অতিরিক্ত সময়ের ২৯ মিনিট। ম্যাচ টাইব্রেকারে গড়ানোর অপেক্ষায়। সেই মুহূর্তে কর্নার বসুন্ধরা কিংসের। কর্নার থেকে বক্সে সতীর্থের লাফিয়ে করা হেডে পা ছোঁয়ালেন ইয়াসিন আরাফাত, বল গিয়ে আছড়ে পড়ল পুলিশের জালে। কিংসের উল্লাস বাঁধ ভাঙল যেন। উল্লাসের চেয়ে এই জয়ে স্বস্তিই যেন মিশে ছিল বেশি। অন্যদিকে পুলিশ শিবির তখন স্বপ্নভঙ্গের বেদনায় নীল। ১২০ মিনিট দুর্দান্ত লড়াই করে শেষ মিনিটের ম্যান মার্কিংয়ের ভুলে যে ইতিহাস গড়া হলো না তাদের! 

বসুন্ধরা কিংস ২-১ গোলে পুলিশকে হারিয়ে ফাইনালে উঠল। ১৮ ডিসেম্বর ফাইনালে ঢাকা আবাহনীর প্রতিপক্ষ বসুন্ধরা কিংস।

গ্রুপ পর্বেই কিংস ও পুলিশ মুখোমুখি হয়েছিল। সেই ম্যাচে কিংস ১-০ গোলে জিতেছিল। সেমিফাইনালে আবার যখন মুখোমুখি দুই দল, তখন কিংসের অনায়াস জয়কেই মনে করা হচ্ছিল ম্যাচের সম্ভাব্য নিয়তি। 

তবে সে ভাবনাকে ভুল প্রমাণ করে পুলিশ। ঘাম ঝড়িয়ে ছাড়ে কিংসের। ম্যাচে প্রথমে লিড নেয় পুলিশ। ম্যাচের পাঁচ মিনিটেই গোল করেন পুলিশের বিদেশি ফুটবলার ড্যানিলো। ফ্রি কিক থেকে বক্সের মধ্যে পাওয়া বল হেডে গোল করেন তিনি। এই অর্ধেই ম্যাচে সমতা আনে বসুন্ধরা কিংস। সংঘবদ্ধ আক্রমণ থেকে বল দেয়া নেয়া করে পুলিশের বক্সে প্রবেশ করেন ফরোয়ার্ড ইব্রাহিম। শেষে প্লেসিংয়ে গোল করেন। 

প্রথমার্ধ ১-১ গোলে শেষ হয়। দ্বিতীয়ার্ধে দুই দলই গোলের চেষ্টা করেছে সমানতালে। দর্শকখরায় থাকা ঘরোয়া ফুটবলে আজকের দিনটি একটু ভিন্ন ছিল। এই শীতের মধ্যেও বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দর্শক ছিল। কিংসের দর্শক তো থাকেই, সার্ভিসেস দল পুলিশের সমর্থকও ছিল আজ অনেক। পুরনো দিনের আবাহনী-মোহামেডানের ম্যাচের কিছুটা উত্তেজনাও মিলেছে। দর্শকরা বোতলও ছুড়েছিলেন মাঠে। অবশ্য আর কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। 

কয়েক কোটি টাকার দল বসুন্ধরা কিংসের বিরুদ্ধে সমানে সমানে লড়েছে পুলিশ। কখনো মনে হয়নি তারা কোনো ভাবে পিছিয়ে। আক্রমণে যেমন রক্ষণেও তেমন দুই দিকে দারুণ মুন্সিয়ানা দেখিয়েছে পুলিশ। বিশেষ করে পুলিশের আফগানিস্তানের ফুটবলার আমির শরীফি ও ডানিলো দুর্দান্ত খেলেছেন। তবে সব চেষ্টাই শেষমেশ ব্যর্থ হয়েছে, দলকে ফিরতে হয়েছে খালি হাতে। অন্যদিকে কিংস শেষ সময়ের গোলে চলে গেছে ফাইনালে। 

এজেড/এনইউ