হকি লিগে এখন পর্যন্ত অপরাজিত ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। ৩০ মার্চ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ঢাকা আবাহনীর বিপক্ষে তাদের পরবর্তী ম্যাচ। এর আগে আজ (বুধবার) সন্ধ্যার পর হকি খেলোয়াড়রা পারশ্রমিক না পেয়ে ক্যাম্প ছেড়েছেন। 

হকির অন্যতম সেরা খেলোয়াড় রাসেল মাহমুদ জিমি মোহামেডানের অধিনায়ক। মোহামেডান ও জিমি সমার্থক শব্দ। সেই জিমি বেশ হতাশ কণ্ঠে বলেন, ‘খেলোয়াড়রা এতদিন অপেক্ষায় ছিল। এরপরও খেলা চালিয়ে গেছে। খেলোয়াড়রা পারিশ্রমিক না পেয়ে আজ পুলিশের বিপক্ষে খেলার পর ক্যাম্প ছেড়েছে। এটা খুব দুঃখজনক ঘটনা।’

মোহামেডানের অনেক অর্জন ও সাফল্য রয়েছে হকিতে। সেই হকিতে মোহামেডানের পারিশ্রমিক বকেয়া রয়ে গেছে। যা নিয়ে মোহামেডানের হকি দলের ম্যানেজার আরিফুল হক প্রিন্স বলেন, ‘খেলোয়াড়দের পাশাপাশি কোচিং স্টাফদেরও বকেয়া রয়েছে। বিদেশি খেলোয়াড়রা সম্পর্ক ও সম্মানের খাতিরে নিজেরা বিমান ভাড়া দিয়ে এসেছেন। তাদেরও সম্মানী দিতে পারিনি। আমি এতদিন কষ্ট করে চালিয়ে নিয়েছি। আর পারছি না।’

বাংলাদেশ জাতীয় হকি দলের সাবেক মালয়েশিয়ান কোচ গোপীনাথান মোহামেডানে কোচিং করাতে আজ সকালে ঢাকায় এসেছেন। জাতীয় দল ও বিকেএসপির পর বাংলাদেশে ক্লাব কোচিংয়ে করাবেন এই মালয়েশিয়ান। কোচের আগমনের দিনে খেলোয়াড়রা ক্যাম্প ছেড়ে যাওয়ায় যারপরনাই বিস্মিত গোপীনাথান।

মোহামেডানের হকি কমিটির চেয়ারম্যান ক্লাবের অন্যতম পরিচালক মঞ্জুরুল ইসলাম। তিনি হকির সম্মানী বকেয়া থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘আমরা পারিশ্রমিক নির্দিষ্ট সময়ে দিতে পারিনি এটা সঠিক। তবে আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত বিষয়টি সমাধানের। বিশেষ করে পরবর্তী ম্যাচের আগেই।’

মোহামেডানের পরিচালনা পর্ষদে দেশের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও শিল্পপতি রয়েছেন, এরপরও এই সংকট অত্যন্ত দুঃখজনক। ঐতিহ্যবাহী ও জনপ্রিয় ক্লাবটি ফুটবল ও ক্রিকেটে অনেক অর্থ ব্যয় করলেও সম্পূর্ণ বিপরীত দৃশ্য হকিতে। এই প্রসঙ্গে হকি কমিটির চেয়ারম্যান বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমি চেষ্টা করেছি মৌসুমের শুরুতে। আমার একার পক্ষে আসলে সব করা সম্ভবও নয়। আমাদের সভাপতি মহোদয় অসুস্থ। তিনি সুস্থ থাকলে আমাদের এই পরিস্থিতিতে পড়তে হতো না।’

মোহামেডানের পরিচালনা পর্ষদে রয়েছেন ১৬ জন। এর মধ্যে কয়েক মাস আগেই এক পরিচালক ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগপত্র দিয়েছেন। যদিও সেটি গৃহীত হয়নি। ১৬ পরিচালকের মধ্যে সবাই আর্থিকভাবে তেমন সহায়তা করেন না বলে জানা গেছে ক্লাব সূত্রে। সভাপতি সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল মুবীন, পরিচালক প্রকৌশলী গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর ও হাতেগোনা ২-৩ জন আর্থিকভাবে ক্লাবকে সহায়তা করেন। আবু হাসান চৌধুরি প্রিন্স, জামাল রানারা সেভাবে আর্থিক সহায়তা করতে না পারলেও সময় দেন ক্লাবের কর্মকাণ্ডে। অনেক পরিচালকের প্রতি ক্লাবের অনেকের অনুযোগ তারা অর্থ ও সময় কোনোটাই দেন না।মোহামেডানের ডিরেক্টর ইনচার্জ ফিরোজ রশীদ হকি খেলোয়াড়দের ক্যাম্প ছাড়ার বিষয়ে বলেন,‌ ‘আমি রাঙামাটি রয়েছি। বিষয়টি মাত্র শুনলাম। অন্যদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি দেখছি।’ 

এজেড/এএইচএস