কয়েক গজ দূরত্বে কাবাডিতে দুই দলের ডাগ আউট। দুই কোচ আব্দুল জলিল ও জিয়াউর রহমান নিজ দলের খেলোয়াড়দের নির্দেশনা দিচ্ছেন। হাফ টাইমে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ১০-৭ পয়েন্টে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বিরুদ্ধে এগিয়ে ছিল। বিমান বাহিনীর কোচ ছিলেন আব্দুল জলিল ও বর্ডার গার্ডের জিয়াউর রহমান। সাবেক দুই তারকা কাবাডি খেলোয়াড় আবার আপন দুই ভাই। দুই ভাইয়ের লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত ছোট ভাই জিয়াই জিতেছেন। 

বিজিবি ২৪-২২ পয়েন্টে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর আনন্দ উল্লাস করে। বিজিবির খেলোয়াড়রা কোচ জিয়াকে নিয়ে মাথায় উঠিয়ে আনন্দ করে। দূর থেকে বড় ভাই জলিল দেখছিলেন। 

ছোট ভাই জিয়ার কাছে হেরে অসন্তুষ্ট নন বিমানবাহিনীর জলিল, ‘ও অসাধারণ খেলোয়াড় ছিল। কোচ হিসেবেও দারুণ করছে। বিজিবিতে জাতীয় দলের অনেক অভিজ্ঞ খেলোয়াড়। বিমানবাহিনী জাতীয় কাবাডিতে প্রথমবারের মতো ফাইনাল খেলছে।’
 
জলিল ১৯৯৫ থেকে কোচিং করাচ্ছেন। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে দক্ষিণ এশিয়া, এশিয়ান গেমসেও কোচ হিসেবে পদক জিতেছেন জলিল। আজ বাংলাদেশ গেমসে হারলেও ছোট ভাইকে পুনরায় হারানোর প্রত্যয় বড় ভাইয়ের কণ্ঠে, ‘আজ আমি হারছি। আবার সামনে জিতব।’ 

খেলোয়াড় হিসেবে জিয়া অনেক বড় মাপের হলেও কোচ হিসেবে ভাইয়ের উচ্চতায় উঠতে হলে অনেক সময় প্রয়োজন জানিয়ে দিলেন জলিল, ‘ও তো আমার কোচিংয়েই খেলেছে। বলত ডিফেন্স ঠিক রাখেন, আমি রেইড দিয়ে পয়েন্ট আনব। খেলোয়াড় হিসেবে আত্মবিশ্বাসী ছিল অনেক। কোচ হিসেবে আমার অবস্থানে আসতে ওর অনেক সময় লাগবে।’

জিয়া ভবিষ্যৎ নিয়ে সেভাবে ভাবতে চান না। বাংলাদেশ গেমস জিতেই অনেকটা তৃপ্ত তিনি, ‘সেমিফাইনালের আগে দায়িত্ব নিয়েছিলাম। সেমিফাইনালে নৌবাহিনীর বিরুদ্ধে এক পয়েন্টে জিতি। ফাইনালে জিতলাম দুই পয়েন্টে।’ 

বিমানবাহিনী প্রথমবারের মতো ফাইনাল খেললেও ম্যাচের শেষ পাঁচ মিনিট বিজিবিকে প্রায় ধরে ফেলছিল। বিমান বাহিনীতে জলিলের মতো অভিজ্ঞ কোচ থাকলেও নবীন জিয়া চিন্তিত ছিলেন না, ‘বোনাস পয়েন্ট নিয়ে আমরা ম্যাচ আগেই বের করে ফেলেছিলাম। ফলে অতটা উদ্বিগ্ন ছিলাম না। আমার খেলোয়াড়রা আত্মবিশ্বাসী ছিল।’ 

২০১৭ সালে কোচিং শুরু করা জিয়া ঘরোয়া পর্যায়ে বিভিন্ন সময় বড় ভাই জলিলের বিরুদ্ধে লড়লেও ফাইনালে আজই ছিল প্রথম মুখোমুখি। শিরোপার মঞ্চে বড় ভাইকে হারিয়ে কোচ হিসেবেও নিজেকে বড় উচ্চতায় যাওয়ার একটা ক্ষুদ্র বার্তা দিয়ে রাখলেন জিয়া।

২০১৩ সালে বাংলাদেশ গেমসে কাবাডিতে রক্তাক্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছিল। এবার ফাইনালে হালকা উত্তেজনা থাকলেও ভালোভাবেই শেষ হয়েছে জাতীয় খেলার ডিসিপ্লিনটি। 

এজেড/এমএইচ