চিলির বিপক্ষে সেই গোলের পর মেসির উদযাপন/ইএসপিএন

কোপা আমেরিকায় চিলির বিপক্ষে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা ড্র করেছে ১-১ গোলে। তবে সে ম্যাচে ফ্রি কিক থেকে এক গোল মেসিকে অনেক রেকর্ড এনে দিয়েছে। 

সেই এক গোলে মেসি ফ্রি কিকের দিক থেকে ছাড়িয়ে গেছেন প্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে। মেসির ক্যারিয়ার ফ্রি কিক সংখ্যা এখন ৫৭ টি, আর রোনালদোর ৫৬টি।

রোনালদোকে ছাড়িয়ে সর্বকালের সর্বোচ্চ ফ্রি কিক গোলদাতাদের তালিকায় মেসি চলে এসেছেন অষ্টম স্থানে। তার আগে আছেন ইতিহাসে অন্যতম সেরা সব কিংবদন্তিরা।

ইতিহাসে সর্বোচ্চ ফ্রি কিক গোল যাদের-

৭। রোজারিও সেনি – ৫৯ গোল। গোলরক্ষক হয়েও এক মৌসুমে ২১ গোল, ভাবা যায়? ব্রাজিলীয় বিস্ময় মানব রোজারিও সেনি তাই করে দেখিয়েছিলেন। ফ্রি কিকে তার অসাধারণ দক্ষতাই তাকে এনে দিয়েছিল অবিস্মরণীয় কীর্তি। পুরো ক্যারিয়ারে তার ফ্রি কিক গোল ৫৯ টি, যার ফলে তিনি আছেন ফ্রি কিকে সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকায় সপ্তম স্থানে। মেসি অবশ্য অচিরেই ছাড়িয়ে যেতে পারেন তাকে। ব্রাজিলীয় এই সাবেক গোলরক্ষককে টপকে যেতে আর্জেন্টাইন অধিনায়কের প্রয়োজন আর মাত্র তিনটি ফ্রি কিক গোল।

৬। মার্সেলিনিও, রোনাল্ড কোম্যান – ৬০ গোল। বার্সেলোনার বর্তমান কোচ একটা সময় খেলেছিলেন দলটির হয়ে। ডাচ এই ডিফেন্ডার খেলেছেন আয়াক্স, পিএসভি এইন্দহোভেন, ফেইনুর্দের হয়েও। ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোল করা ডিফেন্ডার তিনি, ২০৭ গোলের প্রায় এক তৃতীয়াংশই এসেছে ফ্রি কিক থেকে। তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গোলটি এসেছিল ১৯৯২ ইউরোপিয়ান কাপের ফাইনালে, সেদিন সাম্পদোরিয়ার বিপক্ষে ১১৬ মিনিটে তার করা গোলটিই বার্সেলোনাকে প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগের স্বাদ এনে দেয়। এ ছাড়াও তার ঝুলিতে আছে আরও ৫৯ টি গোল, যার ফলে তিনি চলে এসেছেন এ তালিকার ছয়ে। তার সঙ্গে আছেন আরেক ব্রাজিলিয়ান প্রতিভা মার্সেলিনিও। করিন্থিয়ান্স কিংবদন্তির ঝুলিতেও আছে সমান ৬০ টি গোল।

৫। ম্যারাডোনা, জিকো – ৬২ গোল। পায়ে বল যেন চুম্বকের মতো লেগে থাকত ডিয়েগো ম্যারাডোনার। সেই ম্যারাডোনা যে ফ্রি কিকেও সেরাই হবেন, তা তো অনুমিতই, আর্জেন্টাইন এই কিংবদন্তি ৬২ গোল নিয়ে আছেন তালিকার ৫ম স্থানে, সঙ্গে আছেন ব্রাজিলের আক্ষেপ ‘সাদা পেলে’ জিকো। ইতিহাসে বিশ্বকাপ না জেতা সেরা দল ১৯৮২ এর ব্রাজিলের প্রাণভোমরা জিকো তার ক্যারিয়ারে করেছিলেন ম্যারাডোনার সমান ৬২টি ফ্রি কিক গোল।

৪। ডেভিড বেকহ্যাম - ৬৫ গোল। ২০০২ বিশ্বকাপে বাছাই নিয়েই টানাটানি ছিল ইংল্যান্ডের। গ্রীসের বিপক্ষে ঘরের মাঠে বেকহ্যামের দুর্দান্ত এক ফ্রি কিকে সেবার বাছাই নিশ্চিত করে ইংলিশরা। এরপর তো ‘বেন্ড ইট লাইক বেকহ্যাম’ নামেই বিখ্যাত হয়ে গিয়েছিল গোলটা! এর আগে পরে আরও ৬৪টা গোল করেছিলেন তিনি। আছেন তালিকার চতুর্থ স্থানে।

৩। রোনালদিনহো ও ভিক্তর লেগ্রোতালিয়ে- ৬৬ গোল। ২০০২ বিশ্বকাপে ৪০ গজ দূর থেকে করা তার পাগলাটে ফ্রি কিকটা মনে পড়ে? সে যুগে অজস্র ফুটবলপ্রেমিকে ব্রাজিল-ভক্ত বানিয়ে দেওয়ায় হাত ছিল সে গোলের। সেটা ছাড়াও রোনালদিনহো তার ক্যারিয়ারে করেছেন আরও ৬৫ গোল। যা তাকে নিয়ে এসেছে এ তালিকার তৃতীয় স্থানে। এ তালিকায় আরেকজনও আছেন। গেল শতাব্দীতে আর্জেন্টাইন লিগ কাঁপানো প্রতিভা ভিক্তর লেগ্রোতালিয়ের ঝুলিতেও আছে ৬৬ টি ফ্রি কিক গোল।

২। পেলে ৭০ গোল। নাম বলে দেওয়ার পর কি আর বাড়তি বিবরণের দরকার পড়ে? পড়ে, কারণ এখনকার দিনের মতো হালকা বলের প্রচলন ছিল না তখন, তাই ফ্রি কিক থেকে সরাসরি গোলও দেখা যেত না হরহামেশা। কিন্তু পেলে সেটাকে প্রায় ডালভাতই বানিয়ে ফেলেছিলেন যেন। করেছিলেন ৭০ গোল, পেলে বলেই সেটা সম্ভব ছিল।

১। জুনিনহো ৭৭ টি। বিখ্যাত ‘নাকল বল’ টেকনিকের কারণে বিখ্যাত ছিলেন তিনি। যার ফলে ২০, ৩০, ৪০ গজ; দূরত্ব যাই হোক না কেন, ফ্রি কিক থেকে গোলের সন্ধানটা পেয়েই ব্রাজিলিয়ান এই কিংদবন্তি। ৭৭ গোলের রেকর্ডটাই তার দখলে। রেকর্ডটা ভাঙতে বেশ কাঠখড়ই পোড়াতে হবে মেসিকে। করতে হবে আরও ২০ গোল।