বাংলাদেশ ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক গোলরক্ষক আমিনুল হক। তার নেতৃত্বে ২০১০ সালে ঢাকা এসএ গেমসে বাংলাদেশ ৪-০ গোলে আফগানিস্তানকে হারিয়ে স্বর্ণ জিতেছিল। বাংলাদেশের ফুটবলে সেটাই সর্বশেষ বড় সাফল্য। ২০০৩ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সাফ ফুটবল জয়ের অন্যতম নায়কও গোলরক্ষক আমিনুল। সাধারণ সমর্থকদের মতো আসন্ন বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ম্যাচের টিকিট আমিনুলও এখন পর্যন্ত পাননি। 

জাতীয় স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ফুটবল দলের অনুশীলন চলছে। সাবেক জাতীয় ফুটবলার হিসেবে হামজাদের অনুশীলন দেখতে এসেছিলেন আমিনুল। অনুশীলন দেখার ফাঁকে টিকিট নিয়ে আমিনুল আফসোস করে বলেন, ‘আমি এখনও টিকিট কিনতে পারিনি এবং সৌজন্য টিকিটও পাইনি।’ এরপরও তিনি প্রত্যাশা করছেন ছেলেকে নিয়ে ভুটান ও সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচ দেখার, ‘শত ব্যস্ততার মাঝেও একজন সাবেক জাতীয় ফুটবলার হিসেবে আজ অনুশীলন দেখতে  এসেছি। আশা করছি ২-১টি টিকিট পাব, যাতে ছেলেকে নিয়ে ভুটান ও সিঙ্গাপুর ম্যাচ গ্যালারিতে বসে দেখতে পারি।’

বাফুফে এবার প্রথমবারের মতো পূর্ণাঙ্গভাবে অনলাইন টিকিট ব্যবস্থা করেছে। ফুটবলের প্রকৃত সমর্থক এবং স্টেকহোল্ডারদের অনেকেই টিকিট সংগ্রহ করতে পারেননি। সাবেক জাতীয় অধিনায়ক আমিনুল হক বাফুফের বর্তমান সভাপতি তাবিথ আউয়ালকে এ নিয়ে বলেন, ‘বাফুফে সভাপতিকে আমি অনুরোধ করব ফুটবলের যারা স্টেকহোল্ডার বিশেষ ক্লাব কিংবা সংগঠকরা আছেন, তারা যেন খেলা দেখতে পারেন সেটা নিশ্চিত করার জন্য।’

বাফুফে সাবেক জাতীয় খেলোয়াড়দের একটি তালিকা করেছে। সেই তালিকায় ১০৪ জনের নাম রয়েছে তাদের একটি করে সৌজন্যমূলক টিকিট পাওয়ার কথা রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো সাবেক ফুটবলার টিকিট পাননি। ফেডারেশনের অধীভুক্ত সংস্থাগুলো দুটি করে টিকিট পাওয়ার কথা। নির্বাহী কমিটির সদস্যবৃন্দের জন্য ক্লাব হাউজ চারটি ও সাধারণ গ্যালারির ২০টি করে টিকিট বরাদ্দ রয়েছে।

অনুশীলন শুরুর আগে বাংলাদেশের অন্যতম কিংবদন্তি ফুটবলার আমিনুল হামজা চৌধুরির সঙ্গে কিছুক্ষণ আলাপ করেন। হামজার সঙ্গে কথোপকথন নিয়ে আমিনুল বলেন, ‘আমার সঙ্গে হামজা-ফাহমিদুলের কথা হয়েছে। আমি তাদের বলেছি, বাংলাদেশের মানুষ অত্যন্ত ফুটবলপ্রিয়, নিজেদের মাটিতে জয় দেখতে চায়। হামজা আমাকে আশ্বস্ত করেছে বাংলাদেশ দলের টিম ওয়ার্ক ভালো রয়েছে। একটি ভালো ম্যাচ খেলে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ার।’

আমিনুল হকের জীবনের সোনালী দিন কেটেছে এই স্টেডিয়ামে। প্রায় এক দশক পর সেখানে ফিরে খানিকটা নস্টালজিক তিনি, ‘এখানে আমি ১৭ বছর খেলেছি। অনেকদিন পর ফিরে মনে হচ্ছে যেন খেলোয়াড়ী জীবনে ফিরে গেছি। অনেক সাবেক ফুটবলার, সংগঠক ও সাংবাদিকের সঙ্গে দেখা হয়ে ভালো লাগছে।’

ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক উভয় পর্যায়ে আমিনুলের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার। সাবেক এই তারকা ফুটবলার তার স্মরণীয় স্মৃতি বর্ণনা করলেন এভাবে, ‘যেখানে দাঁড়িয়ে কথা বলছি এই সামনের পোস্টের ডানদিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে সাফ ফুটবলের ফাইনালে মালদ্বীপের বিপক্ষে গোল সেভ করেছিলাম। পরের শটে সুজন গোল করলে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয় ও পুরো স্টেডিয়াম গর্জে ওঠে।’

হামজা-সামিত আসছে, এতে সেই আগের পুরনো দিনের উন্মাদনা ফিরে পাচ্ছে বাংলাদেশের ফুটবল। ফুটবলের টেকসই সাফল্যের জন্য ঘরোয়া ফুটবলে পেশাদারিত্বের ব্যাপারে জোর দিয়েছেন তিনি, ‘২০০৩ ও ২০১০ সালে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরও বেশ আলোচনা ছিল। হামজা-সামিতরা আসায় ফুটবল ভিন্ন একটা মাত্রা যোগ হয়েছে। এর পাশাপাশি ক্লাবগুলোতে পেশাদারিত্ব ও তৃণমূলে ফুটবল নিয়ে ফেডারেশনকে বিশেষভাবে কাজ করতে হবে।’

এজেড/এএইচএস