ভোরের আলো ফুটে উঠার আগেই যাত্রী ছাউনিতে লোকজনের ট্রামের জন্য অপেক্ষা। কোনিয়ার শিশু, বৃদ্ধ, পেশাজীবী সবাই ট্রামে যাতায়াত করেন। বেশ প্রশস্ত ও যানজটহীন সড়ক থাকলেও সবার পছন্দ ট্রামে চলাচল।

আয়তনের দিক থেকে অন্যতম বড় শহর কোনিয়া। বেশ প্রশস্ত রাস্তা। আন্তালিয়া, আঙ্কারা, ইস্তাম্বুলের মতো শহরের সঙ্গে যুক্ত অনেক বড় রাস্তায় দুই লেন রয়েছে। পাশের লেনে রয়েছে কোনিয়ার অভ্যন্তরীণ চলাচলের জন্য। এর পাশেই ছোট্ট লাইন ট্রামের।

আরও পড়ুন >> রুমির শহরে রুমির জাদুঘরে কিছুক্ষণ

কোনিয়া শহরের মধ্যে যাতায়াতের জন্য ট্রামই সবাই অগ্রাধিকার দেয়। দুই তিন মিনিট পর পর ট্রাম আসে স্টেশনগুলোতে। ট্রামের প্রতি নির্ভরশীলতা হলেও তেমন কোনো ভিড় থাকে না। অধিকাংশ ট্রাম ৭-৮ বগির। দেড়শ'র বেশি আসন রয়েছে। সুস্থ মানুষের পাশাপাশি শারীরিক প্রতিবন্ধীরাও ট্রাম ব্যবহার করছেন অবলীলায়। 

কোনিয়া শহরের অন্যতম সৌন্দর্য এই ট্রাম। গেমস উপলক্ষে প্রতিটি ট্রামের গায়ে লেগেছে গেমসের লোগো। গেমসের কার্ডধারীরা বিনামূল্যে কোনিয়ার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে যাচ্ছেন। ছোট্ট ছোট্ট যাত্রী ছাউনির এক কোণে রয়েছে ডিসপ্লে বোর্ড। কোন ট্রাম কোন সময়ে আসবে সেটা ডিসপ্লেতে প্রদর্শন হয় সব সময়। এক কিলোমিটারের কম দুরত্বের স্টেশনগুলোতে ট্রাম আসে সুনির্দিষ্ট সময়ে।

আরও পড়ুন >> গাছতলায় ঠাঁই হলো বাংলাদেশ দলের, মেলেনি দুপুরের খাবারও

কোনিয়ার অনেক মূল সড়কের মাঝ দিয়ে গেছে ট্রামের লাইন। সড়কে চলা বাস, প্রাইভেট কার কখনো সিগন্যালে ট্রামের জন্য থামছে আবার কখনো ট্রাম সড়কের যানবাহন চলাচলের জন্য দাড়ায়। কোনিয়ার পথচারীরা বাস, ট্টামের মাঝ দিয়ে সড়কও পার হচ্ছেন। দুর্ঘটনা একেবারে নেই বললেই চলে।

কোনিয়া শহরে তিন বছরের বেশি সময় বাস করছেন বাংলাদেশের সাইফুল ইসলাম সোহান। সেলচুক বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডিতে অধ্যয়নরত এই শিক্ষার্থীও ট্রামে চলাচলে অভ্যস্ত। ট্রাম এত জনপ্রিয় হওয়ার কারণ সম্পর্কে বলেন, ‘প্রথমত এই শহরেই কেবল বিদেশি শিক্ষার্থীরা ট্রামে ফ্রিতে যাতায়াত করতে পারে যা তুরস্কের অন্য কোনো শহরে নেই। কোনিয়ার জনগণও ট্রাম ব্যবহার করে কারণ এটি অত্যন্ত নিরাপদ, স্বাচ্ছন্দ্যময় এবং খরচ কম।’ 

এজেড/এইচএমএ