ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ অ-২১ দল আজ রাতে ওমানে জুনিয়র এশিয়া কাপ টুর্নামেন্ট খেলবে। এদিকে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের নির্বাচনী খেলাও জমে উঠেছে। নির্বাচনে কাউন্সিলর নিয়ে অভাব-অভিযোগের নানা চিঠির পর এবার আইনি নোটিশ প্রদানের ঘটনাও ঘটেছে। মুক্ত বিহঙ্গ তরুণ সংঘের পক্ষে সভাপতি সৈয়দ আবুল মোয়াজ্জেম ওরফে শামীম তার ক্লাবের কাউন্সিলরশীপ নিয়ে হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক একেএম মমিনুল সাঈদকে আইনি নোটিশ দিয়েছেন। এই নোটিশের অনুলিপি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব এবং নির্বাচন কমিশনও পেয়েছে।

হকি ফেডারেশনকে ২১ মে কাউন্সিলরের নাম প্রেরণ করতে বলেছিল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নির্বাচন কমিশন। বেধে দেয়া সময়ের একদিন পর গতকাল দুপুরে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সহ আরো কয়েকজন কর্মকর্তা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে উপস্থিত হয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে কাউন্সিলর তালিকা জমা দিয়েছেন।

হকি সংশ্লিষ্ট সুত্রের খবর, হকি আম্পয়ার্স বোর্ড থেকে কাউন্সিলর হয়েছেন উষা ক্রীড়া চক্রের কর্মকর্তা শাফায়াত ডালিম। আম্পায়ার্স বোর্ড থেকে সাধারণত সাবেক আম্পায়ারদের মধ্যে একজন কাউন্সিলর হন। গত নির্বাচনে আম্পায়ার্স বোর্ডের প্রতিনিধি ছিলেন হকির কিংবদন্তী প্রতাপ শঙ্কর হাজরা। এর আগে মির্জা ফরিদ আহমেদ মিলুর মতো আম্পায়ারিং ব্যক্তিত্বরাই এর কাউন্সিলর হয়েছেন। এবার আম্পায়ার্স বোর্ডের মনোনীত ব্যক্তি হিসেবে যার নাম শোনা যাচ্ছে, তিনি হকি অঙ্গনের সজ্জন ব্যক্তি হলেও কখনোই আম্পায়ারিং করেননি বিধায় নানা সমালোচনা চলছে। 

হকি ফেডারেশনের প্রস্তুতকৃত কাউন্সিলর তালিকায় যারা রয়েছেন এদের অনেকের অর্ন্তভূক্তি নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠেছে তেমনি আবার অনেক সংস্থা কাউন্সিলরশীপের চিঠি না পাওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। জেলা ও বিভাগীয় সংগঠক পরিষদের নেতৃবৃন্দের দাবি, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দুই বার জাতীয় প্রতিযোগিতায় অংশ নিলে জেলা ক্রীড়া সংস্থা কাউন্সিলরশীপ পাবে। হকি ফেডারেশন মাত্র এককবার আয়োজন করেছে। ফলে একবার যারা খেলেছে সেই সকল সংস্থা কাউন্সিলরশীপের জন্য বৈধ। ফেডারেশন ১৬/১৭ টি জেলাকে কাউন্সিলরশীপের জন্য চিঠিই দেয়নি। কাউন্সিলরশীপের চিঠি সাধারণ সম্পাদক বরাবরই হয় ময়মনসিংহ বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার কাউন্সিলরশীপের চিঠি সাধারণ সম্পাদক পাননি বলে জানান।

হকি ফেডারেশনের কাউন্সিলরশীপ নিয়ে আইনি নোটিশে পাশাাপাশি ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশনে অনেক চিঠি জমা পড়েছে। এসব প্রসঙ্গে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরিচালক অর্থ ও হকি ফেডারেশনের নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশানর মোঃ সাইদুর রশিদ বলেন, 'খসড়া তালিকা প্রকাশের পর আপত্তি আসলে আমরা কমিশন শুনানি করে সেই অভিযোগ নিষ্পত্তি করব।' আগামী সপ্তাহে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করবে। এখানেও একটা সংকট আসন্ন। হকির নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সঙ্গে থাকা অনেকে হজে যাবেন। ফলে তাদের ভোটাধিকার ও প্রার্থিতার অধিকার নিয়েও প্রশ্ন আসন্ন। 

দেশের সকল ক্রীড়া ফেডারেশনেই অর্ন্তদ্ব›দ্ব,কোন্দল ও গ্রুপিং থাকলেও হকি ফেডারেশন একদমই ব্যতিক্রম। সময়ের সাথে সাথে এখানে বিচিত্র মেরুকরণ হয়। তিন বছর দেশের বাইরে থাকা হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মমিনুল হক সাঈদের জন্য সবচেয়ে সোচ্চার ভূমিকায় ছিলেন যুগ্ম সম্পাদক কামরুল ইসলাম কিসমত। সাঈদ সাধারণ সম্পাদক দায়িত্ব ফিরে পাওয়ার পর থেকে চলমান নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় কিসমতকে দূরে ঠেলে দুই সহ-সভাপতি এবং ফেডারেশনের কমিটির বাইরে থাকা এক সাবেক খেলোয়াড়কে নিয়ে অধিকাংশ কাজ করছেন। এই তিন জনের মধ্যে দুই জন আবার সাঈদের বিপক্ষ প্যানেলের ছিলেন। সাঈদ ফিরে আসার পর জাতীয় দল, অ-২১ দলে সমন্বয়ক ও দলনেতার দায়িত্ব ফেডারেশনের বাইরের একজনকে দেয়ায় সাধারণ সম্পাদকের উপর কমিটির অনেকের তীব্র চাপা ক্ষোভ রয়েছে।

বাংলাদেশের হকির অন্যতম তারকা রফিকুল ইসলাম কামালের হকি ফেডারেশনের সামনের কমিটিতে থাকার সম্ভাবনা প্রায় শেষের দিকে। এবার তিনি কোনো ক্লাবের কাউন্সিলরশীপ পাননি। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পাচ কাউন্সিলরের মধ্যেও সমঝোতা হয়েছে। কামাল উষা ক্রীড়া চক্রের ম্যানজোর হলেও সেখানে ক্লাবের পৃষ্ঠপোষকতার বিবেচনা করে অন্য একজনের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। আবাহনী, মোহামেডান, মেরিনার্স ও উষা চার ক্লাব সম্মিলিতভাবে পাচটি নাম প্রস্তাব করেছে। এটি আমলে নেয়া বা নেয়ার পূর্ণ এখতিয়ার জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের। ২০১৩ সালের হকি নির্বাচনে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পাচ কাউন্সিলর নিয়ে জল অনেক জল ঘোলা হয়েছিল।

এজেড/এইচজেএস