বিকেএসপিতে শেষ কর্ম দিবসে বন্ধু হকি কোচ মওদুদুর রহমান শুভর ফ্রেমে বন্দী আব্দুল্লাহ হেল কাফি (ডানে)/সংগৃহীত

আব্দুল্লাহ হেল কাফি ছিলেন দ্রুততম মানব। নিজের দ্রুততম মানব পরিচয় ছাপিয়ে গেছে কোচ কাফির পরিচয়ে। গত এক যুগে দেশের দ্রুততম মানব মানবীর অনেকেই তার হাতেই গড়া। 

বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (বিকেএসপি) ছাত্র ছিলেন। পরবর্তীতে প্রিয় ক্যাম্পাসেই কোচ হয়েছেন। ছাত্র শিক্ষক হিসেবে দুই যুগের বেশি সময় সম্পর্ক বিকেএসপির সঙ্গে যার। সেই কাফি একদিন পর থেকেই থেকে আর বিকেএসপির নন। 

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শারীরিক শিক্ষা বিভাগে উপ পরিচালক হিসেবে নতুন কর্মস্থল বেছে নিয়েছেন। বিকেএসপির কোচ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা বিভাগে যোগদান করার কারণ সম্পর্কে বলেন, ‘বিকেএসপির কাফি আমার পরিচয়। আজীবন বিকেএসপির সঙ্গে সম্পর্ক। জীবন-জীবিকার নিশ্চয়তায় এই সিদ্ধান্ত নিতে হলো।’

কাফি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে ২০০৩-০৯ পর্যন্ত কোচ হিসেবে কাজ করেছেন। এরপর থেকে বিকেএসপিতে কাজ করলেন এতদিন। দুই প্রতিষ্ঠানে কোচদের সুযোগ-সুবিধা ও সীমাবদ্ধতা তার ভালো জানা। সেই অভিজ্ঞতা থেকে দেশের ক্রীড়া অভিভাবকদের প্রতি তার অনুরোধ, ‘শিক্ষকরা যেমন শিক্ষিত জাতি তৈরি করে। কোচরাও মেধাবী খেলোয়াড় সৃষ্টি করে। কোচদের সম্মান, সম্মানী, অবসরকালীন নিশ্চয়তা সুচারুভাবে দেয়া দরকার।’

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে পেনশন সুবিধা থাকলেও বিকেএসপিতে নেই। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে কোচরা প্রবেশ করেন দ্বিতীয় শ্রেণীর কর্মকর্তা হিসেবে আর বিকেএসপিতে প্রথম শ্রেণির। চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমাতে আছে পার্থক্য। বিকেএসপিতে কোচদের পদোন্নতিতে রয়েছে জট । যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কাফি সরাসরি উপ-পরিচালক পদে নিয়োগ পেয়েছেন। বিকেএসপিতে এই সমমানের পদে পদোন্নতি পেতে তাকে অপেক্ষা করতে হতো বেশ কয়েক বছর। 

খেলোয়াড় তৈরি করাই ছিল কাফির নেশা। নতুন দায়িত্বে সেই সুযোগ সীমিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-পরিচালক হিসেবে নিজেকে নতুন রুপে চেনাতে চান, ‘এখানে খেলোয়াড় তৈরির সুযোগ সরাসরি কম। তবে যশোর বিজ্ঞান প্রযুক্তিতে ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগ রয়েছে। সেখানে খেলা সম্পর্কিত গবেষণা করার ইচ্ছে আছে। যা ক্রীড়াঙ্গনে ভালো ভূমিকা রাখবে বলে আশা করি।’

কাফির শেষ কর্ম দিবসে বিকেএসপির তার প্রিয় জনেরা বিদায় দিচ্ছেন। অ্যাথলেটিকসের কোচ হলেও কাফির বিদায়ে অন্য ডিসিপ্লিনও ব্যথিত। বিশেষ করে তার দীর্ঘ দিনের বন্ধু মওদুদুর রহমান শুভ। 

কাফি ও শুভ দুই খেলার হলেও বন্ধুত্ব অনেক। এক সঙ্গে বিকেএসপিতে পড়েছেন আবার দুই জনই কোচ হয়ে ফিরেছেন। বন্ধুর এই বিদায়ে অম্ল মধুর প্রতিক্রিয়া শুভর, ‘আমি হকি, কাফি অ্যাথলেটিকসে ছিল। শিক্ষাজীবন থেকে আমরা ঘনিষ্ঠ। কর্মজীবনেও আমরা খুব কাছাকাছি ছিলাম। আমরা দু’জন দু’জনকে উভয়কে সাহায্য সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছি। বিদায় নাহি দিতে চায়, তবু দিতে হয়। বন্ধুর পরবর্তী জীবনের জন্য শুভকামনা।’

এজেড/এটি/এনইউ