ছবি: সংগৃহীত

হকি ফেডারেশনের নির্বাচনে কাউন্সিলরশিপ নিয়ে কিছু দিন ধরেই ক্রীড়াঙ্গনে নানা অভাব-অভিযোগ ছিল। আজ ছিল কাউন্সিলরশিপ নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আপত্তি জানানোর দিনক্ষণ। সেই আপত্তির দিনে ঘটেছে নানা বিপত্তি ঘটনা।

হকি অঙ্গনের পরিচিত সংগঠক সাজেদ এ আদেলের নাম খসড়া ভোটার তালিকায় নেই। এর প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনে আপত্তি জানাতে গিয়ে বাধা ও বিপত্তির মধ্যে পড়ার অভিযোগ এনেছেন হকি ফেডারেশনের বর্তমান সহ-সভাপতি, 'কাউন্সিলরশিপ নিয়ে অধিকার চাইতে আপত্তি জানাতে চেয়েছিলাম কিন্তু বাধার জন্য নির্বাচন কমিশনে দিতে পারিনি।'

বাধার প্রসঙ্গে সাজেদ আদেলের কাঠগড়ায় বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মমিনুল হক সাঈদ, 'জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে সাধারণ সম্পাদক সাঈদ সাহেবের অনুসারীরা বাধা প্রদান করেছে।' এই অভিযোগ সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখান করেছেন মমিনুল হক সাঈদ, 'আমার উপর আনীত অভিযোগ সম্পূর্ণরূপে ভিত্তিহীন। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ সিসিটিভি ক্যামেরা নিয়ন্ত্রিত। কে কি করেছে সেটা ফুটেজ দেখলেই স্পষ্ট হবে।'

ভিন্ন বিপত্তিতে পড়েছেন জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠকরা। দশের অধিক বঞ্চিত জেলা ক্রীড়া সংস্থার চিঠি নিয়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নির্বাচন কমিশনে গিয়েছিলেন রাজশাহীর রতন। সেই চিঠি গ্রহণ না করে ফটোকপি করে আনতে বলে নির্বাচন কমিশন। ফটোকপি করে নির্বাচন কমিশনে পৌছাতে রতনের দু'টা পাঁচ বেজে যায়। নির্বাচন কমিশন অবগত থেকেও শেষ পর্যন্ত রতনের কাছে থাকা চিঠি গ্রহণ করেনি। এই ঘটনায় নির্বাচন কমিশনের স্বচ্ছতা এবং নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। পাশাপাশি সাধারণ সম্পাদক মমিনুল হক সাঈদের সম্পৃক্ততার বিষয়ও ভেসে আসছে। এই অভিযোগ নিয়ে তিনি বলেন, 'আমি নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করেছি মাত্র ২-৩ মিনিটের বিষয় তাদের চিঠি গ্রহণ করা হোক।' নির্বাচন কমিশনে আজ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মমিনুল হক সাঈদের উপস্থিতি অনেক প্রশ্নেরও জন্ম দিচ্ছে। 

সাজেদ আদেল ও জেলা-বিভাগীয় সংগঠকরা চিঠি নির্বাচন কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে জমা দিতে না পেরে ই-মেইলে দিয়েছেন। হকি ফেডারেশনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরিচালক অর্থ সাইদুর এই প্রসঙ্গে বলেন, 'কেউ বাধার সম্মুখীন হলে সেটা প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে আমাকে অবহিত করতে পারত। কেউ কিছু বলেনি। তাছাড়া আমাদের কমিশনের নীতিমালা অনুযায়ী ই-মেইলে আপত্তি গ্রহণের বিষয়ে কিছু উল্লেখ নেই।' জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব পরিমল সিংহকে সাজেদ আদেল বাঁধাগ্রস্ততার বিষয়টি জানান৷

হকি ফেডারেশনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী চার বছরের মধ্যে দুইবার জাতীয় হকিতে অংশগ্রহণ করলে কাউন্সিলরশিপ মিলবে। হকি ফেডারেশন চার বছরের মধ্যে মাত্র একবার জাতীয় হকি আয়োজন করেছে। তাই হকি ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটি গত নির্বাচনে যে ৪১ জেলা-বিভাগ কাউন্সিলর ছিল তাদের কাছেই কাউন্সিলরশিপের চিঠি দিয়েছে। এর বাইরে থাকা জেলা ক্রীড়া সংস্থাগুলোর দাবি, আমরা খেলার জন্য প্রস্তুত ছিলাম। ফেডারেশন খেলা আয়োজন করতে পারেনি। এ ব্যর্থতা ফেডারেশনের। এজন্য আমরা কাউন্সিলরশিপ বঞ্চিত হব কেন?' 

নানা বিপত্তির মধ্যেও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নির্বাচন কমিশনের কাছে চারটি আপত্তি জমা পড়েছে। এর মধ্যে অন্যতম মুক্ত বিহঙ্গ, আম্পায়ার্স এসোসিয়েশন। আম্পায়ার্স বোর্ড ও এসোসিয়েশনের এই দ্বন্দ্ব গত দুই নির্বাচনেও ছিল। হাইকোর্টের রায় আম্পায়ার্স বোর্ডের পক্ষেই গিয়েছিল। আগামীকাল এই আপত্তির উপর শুনানি করবে নির্বাচন কমিশন। তবে যারা আপত্তি দিতেই পারলেন না এ নিয়ে খানিকটা জটিলতা হতে পারে।
এজেড/এইচজেএস