দশরথে বিপ্লব ভট্টাচার্য্য/ফেসবুক

বাংলাদেশের ফুটবলের সঙ্গে নেপালের দশরথ স্টেডিয়ামের নাম ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। বাংলাদেশের ফুটবলে প্রথম দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব এসেছে এই স্টেডিয়াম থেকেই। ১৯৯৯ সালে স্বাগতিক নেপালকে হারিয়ে বাংলাদেশ সাফ গেমসে ফুটবলে স্বর্ণ জিতেছিল। সেই স্বর্ণ জয়ী দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন গোলরক্ষক বিপ্লব ভট্টাচার্য্য। ২২ বছর পর পা রাখলেন নেপালের দশরথ স্টেডিয়ামে।

২২ বছর পর অবশ্য তার দায়িত্ব বদল হয়েছে। ১৯৯৯ সালে দশরথে ছিলেন দলের অপরিহার্য ফুটবলার এখন দশরথে আছেন গোলরক্ষক কোচ হিসেবে। বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের প্রস্তুতির জন্য নেপালে দুইটি প্রীতি ম্যাচ খেলছে। নারী দলের কোচ হিসেবে এখন নেপাল সফরে আছেন বিপ্লব। 

দুই দশকের মাঝে নেপাল গেলেও দশরথে যাওয়া হয়নি, ‘২০১৩ সালে কাঠমান্ডু সাফের স্কোয়াডে আমি ছিলাম। ওই সময় কাঠমান্ডুতে খেলা হলেও দশরথে হয়নি। অন্য দুই স্টেডিয়ামে হয়েছে। ফলে দশরথে যাওয়া হয়নি। এর আগে ও পরে জাতীয় দল নেপাল গেলেও সেই সময় আমি স্কোয়াডে ছিলাম না’ -বলেন বিপ্লব ২০১৩ সালের পর থেকে জাতীয় দলে অনিয়মিত বিপ্লব। ঢাকা আবাহনী, শেখ রাসেলের হয়ে এএফসি প্রেসিডেন্টস কাপ খেলেছেন বিপ্লব। ক্লাবের হয়ে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতেও নেপালের দশরথে পা পড়েনি তার।

২২ বছর পর দশরথে সাবিনাদের দিয়ে মাঠে ঢুকে সেই ফাইনালের দিনে ফিরে গিয়েছিলেন বিপ্লব, ‘ওই সময় ফুটবলের সাফল্যের খুব প্রয়োজন ছিল। আমাদের শুরুটা খারাপ হলেও ধীরে ধীরে টুর্নামেন্টে ফিরেছিলাম। ফাইনালে স্বাগতিক অনেক দর্শক ছিল। আলফাজ ভালো একটি গোল করে। এরপর ওরা অনেক চাপ দিয়েছিল। আমি অনেক আক্রমণ প্রতিহত করেছি। অপেক্ষা করছিলাম কখন রেফারি বাশি বাজাবে, ট্রফি স্পর্শ করব। সেই দিনের স্মৃতি বলে বোঝানো যাবে না।’ 

১৯৯৯ এর সেই ফাইনালে বিপ্লব (ডান থেকে দ্বিতীয়)/ফাইল ছবি

স্বাগতিক নেপালকে ১৯৯৯ সালে শিরোপা বঞ্চিত করেছিলেন বিপ্লব। নেপালীরা বিপ্লবের সেই পারফরম্যান্স ও তাদের দুঃসহ স্মৃতি ভোলেননি জানালেন বিপ্লব, ‘নেপালের অনেক সাবেক ফুটবলার আমাকে দেখে ১৯৯৯ সালের স্মৃতিচারণ করেছে। নেপালি সাংবাদিকদের অনেকে ১৯৯৯ সাফ গেমস নিয়ে আলোচনা করল। আসলে বাংলাদেশ নেপাল ফুটবল নিয়ে আলোচনা হলে সেই ম্যাচের প্রসঙ্গ আসবেই।’

সাবিনারা নেপালের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচ লড়াই করে হেরেছে। আগামীকাল দ্বিতীয় ম্যাচ। শিষ্যদের নিজের সেই কীর্তির কথা সেভাবে বলেননি বিপ্লব, ‘এই দলে যারা সিনিয়র ফুটবলার তারা অনেকেই জানে। আমি কখনো নিজের কথা সেভাবে বলিনি। আগে ছিলাম খেলোয়াড়, এখন কোচ। যখন যে দায়িত্বে তখন সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করি। এখন গোলরক্ষক কোচ হিসেবে আছি। নারী গোলরক্ষকদের মান উন্নয়নে কাজ করছি। নারী গোলরক্ষকরা ভালো করলেই আমার সার্থকতা।’

বিপ্লব এই বছরের শুরু থেকে এএফসি’র অর্থায়নে বাফুফের প্যানেলভুক্ত কোচ হিসেবে কাজ করছেন। তিনি বিশেষত নারী ফুটবল ও অনুর্ধ্ব ফুটবল দলের গোলরক্ষক কোচ হিসেবে কাজ করেন। ৯ সেপ্টেম্বর নেপালের দশরথে জাতীয় নারী ফুটবল দলের গোলরক্ষক হিসেবে বিপ্লবের ভিন্ন এক অভিষেকেও হয়েছে। 

এজেড/এটি/এনইউ