হকি ও শাহবাজ আহমেদ অনেকটাই সমার্থক। টানা দুই হকি বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়। নিজে গোল করেছেন অসংখ্য আবার করিয়েছেনও অগণিত। হকির অনন্য উচ্চতায় পৌঁছানোয় ফুটবলের ম্যারাডোনার নাম সঙ্গী হয়েছে তার। 

আগামী পরশু দিন থেকে শুরু হতে যাওয়া ফ্র্যাঞ্চাইজি হকি লিগে মোনার্ক মার্টের দূত হিসেবে এসেছেন ঢাকায়। হকির এই কিংবদন্তি সম্প্রতি একান্ত সাক্ষাৎকারে মুখোমুখি হয়েছিলেন ঢাকা পোস্টের সিনিয়র স্পোর্টস রিপোর্টার আরাফাত জোবায়েরের। এই সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ-উপমহাদেশের হকি, পাকিস্তানের ক্রিকেট ,ফুটবলসহ উঠে এসেছে ম্যারাডোনা -মেসি প্রসঙ্গেও। 

ঢাকাপোস্ট: হকির আগে ফুটবল দিয়ে কথা শুরু করি। কিছুদিন পরই বিশ্বকাপ ফুটবল। আপনাকে হকির ম্যারাডোনা বলা হয়। হকি খেলোয়াড় হয়ে ফুটবলের অন্যতম গ্রেটেস্টের নামটি নিজের নামের সঙ্গে জড়িয়ে, বিষয়টা কীভাবে দেখেন ?
শাহবাজ: আমার নামের সঙ্গে ম্যারাডোনা জুড়ে দেয়ার বিষয়টি উপভোগই করি। ম্যারাডোনা ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়। হকি খেলোয়াড় হলেও ফুটবলের একজন নাম জুড়ে দিলেও আমার এতে ভালোই লাগে। 

ঢাকাপোস্ট: আপনার সঙ্গে ম্যারাডোনার নাম জুড়ে দেয়ার কারণ আপনার দৃষ্টিতে কী?
শাহবাজ: আমার সেরা সময়টি ১৯৮৮-৯৮। ম্যারাডোনা ৮৬ সালে বিশ্বকাপ জিতিয়েছে। আমিও পাকিস্তানকে বিশ্বকাপ জিতিয়েছি। ওই সময় ম্যারাডোনা সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় ছিল। পেলেও নিঃসন্দেহে কিংবদন্তি। সময় ও পরিস্থিতির কারণেই হয়তো আমার সঙ্গে ম্যারাডোনার নামটি জুড়ে দেওয়া হয়েছে। 

ঢাকাপোস্ট: ম্যারাডোনার সঙ্গে কি আপনার কখনো দেখা হয়েছে?  তার খেলা আপনার কেমন লাগত?
শাহবাজ: আমি ফ্রান্স ও জাপান বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার য়েকটি ম্যাচ দেখেছিলাম। তখন ম্যারাডোনার সঙ্গে সাক্ষাৎ হলেও খুব বেশি আলাপ হয়নি। ম্যারাডোনা অত্যন্ত বড় মাপের খেলোয়াড়। তাকে নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। আমার কাছে ম্যারাডোনার চেয়ে মেসিকে বেশি বড় মনে হয়। তার মতো বল কন্ট্রোল, ধারাবাহিকভাবে একই ধারায় খেলা এ রকম খেলোয়াড় ক্রীড়াঙ্গনে আবার আসবে কি না সন্দেহ হয়। ম্যারাডোনা আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ জিতিয়েছে এজন্য সে এগিয়ে, এছাড়া ব্যক্তিগত কারিশমায় আমি মনে করি মেসি কোনো অংশে কম নন। 

ঢাকাপোস্ট: ম্যারাডোনার বল কন্ট্রোলও তো অসাধারন। আট জনকে কাটিয়ে গোল দেয়ার রেকর্ড রয়েছে…
শাহবাজ: হকি খেললেও আমি ফুটবলটাও ভালো বুঝি। ম্যারাডোনার ওই একটাই এ রকম অ্যাকশন। বেশ কয়েকজনকে কাটিয়ে গোল দেয়ার সংখ্যা মেসিরই বেশি হবে। যদিও দুই সময়ের দুই জনকে তুলনা করা যায় না৷ শচীন টেন্ডুলকারের সঙ্গে কোহলিকে কীভাবে তুলনা করবেন আপনি? 

ঢাকাপোস্ট: দলীয় বড় কোনো খেলার বিশ্বকাপে টানা দুই বার টুর্নামেন্ট সেরা হওয়ার রেকর্ড হকিতে নেই। ফুটবল, ক্রিকেটেও নেই। সেদিক থেকে তো আপনি অনন্য!
শাহবাজ: আপনি যে হিসেবে বলেছেন তাতে অনেকটা সেই রকমই। পাকিস্তান ও হকি অঙ্গনে আমি যথেষ্ট সম্মান পাই। তবে পাকিস্তানে ক্রিকেটারদের জনপ্রিয়তাই বেশি। এখনো অনেক ক্রীড়াপ্রেমী সাবেকদের পেছনে ছোটে। সেই হিসেবে আমার অতটা ভক্ত নেই। তবে এ নিয়ে আমার আফসোস নেই। আল্লাহ যা দিয়েছেন তাতেই আমি সন্তুষ্ট। 

ঢাকাপোস্ট: আপনার দৃষ্টিতে পাকিস্তানের সেরা ক্রীড়াবিদ কে?
শাহবাজ: নিঃসন্দেহে ইমরান খান। তিনি সম্পূর্ণ একটি প্যাকেজ। খেলা, নেতৃত্ব, শিক্ষা, ব্যক্তিত্ব সব মিলিয়ে তিনি অনন্য। অনেকে হয়তো খেলোয়াড় হিসেবে অনেক বড় কিন্তু শিক্ষা সেভাবে নেই। আবার অনেকে খেলা, শিক্ষা থাকলেও নেতৃত্ব, ব্যক্তিত্ব কম। একমাত্র ইমরানই পরিপূর্ণ। 

ঢাকাপোস্ট: ইমরান খান খেলোয়াড় থেকে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর আপনার সঙ্গে ক্রীড়াঙ্গন নিয়ে আলোচনা কেমন হয়েছিল?
শাহবাজ: ব্যক্তিগতভাবে ইমরানের সঙ্গে আমার বেশ ভালো সম্পর্ক। সে আমার বছর দশেকের সিনিয়র হলেও সম্পর্ক ভালোই। তিনি হকির উন্নয়ন করতে চেয়েছিলেন। তবে ক্রিকেটটাকে বিশেষভাবে বদলে দিতে চেয়েছিলেন তিনি, রমিজ রাজার মাধ্যমে। 

ঢাকাপোস্ট: ইমরান খান আসার পর রমিজ রাজা পিসিবি চেয়ারম্যান হয়েছিলেন। এতে অনেকেই খানিকটা বিস্মিত হয়েছিলেন। আরো অনেক তারকা ও অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের বদলে তিনি পিসিবির চেয়ারম্যান হলেন…
শাহবাজ: ওয়াকার, ওয়াসিম ইংরেজিতে দারুণ হলেও প্রশাসনিক এবং একাডেমিক জ্ঞানে রমিজ তাদের চেয়ে এগিয়ে। পিসিবি চেয়ারম্যান করার এটা অন্যতম কারণ। রমিজ মাস্টার্স পাস ফলে তার প্রশাসনিক এবং অ্যাকাডেমিক জ্ঞান যথেষ্ট ক্রিকেটের পাশে। যা বোর্ড চালাতে প্রয়োজন। 

ঢাকাপোস্ট: পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড সব সময় আলোচনায়। সেখানে চড়াই-উতরাই অনেক। এর কারণ কী?
শাহবাজ: পাকিস্তানে প্রধানমন্ত্রীর পর সামাজিকভাবে দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ পদ পিসিবি চেয়ারম্যান। সামাজিকভাবে অত্যন্ত সম্মানের আবার ক্ষমতাও আছে। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের অর্থও রয়েছে অনেক। আমি যতটুকু জানি পিসিবি’র সিইও’র মাসিক সম্মানী ১১ হাজার ডলার। অন্য সুযোগ সুবিধা মিলিয়ে ১৫ হাজার ডলারের কাছাকাছি। 

ঢাকাপোস্ট: পাকিস্তানে নানা সমস্যার মধ্যেও পিসিবিতে এত আর্থিক লেনদেন!
শাহবাজ: টিভি রাইটস পিসিবির আয়ের অন্যতম উৎস। এখন তো প্রায় নিয়মিত আন্তর্জাতিক সিরিজ আয়োজন করছে। যখন স্বাগতিক হতে পারত না তখন আবুধাবিতে খেলা সিরিজের জন্যও ভালো আয় ছিল। তাছাড়া মানুষের আগ্রহ অনেক ক্রিকেট নিয়ে। ফলে স্পন্সরও রয়েছে। যেমনটা বাংলাদেশেও। 

ঢাকাপোস্ট: হকিও অন্যতম জনপ্রিয়। তারপরও পিছিয়ে পড়ল কেন পাকিস্তানে?
শাহবাজ: আসলে আমাদের মেধাবী খেলোয়াড় কমে গেছে। খেলোয়াড় কমে যাওয়ার পেছনে কারণও আছে। তরুণদের আপনি আর্থিক নিশ্চয়তা না দিতে পারলে তারা এখানে আসবে না। ক্রিকেটে মোটামুটি পর্যায় খেলতে পারলেও দশ লাখ রুপির নিশ্চয়তা আছে। সেখানে হকিতে তেমন কিছুই নেই। পাশাপাশি হকি ব্যয়বহুলও কিছুটা। 

ঢাকাপোস্ট: আপনি হকিতে ঢুকলেন কীভাবে ?
শাহবাজ: আমাকে জন্মগত অ্যাথলেট বলতে পারেন। হকি, ফুটবল, ক্রিকেট তিনটাই প্রায় সমানভাবে খেলতাম। আমার চাচা ছিলেন ফয়সালাবাদে। তাকে দেখে পরে হকিকেই বেছে নেই। হকিকেই ধ্যানজ্ঞান করি।

ঢাকাপোস্ট: আপনি হকিকে বিশেষ উচ্চতায় নিয়েছেন। কতটুকু অনুশীলন করতেন?
শাহবাজ: অধিকাংশ খেলাতেই পায়ের কাজটা গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহ আমার পা দু’টোকে হয়তো বিশেষভাবে দিয়েছেন। আমি আল্লাহ প্রদত্ত। হকি স্টিক ও বল নিয়ে আমি যা খুশি তাই করেছি। এটা আল্লাহ না দিলে সম্ভব ছিল না। আমি সেভাবে অনুশীলনও করিনি। অন্যরা যেখানে ৩-৪ ঘণ্টা করত। সেখানে আমি করতাম এক ঘণ্টা। এ নিয়ে কোচরা কিছু বলতেনও না। মোহামেডানে যখন খেলেছি, তখন কোচ বলেছিলেন, তুমিই, কোচ, তুমি খেলোয়াড়। তোমাকে বলার কিছু নাই। অনুশীলন কম করলেও আমার জীবন সব সময় শৃঙ্খলার মধ্যে। ডায়েট, বিশ্রাম ও ঘুমের সময়ও ছিল নিয়মমাফিক। 

ঢাকাপোস্ট: মোহামেডানে আপনি তিন বছর খেলেছেন। তিন বছরেই চ্যাম্পিয়ন…
শাহবাজ: আবাহনীতেও আমার খেলার প্রস্তাব ছিল। আমার কাছে তখন মোহামেডান ও আবাহনী সমানই ছিল। দুটোই আমার কাছে অচেনা এবং নতুন। মোহামেডান নামটি আমার কাছে সুন্দর লেগেছে এবং মুসলিম ধাঁচের মনে হয়েছিল। নামের জন্যই মোহামেডানে খেলেছি। হয়তো আল্লাহ মোহামেডানেই আমার ভালো রেখেছেন। এজন্য এখানে খেলে তিনবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। 

ঢাকাপোস্ট: নব্বইয়ের দশকে হকি বাংলাদেশে জনপ্রিয় ছিল। আবাহনীর বিপক্ষে ম্যাচ দারুণ উপভোগ করেছেন নিশ্চয়ই। 
শাহবাজ: অবশ্যই মোহামেডানে কাটানো তিন বছর দারুণ ছিল। মোহামেডানে আমরা চার পাকিস্তানী ছিলাম। আবাহনীতে ছিল ভারতীয়। অর্ধেক পাক ভারত লড়াই। বাংলাদেশের দেশী খেলোয়াড়রাও তখন দারুণ ছিল। তাদের টেকনিক অসাধারণ ছিল। এখনকার চেয়ে আগের সময়ে বাংলাদেশের ব্যক্তিগত স্কিল বেশি ছিল। আমি আজ মোনাক মার্ট এবং আরেক দলের অনুশীলন দেখেছি। তেমন মানসম্পন্ন দেখিনি। 

ঢাকাপোস্ট: বাংলাদেশ ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ শুরু করতে যাচ্ছে। কেমন হবে বলে মনে হয় আপনার কাছে?
শাহবাজ: মানসম্পন্ন খেলোয়াড় দরকার। যে মানের বিদেশি আসছে তাদের চেয়েও বেশি মানসম্পন্ন খেলোয়াড় আনার দরকার। এখানে যারা আসছে অনেকে ত্রিশ বছরের বেশি। টার্ফে অনেক ফিটনেস প্রয়োজন। ৩২-৩৩ বছরের খেলোয়াড় দিয়ে সম্ভব না। পাকিস্তান ভারতের জাতীয় দলের বাইরের খেলোয়াড় আছে এখানে। ফলে মানগত বিষয়টা বুঝতেই পারছেন। এভাবে টুর্নামেন্ট করলে, শুধু করার জন্য করাই হবে। 

ঢাকাপোস্ট: আপনিও তো একটা দলের উপদেষ্টা…
শাহবাজ: হ্যাঁ, আমিও একটা দলের সঙ্গে আছি। আমাকে কিছু দিন আগে জানিয়েছিল কোচিংয়ের জন্য। আমি বলেছি কোচিং সেভাবে আমি করি না। আমি দলকে সামগ্রিকভাবে পরামর্শ দিতে পারি। আমার কাছ থেকে খেলোয়াড়, কোচরা শিখতে পারবে।

ঢাকাপোস্ট: দলের হেড কোচরা আসছে মাত্র দিন তিনেক আগে এটা কীভাবে দেখেন? 
শাহবাজ: এটাও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তিন দিন আগে এসে খেলোয়াড়দের সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায় না পুরোপুরিভাবে। আমি ফেডারেশন ও ফ্র্যাঞ্চাইজিকে পরামর্শ দিয়ে যাব সামগ্রিক বিষয়ে। 

ঢাকাপোস্ট: বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের হকি পেছালেও ভারত আগের অবস্থানেই আছে, কীভাবে? 
শাহবাজ: ভারতের ভুবনেশ্বরেই হকির বাজেট ২০ কোটি রুপি। ফলে বাংলাদেশ-পাকিস্তান ভারতের চেয়ে এদিক থেকে পিছিয়ে। তাছাড়া উপমহাদেশে ক্রীড়া রাজনীতি তো রয়েছেই। 

ঢাকাপোস্ট: বাংলাদেশ উন্নতি না করার বিশেষ কারণ কি?
শাহবাজ: ক্রিকেটে বাংলাদেশ অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডের সঙ্গে খেলেছে অনেক। হারলেও মানের উন্নয়ন হয়েছে। হকিতে হল্যান্ড, ভারতের সঙ্গে সেভাবে সিরিজ খেলার সুযোগ পায় না এটা অন্যতম কারণ। আরেকটি বিষয় কোচিং। খেলার উন্নয়ন ও সাফল্যের জন্য অনেক ভালো কোচ প্রয়োজন। সেখানেও ঘাটতি ছিল।

ঢাকাপোস্ট: এক সময় ভারত ও পাকিস্তান বিশ্ব হকি নিয়ন্ত্রণ করত। এখন সেটা ইউরোপ ও আর্জেন্টিনার নিয়ন্ত্রণে। ঘাসের মাঠ থেকে টার্ফই কি কারণ?
শাহবাজ: ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো নিজের মধ্যে অনেক সিরিজ খেলে। আমরা সেটা পারি না। অভ্যন্তরীণ নানা কারণে আমরা পিছিয়েছি। ইউরোপিয়ান, আর্জেন্টাইনদের উন্নতির চেয়ে, আমাদের অবনতি বেশি এজন্যই তাদের সাফল্য বেশি। তবে আমরা এখনো ভালোমতো পরিকল্পনা নিয়ে এগুলো তাদের সহজেই পেছনে ফেলা যেত। 
ঘাসের মাঠের থেকে টার্ফে এসে হকি আধুনিক হয়েছে। টিভিতে এটি দারুণ দেখায়। টার্ফে খেলতে অনেক ফিটনেস লাগে। আমি ঘাসে ও টার্ফ উভয়ে খেলেছি। 

ঢাকাপোস্ট: আপনি পাকিস্তান হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন৷ হকির সেই অবস্থা ফেরাতে পারলেন না?
শাহবাজ: সেই রকম টিমওয়ার্ক পাইনি৷ ব্যক্তিগত স্কিল খেলোয়াড়ও তেমন ছিল না। 

ঢাকাপোস্ট: আপনার উপর আর্থিক অভিযোগও ছিল সেই সময়…
শাহবাজ: ফেডারেশনের সভাপতি ছিলেন সামরিক একজন। বিষয়টি তিনি ব্যক্তিগত পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। পাকিস্তানের মানুষ জানে হকি মানে শাহবাজ কিন্তু তিনি সেটা সেভাবে পছন্দ করেনি। তাছাড়া সম্পাদক হিসেবে আমার এককভাবে আর্থিক কাজ করা সম্ভব নয়, তার অনুমোদন ছাড়া৷ 

ঢাকাপোস্ট: আপনার বর্ণিল ক্যারিয়ারে সবচেয়ে সুখ ও দুঃখের স্মৃতি…
শাহবাজ: ১৯৯০ লাহোর বিশ্বকাপের ফাইনালে ৮০ হাজার দর্শক ছিল। সেই দর্শকের সামনে খেলা দারুণ এক স্মৃতি। পাশাপাশি সেটা দুঃখেরও আমরা সেবার চ্যাম্পিয়ন হতে পারিনি। তবে আমি সেরা খেলোয়াড় হয়েছিলাম। ১৯৯৪ সালে সিডনিতে পাকিস্তান বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আবারও আমি সেরা খেলোয়াড় হয়েছি। এরপরও ৯০’র ফাইনালই আমার কাছে বিশেষ। 

ঢাকাপোস্ট: উপমহাদেশের অনেক তারকা রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আপনি রাজনীতিতে সেভাবে সম্পৃক্ত না। 
শাহবাজ: আমি রাজনীতি সেভাবে পছন্দ করি না। পরিবারকে সময় দেই। আমি ও আমার স্ত্রী উমরাহ করলাম কিছু দিন আগে৷ সৌদি থেকে আমি সরাসরি ঢাকা এসেছি। সে এখনো সৌদি। আমি আল্লাহর রহমতে প্রায় ১০০ বার উমরাহ এবং ২ বার হজ্জ করেছি।  

ঢাকাপোস্ট: আপনার সন্তানরা কি ক্রীড়াঙ্গনে আসবে?
শাহবাজ: আমার এক ছেলে দারুণ বাস্কেটবল খেলে। যদিও বাস্কেটবলের কোনো ভবিষ্যত নেই পাকিস্তানে। আমার আরেক ছেলে স্কোয়াশ ভালো খেলে। তবে তারা পেশাদার ক্রীড়াঙ্গনে আসবে না। 

ঢাকা পোস্ট: ফুটবল দিয়ে শুরু করেছিলাম সাক্ষাৎকার , ফুটবল দিয়েই শেষ করি। ক্রিকেট ও হকিতে বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে পাকিস্তানের ছিটেফোটাও নেই ফুটবলে। 

শাহবাজ: আসলে সব দেশ সব খেলাতেই বৈশ্বিকভাবে সর্বেোচ্চ পর্যায়ে যেতে পারে না। যে কোনো খেলায় একজন আইকন লাগে ক্রিকেটে হানিফ মোহাম্মদ, ইমরানরা করেছেন হকিতে আমি ছিলাম ফুটবলে সেই অর্থে কেউ নেই। 

এজেড/এনইউ