বাংলা বলে, গান গেয়ে চমকে দিলেন নেপালি ম্যানেজার
বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের সংবাদ সম্মেলন কক্ষে সবাই হঠাৎ চমকে গেলেন। নেপালের একজন নাগরিকের মুখে স্পষ্ট বাংলা ভাষা। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর অবলীলায় বাংলাতেই দিচ্ছেন। উত্তরের পাশাপাশি দুই দেশের রাগবির সৌহার্দ্যতার কথাও তুলে ধরলেন বাংলায়। বাংলাদেশে নেপাল রাগবি দল তিনটি প্রীতি ম্যাচ খেলতে এসেছে।
নেপাল রাগবি দলের ম্যানেজার গোপাল ছেত্রী দারুণভাবে বাংলা রপ্ত করেছেন। জন্ম নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু। এরপর বাবার চাকরিসূত্রে ভারতের বাংলাভাষী অঞ্চলে ছিলেন। সেখান থেকেই মূলত তার বাংলা রপ্ত, ‘আসলে বাংলা ভাষা আমার কাছে খুব ভালো লাগে। বাবা ভারতের আর্মিতে চাকুরি করতেন। সেই সূত্রে কলকাতা, আসামসহ অনেক অঞ্চলে থেকেছি। তখন থেকেই বাংলার চর্চা।’
বিজ্ঞাপন
ভারত বহু ভাষার দেশ। সেখানে বাংলা ছাড়াও আসামিজ, হিন্দি আরো কয়েকটি ভাষা শিখেছেন। এর মধ্যে বাংলা ভাষাকে সবচেয়ে মিষ্টি হিসেবে আখ্যায়িত করলেন গোপাল, ‘আমি ৬-৭ টা ভাষায় কথা বলতে পারি। এর মধ্যে বাংলা ভাষাকেই সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে। অনেক মিষ্টি ভাষা বাংলা।’
ভারতে শৈশব কাটার পর কাঠমান্ডুতে ফিরেছেন যুবক হয়ে। নেপালে বাংলা ভাষার অনুশীলনও করেন, ‘নেপালে তো নেপালিতেই কথা বলি। নেপালে অনেক বাংলাদেশি পর্যটক যায়। তাদের সঙ্গে আমার বাংলা কথা বলার অনুশীলন চালিয়ে যাই’। শুধু বাংলা কথা নয়, বাংলার শিল্পী-অভিনেতাদের তার দারুণ পছন্দ, ‘বাপ্পি লাহিড়ী, মিঠুন চক্রবর্তীকে আমার খুব ভালো লাগত। আমি বাংলা গান, সিনেমাও দেখি।’
বিজ্ঞাপন
বাংলা গান-সিনেমা দেখে তিনি বাংলা গানও শিখে ফেলেছেন। বেশ কয়েকটি বাংলা গান দারুণ ভাবে গাইতে পারেন। প্রতিবেদকের অনুরোধে একটি বাংলা গানও গেয়েও শুনিয়েছেন। বাংলার পাশাপাশি বাংলাদেশকে নিয়েও রয়েছে তার আগ্রহ, ‘আপনাদের দেশের ইলিশ খুব সুস্বাদু। নেপালে বাংলাদেশের ইলিশের দাম অনেক।’
বাংলাদেশে তিনি প্রথম এসেছেন। সামনে সপরিবারে আসতে চান আবার, ‘এবার দল নিয়ে এসেছি। বেশি দিন থাকতে পারব না। সামনে স্ত্রী, সন্তানদের নিয়ে এসে বেরিয়ে যাব।’ সিলেটে গোপালের বাংলাদেশি ঘনিষ্ঠ বন্ধু রয়েছে। সেখানে যাওয়ার জন্য তার মন ছুটে গেলেও বন্যা বাঁধা হয়ে দাড়িয়েছে, ‘আমার বন্ধু রয়েছে সিলেটে। ওর সাথে দেখা করার খুব ইচ্ছে। সবাই বলছে সেখানে অনেক পানি।’
২০০৫ সালে নেপালে রাগবি শুরু করার পেছনে অন্যতম ভূমিকা রেখেছেন গোপাল। এখন রাগবির সঙ্গে যুক্ত হলেও গোপাল নেপালের ক্রীড়াঙ্গনে পরিচিতি বডি বিল্ডার হিসেবে। নেপালে জাতীয় পর্যায়ে বডি বিল্ডিং করেছেন। পেশাগত জীবনে তিনি নেপাল আর্মিতে কর্মরত রয়েছেন। সব ছাপিয়ে বাংলাদেশিদের কাছে গোপালের বাংলার প্রতি ভালোবাসই বিশেষ বিষয়।
এজেড/এটি