জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পুরাতন ভবনের জিমনেশিয়ামে চলে জিমন্যাস্টিক্স অনুশীলন। আগের সময়ের চেয়ে এখনকার অনুশীলনে ভিন্নতা এসেছে অনেক। বাংলাদেশের জিমন্যাস্টদের অনুশীলন করান এখন অলিম্পিকে স্বর্ণ জয়ী কোচ সো সু ডং। তিনি এসে বাংলাদেশের জিমন্যাস্টদের স্বপ্ন দেখানো শুরু করেছেন আন্তর্জাতিক পদকের। অলিম্পিকে স্বর্ণ জয়ী কোচ এনে ফেডারেশনও আশা করছে অলিম্পিক পদকের। 

বাংলাদেশ জিমন্যাস্টিক্স ফেডারেশনের সভাপতি শেখ বশির আহমেদ মামুন এই সম্পর্কে বলেন, ‘অনেক দিন পর বাংলাদেশের জিমন্যাস্টিক্সে বিদেশি কোচ এসেছে। তিনি বিশ্বের অন্যতম সেরা কোচদের একজন। তার মাধ্যমে অলিম্পিকে স্বর্ণ জিতেছে জিমন্যাস্টরা। আশা করি তিনি আমাদের ভালো কিছু উপহার দেবেন।’ 

বাংলাদেশের অ্যাথলেটদের ফিটনেস, মানসিকতা, পারফরম্যান্স এখনো অলিম্পিক পর্যায়ে পৌঁছেনি। বাস্তবতা মেনেও অলিম্পিকে ভালো কিছু আশা করছেন ফেডারেশনের এই সভাপতি, ‘গত দুই অলিম্পিকে আমাদের একজন করে ক্রীড়াবিদ নিজ যোগ্যতায় খেলেছে। গলফার সিদ্দিক ও আরচ্যার রোমান সানা তাদের সামর্থ্য দেখিয়েছেন। আমাদের ক্রীড়াবিদদের সামর্থ্য রয়েছে প্রয়োজন পরিচর্যা ও পরিকল্পনা। কোরিয়ান জিমন্যাস্ট কোচ অত্যন্ত অভিজ্ঞ। তার নির্দেশনা আমাদের খেলোয়াড় সঠিকভাবে গ্রহণ করতে পারলে আশা করা যায় জিমন্যাস্টিক্সও সরাসরি অলিম্পিকে খেলবে। অলিম্পিকে পদক একটি দীর্ঘ প্রস্তুতি ও পরিকল্পনার ফল। আমরা সেই প্রক্রিয়া মাত্র শুরু করেছি। সুনির্দিষ্ট সময় বলা যাবে না। আশা করি একদিন পদক আসবে।’

২০১২ সালে আমেরিকা প্রবাসী সাইক সিজার লন্ডন অলিম্পিকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। সেটাই এখন পর্যন্ত অলিম্পিকে বাংলাদেশের জিমন্যাস্টিক্সে প্রতিনিধিত্ব। 

২০২৪ সালে প্যারিস অলিম্পিক। সময় মাত্র দুই বছর। এত স্বল্প সময়ে পদক অর্জন অনেক কষ্টসাধ্য। দক্ষিণ কোরিয়ান এই কোচের সঙ্গে ফেডারেশনের চুক্তি এক বছর। হাই প্রোফাইল এই কোচের পেছনে ফেডারেশনের মাসে ৪ লাখ টাকা ব্যয় হয়। ফেডারেশনের সভাপতি এই ব্যয় অধিকাংশ বহন করেন। 

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জিমন্যাস্টিক্স অত্যন্ত আকর্ষণীয় খেলা হলেও বাংলাদেশে এর জনপ্রিয়তা কম। এই খেলায় অনেক জায়গা প্রয়োজন। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মধ্যে ছোট আকারেই অনুশীলন ও খেলা আয়োজন করে ফেডারেশন। এত সীমাবদ্ধতার মধ্যে আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে পদক আনছে খেলাটি।

এর স্বীকৃতি হিসেবে সম্প্রতি জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারে জিমন্যাস্টিক্স ফেডারেশনের সভাপতি শেখ বশির আহমেদ মামুন ও সাধারণ সম্পাদক আহমেদুর রহমান বাবলু ক্রীড়াঙ্গনে রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ পদক পেয়েছেন। এই পদক জিমন্যাস্টিক্সের প্রতি আরো দায়িত্ববোধ বাড়িয়ে দিয়েছে বলে মনে করেন দু’জনে, ‘যে কোনো স্বীকৃতি অনুপ্রেরণার। ক্রীড়া ক্ষেত্রে জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার সর্বোচ্চ সম্মাননা। এই পদক জিমন্যাস্টিক্স ও ক্রীড়াঙ্গনের প্রতি আরো বেশি দায়িত্ববান হওয়ার নিদের্শক।’

এজেড/এনইউ