২০১৭ ইসলামিক গেমসে ১০ মিটার মিশ্র এয়ার রাইফেলে স্বর্ণজয়ী বাকি ও দিশা/ফাইল ছবি

২০১৭ সালে আজারবাইজানের বাকুতে সর্বশেষ ইসলামিক সলিডারিটি গেমসের আসর বসেছিল। সেই গেমসে বাংলাদেশ একটি স্বর্ণ, রৌপ্য ও ব্রোঞ্জ জিতেছিল। তিন পদকের দু’টিই ছিল শুটিং থেকে। আব্দুল্লাহ হেল বাকী ও আতকিয়া দিশা ১০ মিটার এয়ার রাইফেল মিশ্র বিভাগে স্বর্ণ ও ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে রাব্বি হাসান মুন্না জিতেছিলেন রৌপ্য।

এই বছর ৯-১৮ আগস্ট তুরস্কের কোনিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য ইসলামিক সলিডারিটি গেমসে শুটিং ডিসিপ্লিন থাকলেও রাইফেল ইভেন্ট নেই। শুধুমাত্র শটগান ইভেন্ট। ফলে বাংলাদেশে আগের স্বর্ণ বজায় রাখার সম্ভাবনা ক্ষীণ, ‘এটা আসলে আমাদের জন্য বেশ চ্যালেঞ্জিং কারণ আমরা শটগানে অভ্যস্ত নই। দুই মাসের অনুশীলনে ইসলামিক গেমসের মতো আসরে পদকের জন্য তৈরি হওয়াটাও কঠিন। রাইফেল ইভেন্ট থাকলে আমরা পদক ধরে রাখতে সচেষ্ট থাকতাম’-বলেন শুটিং ফেডারেশনের মহাসচিব ইন্তেখাবুল হামিদ। 

শুটিংয়ে রাইফেল ইভেন্ট না থাকায় বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনের প্রত্যাশা মূলত আরচ্যারির দিকে, ‘আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের সবচেয়ে সফল ডিসিপ্লিন আরচ্যারি ও শুটিং। রাইফেল থাকলে শুটিংয়ে বেশি আশা করতাম। সেই ইভেন্ট না থাকায় আরচ্যারির উপর প্রত্যাশাটা বেশি’ -বলেন গেমসের শেফ দ্য মিশন সিরাজউদ্দিন মোঃ আলমগীর।

গত আসরে বাংলাদেশের একমাত্র ব্রোঞ্জটি এসেছিল কুস্তি থেকে। এবার গেমস নিয়ে সামগ্রিক প্রত্যাশা সম্পর্কে শেফ দ্য মিশন বলেন, ‘তুরস্কের সলিডারিটি গেমসে ৫৪ টি ইসলামিক দেশ অংশ নেবে। প্রতিদ্বন্দ্বিতা যথেষ্ট হবে। আমরা কয়েকটি ডিসিপ্লিনে ভালো ফলাফল প্রত্যাশা করি। সেই ফলাফলের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ও সহায়তা করতে অলিম্পিক প্রস্তুত। সেই আলোচনাই আজকের সভায় হয়েছে।’

কারাতে, টেবিল টেনিস ফেডারেশনের অনুরোধ রয়েছে তাদের খেলোয়াড় সংখ্যা বৃদ্ধি করার। মাত্র একজন নারী কারাতেকা পাঠাতে বলায় স্বর্ণজয়ী কারাতেকা মারজান আক্তার প্রিয়া অপেক্ষামান তালিকায়। তেমনি টেবিল টেনিস ফেডারেশনের অনুরোধ তাদের খেলোয়াড় সংখ্যা তিন থেকে চার করার। অতিরিক্ত খেলোয়াড়ের খরচ সংশ্লিষ্ট ফেডারেশন বহন করতে চায়। এটি অবশ্য বিওএ’র নীতিমালার পরিপন্থী। ইসলামিক সলিডারিটি গেমসে খেলোয়াড়, কোচ, কর্মকর্তা মিলিয়ে মোট কন্টিনজেন্ট ৮৪ জনের। ১১ ডিসিপ্লিনে কোচ, ম্যানেজার, কর্মকর্তা মিলিয়ে সংখ্যা মাত্র ১৫। টিম ডাক্তার, প্রশাসনিক কর্মকর্তাও একজন করে। আবাসন ও নানা বিষয় বিবেচনা করে স্বাগতিকরা সংখ্যা বৃদ্ধি করতে অনাগ্রহ। শেফ দ্য মিশন সভায় কিছু সংখ্যা বৃদ্ধির ব্যাপারে প্রস্তাব তোলা হবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে।

ইসলামিক সলিডারিটি থেকে বাংলাদেশের জন্য একটি সুখবর রয়েছে। হ্যান্ডবলটি আগে বাদ পড়েছিল। এখন আবার অর্ন্তভূক্ত হয়েছে। তুরস্কের এই গেমসের জন্য হ্যান্ডবল ফেডারেশনকে অনুশীলন শুরু করতে বলেছে অলিম্পিক।

ইসলামী দেশগুলোর মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ ও সম্প্রীতি বৃদ্ধির জন্য ২০০৫ সাল থেকে শুরু হয়েছে ইসলামিক সলিডারিটি গেমস। বাংলাদেশ এই গেমসের শুরু থেকেই নিয়মিতভাবে অংশগ্রহণ করে আসছে। বিগত আসরগুলোতে বাংলাদেশের পদক ছিল এই গেমসে।
 
সলিডারিটি গেমসে বাংলাদেশের যতো ডিসিপ্লিন-

ডিসিপ্লিন খেলোয়াড় প্রশিক্ষক মোট
আরচ্যারি ৮(পু)+৮(ম) ১৯
অ্যাথলেটিক্স ২(পু)+১(ম) ১(ম)
ফেন্সিং ৩(পু)+১(ম)
জিমন্যাস্টিক্স ৩(পু)
হ্যান্ডবল ১৬(ম) ২(পু)+১(ম) ১৯
কারাতে ২(পু)+১(ম)
শুটিং ২(পু)+১(ম)
সাঁতার ১(পু)+১(ম)
টিটি ৩(পু)+৩(ম)
কুস্তি ১(পু)+২(ম)
ভারত্তোলন ৩(পু)+৩(ম)

এজেড/এটি/এনইউ