কিছুদিন আগে ব্রাজিলকে হারিয়ে দীর্ঘদিনের শিরোপা আক্ষেপ ঘুচিয়েছে আর্জেন্টিনা। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দলের লড়াইয়ের সেই রেশ কাটতে না-কাটতেই রোববার রাতে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে আবার মুখোমুখি হয় লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা আর নেইমার জুনিয়রের ব্রাজিল। গোটা ফুটবল বিশ্বের চোখ ছিল এ ম্যাচের দিকে। তবে ম্যাচটি শুরু হওয়ার কয়েক মিনিটের মাথায় ভন্ডুল হয়ে যায়। এই ঘটনায় একে অন্যের দোষারোপের পর্ব চলছে। ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যমগুলো ‘মিথ্যুক’ হিসেবে তুলে ধরছে আর্জেন্টিনাকে।

দুই দলের ম্যাচটি ছিল ব্রাজিলের সাও পাওলোয়। ব্রাজিলিয়ান হেলথ রেগুলেটরি এজেন্সির নির্দেশনা অনুয়ায়ী, ব্রাজিলিয়ান ছাড়া অন্য কেউ ব্রিটেন, উত্তর আয়ারল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভারত থেকে ব্রাজিলে প্রবেশ নিষিদ্ধ। যাদের ছাড় দেওয়া হয়েছে, তাদের অবশ্যই দেশটিতে আসার পর ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। কিন্তু এই নিয়ম মানা হয়নি আর্জেন্টিনার স্কোয়াডে থাকা চার ফুটবলার এমিলিয়ানো বুয়েন্দিয়া, এমিলিয়ানো মার্টিনেজ, জিওভানি লো চেলসো ও ক্রিশ্চিয়ান রোমেরোর ক্ষেত্রে। 

এখানেই তৈরি হয় বিপত্তি। নিয়ম না মেনে এই চার ফুটবলারের তিনজনকেই শুরুর একাদশে রাখে আর্জেন্টিনা। ম্যাচ শুরু হওয়ার কয়েক মিনিট পর ব্রাজিলের স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধানকারী সংস্থা আনভিসার এজেন্টরা মাঠে ঢুকে সেই তিন খেলোয়াড়কে আটকানোর চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় স্থগিত হয় ম্যাচ। এনিয়ে ফুটবল বিশ্বে চলছে জোর আলোচনা। ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যমগুলো একে অন্যের সমালোচনায় মেতেছে।

ব্রাজিলের জনপ্রিয় অনলাইন পোর্টাল ‘ইউওএল’-এ কলামিস্ট ডিয়েগো গার্সিয়া এককাঠি এগিয়ে লিখেছেন, ‘এই মহামারিতে ফুটবল নিয়ে সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারির জন্ম দিয়েছে আর্জেন্টাইন মিথ্যুকরা।’

আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম এই ঘটনাকে ‘বৈশ্বিক স্ক্যান্ডাল’ হিসেবে উল্লেখ করছে। ব্রাজিলে সবচেয়ে পরিচিত সংবাদমাধ্যম ‘ল্যান্স’ বেশ ফলাও করে লিখেছে ‘বৈশ্বিক লজ্জা: কনমেবল ম্যাচ স্থগিত করেছে, চার আর্জেন্টাইন খেলোয়াড় স্বাস্থ্যনীতি লঙ্ঘন করেছেন।’ 

সাও পাওলোর প্রধান সংবাদমাধ্যম ‘ফোলহা’ লিখেছে, ‘মাঠে ঢুকে আর্জেন্টাইন খেলোয়াড়দের আটক করতে চেয়েছিল।’ তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রিমিয়ার লিগের চার খেলোয়াড় ইংল্যান্ড থেকে ব্রাজিলে আসায় কোয়ারেন্টাইন এড়াতে ‘ভুয়া’ হলফনামা জমা দেন।

এমনকি ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারোর ছেলে ফ্লাভিও বলসোনারো এক টুইট বার্তায় লিখেছেন, ‘আর্জেন্টাইনরা চাতুরি করেছে। জেনেশুনেই ব্রাজিলের আইন ভেঙেছে, কিছু টের পেতে দেয়নি। ইংল্যান্ড থেকে তারা চার খেলোয়াড়কে এনেছে। ম্যাচের আগে পুলিশকে তাই তদন্ত করতে হয়েছে, কারা নিয়ম মানেনি। আর্জেন্টিনার চরম শাস্তি হওয়া উচিত।’

টিআইএস/এটি