১৯৮৪ সালে অনুষ্ঠিত লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিকে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ক্রীড়া আসরে অভিষেক হয় বাংলাদেশের। সেই অলিম্পিকে বাংলাদেশের একমাত্র ক্রীড়াবিদ ছিলেন দ্রুততম মানব সাইদুর রহমান ডন। সেই ডনের কোচ মীর শরীফ হাসান আর নেই।

শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী ক্লাবে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে রাত সাড়ে ৯টার দিকে শেষ নিঃস্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

কোচের মৃত্যুতে বাংলাদেশের প্রথম অলিম্পিয়ান ডন বলেন, ‘আমি অত্যন্ত শোকাহত। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গন এক রত্ন হারাল এবং অ্যাথলেটিক্স হারাল এক গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। আমার ডন হয়ে উঠার পেছনে শতভাগ অবদান তার।’

ডন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। আর শরীফ হাসান খেলোয়াড় হিসেবে ক্যারিয়ার শেষ করে জার্মান কোচিং ডিগ্রি নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শারীরিক শিক্ষা অফিসে অ্যাথলেট কোচ হিসেবে যোগদান করেন। 

ডনের অনুশীলন, পরিকল্পনা সব কিছুতেই তার ছিল সরাসরি সম্পৃক্ততা, ‘আমি দীর্ঘদিন তার অধীনে অনুশীলন করেছি। জাতীয় দলে তাকে কোচ না করলে আমি অনুশীলন করব না এমনও বলেছি ফেডারেশনকে। তিনি জাতীয় দলেও কোচিং করিয়েছেন।’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসরের পরও অ্যাথলেটিক্সের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এ বছরের শুরুর দিকে অ্যাথলেটিক্স ক্যাম্পে তিনি প্রধান কোচ ছিলেন। গত বছরও তিনি কোচিং করিয়েছেন। শুধু ডন নয়, বাংলাদেশের অনেক অ্যাথলেটের পেছনে তার যথেষ্ট অবদান রয়েছে। 

বর্তমান প্রজন্ম তাকে কোচিংয়ে দেখলেও খেলোয়াড় হিসেবেও তিনি ছিলেন সফল। ৮০০ ও ১৫০০ মিটার স্প্রিন্টে তার জাতীয় পর্যায়ে স্বর্ণপদক রয়েছে। অ্যাথলেটিক্স নিয়ে তার ছিল বিস্তর জ্ঞান। বিশেষ করে স্প্রিন্টের ওপর তার নানা আন্তর্জাতিক পাবলিকেশন্স রয়েছে। এমন গুণী ব্যক্তিত্ব বরাবর আড়ালেই থেকেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে ফেডারেশনের ডাকে এসে কোচিং করালেও নানা কারণে আবার নিজ থেকে সরে গিয়েছিলেন। খানিকটা চাপা অভিমানও ছিল। সকল অভিমান ভেদ করে না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন শরীফ হাসান।

তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশন ও কৃতি অ্যাথলেটরা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

এজেড/ওএফ