লিওনেল মেসি গোল করতেই উচ্ছ্বাসে ভেসে যাচ্ছিলেন ভক্তরা। কিন্তু শেষটা যে মনের মতো হলো না। সোমবার দিবাগত রাতে চিলির বিপক্ষে ড্র দিয়ে এবারের কোপা আমেরিকা মিশন শুরু করল আর্জেন্টিনা। ২৮ বছর ধরে একটা ট্রফির জন্য তীর্থের কাকের মতো তাকিয়ে থাকা আলবিসেলেস্তে সমর্থকরা হতাশা নিয়েই দেখলেন ম্যাচটা। গভীর রাতে টেলিভিশন সেটের সামনে বসে প্রাপ্তি শুধু মেসির গোল। আর দল তো শুরুতেই হারাল পয়েন্ট।

সর্বশেষ ১৯৯৩ সালে ম্যাক্সিকোকে হারিয়ে কোপা আমেরিকার শিরোপা জিতেছিল আর্জেন্টিনা। এরপর থেকে আর বিশ্বের প্রাচীনতম এ টুর্নামেন্টের শিরোপার দেখা পায়নি তারা। চিলির বিপক্ষে এবারের কোপায় আর্জেন্টিনার প্রথম ম্যাচের ড্র নিয়ে ছাড়ল মাঠ। চলুন দেখে নেই নিজেদের প্রথম ম্যাচে কেমন করে আর্জেন্টিনা-

১৯৯৩ তে শিরোপা জয়ের পরের আসরে ১৯৯৫ কোপা আমেরিকায় জয় দিয়ে শুরু করেছিল আর্জেন্টিনা। গ্যাব্রিয়েল বাতিস্ততা ও আবেল বালবোর গোলে বলিভিয়াকে ২-১ গোলে হারিয়ে নিজেদের কোপা মিশন শুরু করে আলবিসেলেস্তেরা। ওই আসরে ব্রাজিলের কাছে হেরে বিদায় নেয় তারা।

পরের আসরের শুরুটা ভালো হয়নি আর্জেন্টিনার। ইকুয়েডরের বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র দিয়ে ওই টুর্নামেন্ট শেষ করে তারা। এবারও তাদের যাত্রা থামে কোয়ার্টার ফাইনালে, পেরুর কাছে ২-১ গোলে হেরে। 

১৯৯৯ কোপায়ও প্রথম ম্যাচে ইকুয়েডরের মুখোমুখি হয় আর্জেন্টিনা। মার্টিন পেলার্মোর জোড়া ও ডিয়েগো সিমিওনের এক গোলে ইকুয়েডরকে এবার ৩-১ গোলে হারায় আলবিসেলেস্তেরা। এবারও তাদের যাত্রা থামে কোয়ার্টার ফাইনালে ; ব্রাজিলের কাছে ২-১ গোলে হেরে বিদায় নেয় তারা। ওই আসরের শিরোপাও জেতে সেলেসাওরা।

টানা তৃতীয়বারের মতো ইকুয়েডরের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে কোপা আমেরিকা মিশন শুরু করে আর্জেন্টিনা। ২০০৪ কোপায় অবশ্য উড়ন্ত শুরু পায় আলবিসেলেস্তেরা। ইকুয়েডরকে ৬-১ গোলে বিধ্বস্ত করে আসর শুরু করে পৌঁছায় ফাইনালেও। কিন্তু ফাইনালে ব্রাজিলের কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয় আর্জেন্টিনার।

২০০৭ কোপা আমেরিকার প্রথম ম্যাচে আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ ছিল যুক্তরাষ্ট্র। এবারও দারুণ শুরু পায় তারা। যুক্তরাষ্ট্রকে ৪-১ গোলে হারায় প্রথম ম্যাচ, পৌঁছায় ফাইনালেও। কিন্তু শিরোপা লড়াইয়ে আবারও সেই ব্রাজিলের কাছে হেরে বেদনা নিয়ে শেষ হয় তাদের সেবারের কোপা মিশন। ওই আসরই ছিল লিওনেল মেসির প্রথম কোপা।

২০১১ কোপা আমেরিকায় বলিভিয়ার সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে আসর শুরু করে আর্জেন্টিনা। তাদের পক্ষে একমাত্র গোলটি আসে সার্জিও আগুয়েরোর পা থেকে। সেবার কোয়ার্টার ফাইনালে ট্রাইবেকারে উরুগুয়ের কাছে হেরে বিদায় নেয় আর্জেন্টিনা।

২০১৫ কোপায় প্রথম ম্যাচে আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ ছিল প্যারাগুয়ে। তাদের বিপক্ষে ২-২ গোলে ড্র করে টুর্নামেন্ট শুরু করে আর্জেন্টিনা। কিন্তু ওই আসরে স্বাগতিক চিলির বিপক্ষে ট্রাইবেকারে হেরে ফের শিরোপা জয়ের আক্ষেপ নিয়েই বিদায় নিতে হয় আর্জেন্টিনাকে।

পরের বছর অর্থাৎ ২০১৬ সালের কোপার প্রথম ম্যাচে এবারের প্রতিপক্ষ চিলির মুখোমুখি হয় আর্জেন্টিনা। ওই আসরে এভার বেনেগা ও ডি মারিয়ার গোলে তাদের ২-১ গোলে হারায় আর্জেন্টিনা। ওই আসরের ফাইনালেও চিলিকেই প্রতিপক্ষ হিসেবে পায় লিওনেল মেসিরা। কিন্তু এবার হেরে রানার্স আপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাদের।

কোপা আমেরিকার সর্বশেষ আসরের প্রথম ম্যাচে অবশ্য হেরে যায় আর্জেন্টিনা। কলম্বিয়ার কাছে তারা হারে ২-০ গোলে। পরে অবশ্য ওই আসরের সেমিফাইনালে পৌঁছায় লিওনেল স্ক্যালোনির দল। কিন্তু ব্রাজিলেন কাছে হেরে ফাইনালে যাওয়া হয়নি মেসিদের। চিলির সঙ্গে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচ জিতে সন্তুষ্ট থাকতে হয় আর্জেন্টিনাকে। এবার তো চিলির সঙ্গে ১-১ ড্রতেই সন্তুষ্ঠ থাকতে হলো দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের।

এটি/এনইউ