ক্লাবের আন্তর্জাতিক ম্যাচ অথবা জাতীয় দল সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ মানেই কার্ডের ছড়াছড়ি। সেই ধারাবাহিকতা কিরগিজস্তানের ত্রিদেশীয় সিরিজেও বজায় রেখেছেন জামাল ভূইয়ারা। প্রথম ম্যাচে ফিলিস্তিনের বিপক্ষে চার মিনিটেই হলুদ কার্ড দেখেন রাকিব হোসেন। 

বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশ আটটি ম্যাচ খেলেছে। আট ম্যাচে ১৬ টি কার্ড হলুদ কার্ড পেয়েছে বাংলাদেশ। গড়ে ম্যাচ প্রতি দুইটি করে। আট ম্যাচের একটি ম্যাচও কার্ডহীন ছিলেন না জেমি ডে’র শিষ্যরা। আট ম্যাচের মধ্যে দু’টি ম্যাচে চারটি করেও কার্ড দেখেছেন বাংলাদেশের ফুটবলাররা। টুর্নামেন্টে তিন কার্ড পাওয়ায় দুই ফুটবলার বিপলু আহমেদ ও রহমত মিয়া সাসপেনশনেও ছিলেন। 

ফিফা প্রীতি ম্যাচ ও আমন্ত্রণমূলক টুর্নামেন্টেও বাংলাদেশ কার্ডহীন ম্যাচ খুবই কম। মার্চে নেপালে আমন্ত্রণমূলক ত্রিদেীশয় টুর্নামেন্টের তিন ম্যাচেই কার্ড সঙ্গী ছিল জামালদের।

সাম্প্রতিক সময়ে বসুন্ধরা কিংস এএফসি কাপে খেলেছে। ক্লাব টুর্নামেন্টেও ছিল কার্ডের ছড়াছড়ি। তিন ম্যাচে তারা এক লাল কার্ড ও আট হলুদ কার্ড নিয়ে মোট নয়টি কার্ড পেয়েছে। ফলে ম্যাচের তিনগুণ তারা কার্ড পেয়েছে। ডু অর ডাই ম্যাচে সুশান্তের বিতর্কিত লাল কার্ড ছাড়াও আরো চারজন ফুটবলার হলুদ কার্ড দেখেছেন। 

বসুন্ধরা কিংস চলতি ঘরোয়া লিগেও দুইটি লাল কার্ড দেখেছে। ২১ ম্যাচে তাদের হলুদ কার্ডের সংখ্যা ২৮টি। ম্যাচ প্রতি একটির বেশি। আর সেখানে এএফসি কাপে কার্ডের গড় ম্যাচ প্রতি তিন।

শুধু আন্তর্জাতিক ম্যাচে নয় ঘরোয়া প্রতিযোগিতা বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগেও কার্ডের কমতি নেই। চলমান ঘরোয়া লিগে ১৫৩ টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে হলুদ কার্ড ৪৩৬ ও লাল কার্ড ১৪টি। মোট ৪৫০টি কার্ড প্রদর্শন হয়েছে ফুটবলারদের জন্য। ম্যাচ প্রতি গড় কার্ডের সংখ্যা প্রায় তিন। 

চলতি লিগে সবচেয়ে বেশি হলুদ কার্ড দেখেছে মোহামেডান (৪৫)। এরপর সর্বোচ্চ উত্তর বারিধারার (৪১)। চল্লিশের কাছাকাছি কার্ড দেখেছে শেখ জামাল, সাইফ স্পোর্টিং, আরামবাগ। সবচেয়ে কম কার্ড শেখ রাসেলের (২০)।

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ফুটবলারদের ক্রমাগত কার্ড পাওয়া প্রসঙ্গে ফুটবল সংশ্লিষ্টরা মোটা দাগে কয়েকটি বিষয়ে আলোকপাত করেন, খেলোয়াড়দের সঠিক আইন সম্পর্কে অজ্ঞতা, টিম ম্যানেজমেন্টের উদাসীনতা, রেফারির প্রতি অশ্রদ্ধা, ঘরোয়া রেফারিং আরো শক্তিশালী না হওয়া। 

সাবেক ফিফা রেফারি ও বর্তমানে বাফুফের হেড অফ রেফারিজ আজাদ রহমান এই সামগ্রিক ব্যাপারে বলেন, ‘আমরা প্রতি মৌসুম শুরুর আগে ক্লাবে গিয়ে সর্বশেষ আইন সম্পর্কে অবহিত করি। আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট ও ম্যাচের আগে সংশ্লিষ্ট ক্লাব/দলের কোচকে লজ অফ দ্য গেম বিশেষভাবে জানাই। খেলোয়াড়দের অহেতুক ট্যাকেল,তর্ক পরিহার করলে কার্ডের সংখ্যা কমে আসবে অনেক। ঘরোয়া পর্যায়ে রেফারিরা এখন যথেষ্ট কার্ড দেখাচ্ছে ও সতর্ক করছে। এরপরও বিশ্ব জুড়েই ঘরোয়া ম্যাচের রেফারিং ও আন্তর্জাতিক রেফারিং কিছুটা পার্থক্য থাকে।’ 

বাংলাদেশের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়াও আন্তর্জাতিক ম্যাচে ফাউল ও তর্কের জন্য কার্ড পাচ্ছেন। বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে ভারতের বিরুদ্ধে উভয় লেগে একটি করে কার্ড পেয়েছেন অধিনায়ক। জাতীয় দলের কোচ জেমি ডে অবশ্য ক্রমাগত হলুদ কার্ড পাওয়া নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত নন।

এজেড/এনইউ/এটি