এবারের ইউরো শুরুর আগে ঠিক কতজন ফুটবল সমর্থক বিশ্বাস করেছিলেন অন্তত শেষ চারে খেলবে ডেনমার্ক? জোর দিয়েই বলা যায়, সে সংখ্যা একেবারেই হাতেগোনা। সে অসম্ভবকে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন ডেনমার্কের ফুটবলাররা। অথচ টুর্নামেন্টের একদম শুরুর ম্যাচেই তো হৃদয় ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল দলটির এবং তাদের সমর্থকদের। দলের তারকা ফুটবলার ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে আক্রান্ত হলে হতবিহ্বল হয়ে পড়েছিল গোটা ফুটবল বিশ্ব।

গত ১২ জুন ফিনল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের প্রথমার্ধে মাঠেই অসুস্থ হয়ে পড়েন ক্রিশ্চিয়ান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসা পর্ব শেষ করে নিজের বাড়িতে ফিরে গেছেন ক্রিশ্চিয়ান। তার ভালোবাসা সঙ্গে নিয়ে দল এগিয়ে চলছে বলে জানালেন ডেনমার্কের কোচ ক্যাসপার হুলমান্দ।

হুলমান্দ বলেন, ‘আমি এখনো প্রতিদিনই ক্রিশ্চিয়ানের কথা ভাবি। মনে হয়, তার তো এখানে থাকার কথা ছিল। আমরা খুশি যে সে বেঁচে ফিরেছে। আমরা তাকে হৃদয়ে নিয়ে এ পর্যন্ত এসেছি এবং ওয়েম্বলিতেও সে থাকবে। ফুটবলের মৌলিক মূল্যবোধ এমন কিছু মুহূর্ত আর এমন দিনগুলোয় ফুটে ওঠে এবং আমাদের মনে আছে কেন আমরা ফুটবল খেলা শুরু করেছিলাম।’

ক্রিস্তিয়ান অসুস্থ হওয়ার পর ভেঙে পড়েছিল গোটা দল। পরে সে ম্যাচ শুরু হলে ফিনল্যান্ডের কাছে ০-১ গোলের ব্যবধানে হেরে যায় ডেনমার্ক। পরের ম্যাচে বেলজিয়ামের বিপক্ষে হারের ফলে টুর্নামেন্ট থেকেই ছিটকে যেতে বসেছিল। এরপর ঘুরে দাঁড়ায় ডেনমার্ক। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে রাশিয়াকে ৪-১ গোলে হারিয়ে গ্রুপ রানার্সআপ হিসেবে জায়গা করে নেয় শেষ ষোলোয়। যেখানে ওয়েলসকে ৪-০ হারিয়ে নিশ্চিত করে শেষ আটের টিকেট। পরে চেক রিপাবলিককে হারিয়ে সেমিফাইনালে ওঠে তারা।

ফাইনালে উঠার মিশনে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে ডেনমার্ক। সে ম্যাচের আগে ক্রিশ্চিয়ানকে স্মরণ করে দলটির কোচ হুলমান্দ জানালেন, ‘ক্রিশ্চিয়ান দীর্ঘদিন ধরে এই দলের অংশ, ঠিক যেমন দলটির ভিত রাতারাতি গড়ে ওঠেনি। দলের এই সাফল্যে তার বড় ভূমিকা আছে। ক্রিস্তিয়ান বলেছে, সে আমাদের নিয়ে অনেক গর্বিত। সে অনেক বছর ধরে আমাদের সেরা খেলোয়াড় এবং আমরা তাকে হৃদয়ে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। তাকে গর্বিত করতে পারাটা আমাকে আনন্দ দেয়।’

টিআইএস/এটি