রিংয়ের লড়াই শেষ হতেই বক্সিংয়ে মিক্সড জোনের খেলা শুরু হয়। অল্পের জন্য পদক হাতছাড়া করলেও বাংলাদেশি বক্সার সেলিম হোসেনকে পাওয়া গেল খানিকটা হাসিমুখেই। সেলিমের কোচ ও ম্যানেজারও এমন লড়াইয়ে প্রাপ্তি দেখেন। 

এশিয়াডের মঞ্চে বাংলাদেশি বক্সার শেষ আটে লড়বেন এটা অনেকটা অবিশ্বাস্যই ছিল। ঘরোয়া বক্সিংয়ের মান ও সুযোগ-সুবিধার অভাবসহ সব প্রতিবন্ধকতা দূর করে সেলিম নিজেকে এশিয়াডের সেরা আটে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেরা আটে উঠে থেমে থাকেননি, লড়েছেন দুর্দান্তভাবে। বিশেষ করে তৃতীয় রাউন্ডে জাপানী বক্সার শুদাই হারাদাকে কুপোকাতই করেছিলেন। তাই বক্সার সেলিমের দাবি, ‘শেষ রাউন্ডে আমিই ভালো খেলেছি। তৃতীয় রাউন্ডে আমিই জিতেছিলাম।’ 

প্রথম দুই রাউন্ড হেরে যাওয়ায় ম্যাচের ফলাফল অনেকটাই নির্ধারিত ছিল। তাই তৃতীয় রাউন্ডের ফল জাপানী বক্সারের দিকেই গেছে বলে ধারণা সেলিমের কোচ মাসুদের। এরপরও সেলিমের বক্সিংয়ের প্রশংসাই করেছেন তিনি, ‘সে দুর্দান্ত লড়েছে। এটা আমাদের জন্য বড় প্রাপ্তি।’

সেলিম তৃতীয় রাউন্ডে জয়ের মতো খেললেও প্রথম দুই রাউন্ডে খানিকটা পিছিয়ে ছিলেন। এর কারণ সম্পর্কে মাসুদ বলেন, ‘জাপানের বক্সারের গতি ও ক্ষিপ্রতা দু’টোই বেশি ছিল।’

১৯৮৬ সিউল এশিয়ান গেমসে বক্সার মোশাররফ ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন। এরপর বাংলাদেশের আর কোনো ক্রীড়াবিদ ব্যক্তিগত ইভেন্টে জিততে পারেননি। ৩১ বছর বয়সী সেলিম খুব কাছ থেকে পদক মিস করায় খানিকটা আফসোসও প্রকাশ করলেন, ‘পদক জয়ের স্বপ্ন তো ছিলই। যদিও এটা আমি প্রকাশ করিনি আগে।’

সেলিম মোশাররফকে স্পর্শ করতে পারেননি। তবে তার উত্তরসূরিরা তাকে ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন, ‘আমার এই পারফরম্যান্স ভবিষ্যতের জন্য অনুপ্রেরণার। সামনে অন্যরা আরও ভালো করবে।’

সেলিমের কথাগুলো পাশ থেকে শুনছিলেন এবারের গেমসে বক্সিং দলের ম্যানেজার ও ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম তুহিন। তিনি এই এশিয়াড থেকে বক্সিংকে নতুন ধাপে নিতে চান, ‘আমাদের বক্সাররা পারেন সেটা প্রমাণ হয়েছে সেলিমের পারফরম্যান্সের মাধ্যমে। সামনে আমাদের আরও অনুশীলন ও সুযোগ সুবিধা বাড়াতে হবে।’

ক্রিকেট-ফুটবল বাদে বাংলাদেশের অন্য ফেডারেশনগুলোর সেভাবে আর্থিক ভিত্তি নেই। তাই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ও বিওএ’র দিকে তাকিয়ে এই ফেডারেশন সম্পাদক, ‘আমরা বিদেশি কোচ এনে দীর্ঘমেয়াদী অনুশীলনে রাখতে চাই খেলোয়াড়দের। এজন্য অলিম্পিক ও সরকারের সাহায্য প্রয়োজন।’

এজেড/এএইচএস