্রমে ৭৭ ও ৭৫। নিজেদের ম্যাচে আগামীকাল সেভিয়াকে হারালে ৭৭ পয়েন্ট নিয়ে তারা উঠে আসবে তালিকার শীর্ষে, কারণ অ্যাটলেটিকোর সঙ্গে হেড টু হেডে শ্রেয়তর অবস্থানে আছে রিয়াল। 

সাম্প্রতিক ফল

নিজেদের শেষ পাঁচ ম্যাচে বার্সেলোনার জয় তিনটি, হেরে গেছে দু’টি ম্যাচে। অন্যদিকে অ্যাটলেটিকো শেষ পাঁচ ম্যাচে জিতেছে তিনটিতে, বাকি দুটো ম্যাচের একটিতে করেছে ড্র, হেরেছে অন্যটিতে।

তারা বলছেন

মৌসুমের শুরুতে নিজেদের অনেকটা অস্পৃশ্য এক উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিল অ্যাটলেটিকো। সেখান থেকে মাঝ মৌসুমে পথ হারানোয় এখন লা লিগায় সুযোগ খুলে গেছে শীর্ষ চারের সব দলের। তা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভালো বিষয়গুলোর পুনরাবৃত্তি চান দিয়েগো সিমিওনে।

এদিকে রোনাল্ড কোম্যান অবশ্য এ ম্যাচের ফলাফলেই সব কিছুর নিষ্পত্তি হয়ে যাবে এ ব্যাপারে একমত নন। 

সম্ভাব্য একাদশ

চোটের কারণে দেম্বেলে ম্যাচের শুরুতে নাও থাকতে পারেন। তবে বদলি হিসেবে মাঠে আসতে পারেন তিনি। এদিকে পেদ্রি নিগলস নিয়ে খেললেও আগের ম্যাচে পাওয়া কিছুটা বিশ্রামের কারণে এদিন দেখা যেতে পারে প্রথম একাদশে। 

অন্যদিকে কার্যকরিতার কারণে জাও ফেলিক্সকে বসিয়ে আনহেল কোরেয়াকে নামাতে পারেন অ্যাটলেটিকো কোচ দিয়েগো সিমিওনে। আর আগের ম্যাচ থেকে পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা আছে একটি। কন্ডগবিয়ার জায়গায় দলে আসতে পারেন কোকে। 

বার্সেলোনা
স্টেগেন, 
আরাউহো, পিকে, লেংলে, 
ডেস্ট, ডি ইয়ং, পেদ্রি, বুস্কেটস, আলবা,
মেসি, গ্রিজমান 

অ্যাটলেটিকো
অবলাক, 
সাভিচ, এরমোসো, হিমেনেজ, 
ট্রিপিয়ের, কোকে,  কারাস্কো, ইয়োরেন্তে  
লেমার, কোরেয়া, সুয়ারেজ।

এনইউ/এটি