প্রায় চার বছর পর হচ্ছে ঢাকা হকি লিগের দলবদল। সেই দলবদলে জাতীয় দলের গোলরক্ষক অসীম কুমার গোপের জায়গা হয়নি। হকি ফেডারেশনের নিয়ম অনুযায়ী সার্ভিসেস বাহিনীর সর্বোচ্চ ৫ জন খেলোয়াড়কে দলে নিতে পারবে ক্লাবগুলো। গোলরক্ষকরা সাধারণত এই নিয়মের বাইরে থাকেন। এবার সেই নিয়মের মধ্যে থাকায় আটকে গেছেন অসীম। 

ঘরোয়া ফুটবল, হকিতে পুল, কোটা নতুন কিছু নয়। ফুটবলে অনেক তারকা খেলোয়াড়রা পুলের জন্য ছোট ক্লাবে ও নিচের স্তরের লিগে খেলতে বাধ্য হয়েছেন। এবার এই কোটা ব্যবস্থায় আটকে গেলেন জাতীয় দলের গোলরক্ষক অসীম কুমার গোপ। 

তিন বছর পর লিগ হচ্ছে। সেই লিগে খেলতে পারবেন না অসীম। এটা ভাবতেই অসীম আবেগী হলেন, ‘সবাই খেলবে আমি বসে দেখব। ভাবতেই খারাপ লাগছে।’ সার্ভিসেস বাহিনীতে থাকা অন্য গোলরক্ষকরা দল পেলেও শুধু অসীম পাননি। এজন্য অবশ্য তার মোহামেডানের প্রতি নির্ভরতাই বেশি দায়ী, ‘মোহামেডান থেকে আমাকে ভালো প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। আমি অর্থও পেয়েছি। গোলরক্ষক কোটা উঠানোর জন্য তারা চেষ্টাও করেছে শেষ পর্যন্ত হয়নি।’ 

সার্ভিসেস বাহিনীতে কর্মরত গোলরক্ষকদের পাঁচ জনের কোটার বাইরে রাখার আনুষ্ঠানিক আবেদন করা হয়েছিল। গভর্নিং বডির সভায় এই বিষয়টি উত্থাপিত হয়নি। গত পরশু রাতে লিগ কমিটির জরুরি সভায় মোহামেডানের প্রতিনিধি আরিফুল হক প্রিন্স এই প্রসঙ্গ উথাপন করলেও আলোচনা হয়নি। 

এই প্রসঙ্গে ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইউসুফ বলেন, ‘বাইলজ সকল ক্লাবের অনুমতি নিয়ে এটি নির্ধারিত হয়েছে। গোলরক্ষককে কোটার মধ্যে হিসাব করেই সব ক্লাব দল করেছে। ফলে শেষ মুহূর্তে এই বিষয়ে আলোচনার সুযোগ নেই।’ 

মোহামেডানের দাবি পূরণ না হওয়ায় লিগ কমিটির সভায় খানিকটা উত্তপ্ত পরিবেশের সৃষ্টি হয়। এই প্রসঙ্গে লিগ কমিটির সম্পাদক তাহের লতিফ মুন্না বলেন, ‘সভায় আলোচনা-সমালোচনা দাবি দাওয়া থাকবেই। এটা স্বাভাবিক বিষয়।’

মোহামেডান অসীমকে বাদ দিয়ে মোহামেডান রাসেল মাহমুদ জিমি, ইমরান হাসান পিন্টু, সারওয়ার, কৌশিক ও আশরাফুলের নাম জমা দেয়। অসীম না পিন্টু দুই জনের মধ্যে কাকে বাদ দেবে মোহামেডান এ নিয়ে দোদুল্যমান অবস্থায় ছিল। শেষ পর্যন্ত সিনিয়র খেলোয়াড়, চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্য এসব বিবেচনায় ডিফেন্ডার পিন্টুকে নেয় মোহামেডান। 

গোলরক্ষকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পজিশনে মোহামেডান বিকেএসপির তরুণ খেলোয়াড়ের ওপর নির্ভর করল। মোহামেডানের হকি দলের ম্যানেজার আরিফুল হক প্রিন্স বলেন, ‘গোলরক্ষকদের কোটার বাইরে রাখার জন্য হকি ও খেলোয়াড়দের স্বার্থে অনেক আগে থেকেই দাবি জানানো হয়েছিল। সেটা ফেডারেশন মানেনি। আমরা অসীমকে দলভুক্ত না করতে পারলেও তার পাশে আছি।’ 

প্রায় চার বছর পর দলবদল হলেও আবাহনী-মোহামেডান ও মেরিনার্সের বাইরে খেলোয়াড়রা আর্থিকভাবে তেমন সম্মানী পাচ্ছেন না। জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক গোলরক্ষক জাহিদ হোসেন বলেন, ‘দুই ক্লাবের বাইরে হকিতে দলবদলের পারিশ্রমিক কম থাকে। এবার আরও কম। গোলরক্ষকদের জন্য সেটা আরও বেশি।’

অসীমের শেষ সম্বল ফেডারেশনের সভাপতি, ‘সভাপতি স্যারের কাছে আবেদন জানাব। আমাকে লিগে খেলার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।’ জাতীয় দলের সাবেক গোলরক্ষক রাসেল খান বাপ্পি অসীমের মতো সংকটে পড়েছিলেন। সভাপতির বিশেষ অনুমতিতে তিনি লিগ খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। 

এজেড/এমএইচ