শীতের মধ্যেও গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমানের বাসায় দাবাড়ুদের ভিড়। যদিও এরা পেশাদার দাবাড়ু নন, শখের বশেই দাবা বোর্ডে লড়ছেন। তবে এই শখের বসে খেলতে গিয়েই নিজেদের স্কুল সেন্ট জোসেফকে তুলেছেন ফাইনালে। এখন হাতছানি দিচ্ছে শিরোপার। তাই এই মুহূর্তে দেশের দ্বিতীয় গ্র্যান্ডমাস্টারের কাছ থেকে নিজেদের ঝালিয়ে নিচ্ছেন।

সেন্ট জোসেফ স্কুলে জিয়ার পুত্র তাহসিন তাজওয়ারও পড়েন। জিয়ার পুত্র জাতীয় দাবা খেলছেন অনেক দিন। গত বছর বাবা-ছেলে দাবার সবচেয়ে বড় আসর অলিম্পিয়াডও খেলেছেন। এরপর স্কুল দাবার ফাইনালটি নিয়ে তাহসিন বেশ রোমাঞ্চিত, 'আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছি। এটা দারুণ গর্বের। নিজের স্কুলকে দেশের মধ্যে দাবায় সেরা করতে পারাও হবে বিশেষ অর্জনের।'

১৬ জানুয়ারি মার্কস অ্যাকটিভ স্কুল চেস চ্যাম্পসের ফাইনাল। চ্যাম্পিয়ন স্কুল পাবে দশ লাখ টাকার পুরস্কার। শিরোপা লড়াইয়ে সেন্ট জোসেফ স্কুলের প্রতিপক্ষ ডিপিএস এসটিএস স্কুল। ঐ স্কুলের ফাইনালিস্টদের মধ্যে রেটেড দাবাড়ু রয়েছে। এর পরও ঘাবড়াচ্ছেন না সেন্ট জোসেফের তাহসিন, 'আমাদের দলে রেটেড দাবাড়ু না থাকলেও মেধাবী দাবাড়ু রয়েছে। ফাইনালে সঠিকভাবে খেলতে  পারলে জয় অসম্ভব নয়।'

ডিপিএস স্কুলে দাবার চর্চা বেশ কিছু দিন ধরেই। দাবা ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক মাসুদুর রহমান মল্লিক দীপ সেই স্কুলের ক্রীড়া শিক্ষক। তার কোচিংয়ে ডিপিএসে দাবার সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে জানালেন সেই স্কুলের দাবাড় রোনাকের বাবা, 'এই স্কুলের অনেক বাচ্চাই দাবা পছন্দ করে। আমার বাচ্চা স্কুলকে ফাইনালে তুলেছে আমি অত্যন্ত খুশি।'

মার্কস অ্যাকটিভ স্কুল চেস চ্যাম্পস গত বছরের ২১ আগস্ট থেকে শুরু হয়েছে। দেশের ৬৪ জেলার ২০৬২ স্কুল এই দাবায় অংশ নিয়েছে। কিছু পর্যায়ে খেলা ফুটবলের মতো হোম এন্ড অ্যাওয়ে ভিত্তিতেও হয়েছে। এক স্কুল আরেক স্কুলে দাবা খেলতে যাচ্ছে বিশেষ সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে। 

দেশ জুড়ে দাবার এই বিপ্লব ঘটানোর স্বপ্ন দেখছিলেন আন্তর্জাতিক মাস্টার আবু সুফিয়ান শাকিল। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের এই দাবাড়ু কোচই মূলত স্কুল দাবা নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করছিলেন। এই প্রতিযোগিতার প্রধান সমন্বয়কারী হয়ে নিজেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছেন, 'এই স্কুল দাবার মাধ্যমে বেশ আলোড়ন তৈরি হয়েছে। অনেক স্কুলে দাবার চর্চা শুরু হয়েছে। অনেক স্কুলে দাবার কোচ নিয়োগ দিচ্ছে। ফলে কর্মসংস্থানও হচ্ছে অনেকের’। দেশ জুড়ে এই দাবা আয়োজন সম্ভব হয়েছে আবুল খায়ের গ্রুপের পৃষ্ঠপোষকতার জন্য।'

এজেড