খুলনায় নিজ বাসায় ব্যাথায় এখনো কাতরাচ্ছেন শাটলার গাজী নূর আলম তুষার। বাংলাদেশ গেমসে খেলতে এসে আহত হয়ে কোর্ট ছেড়েছিলেন এই শাটলার। পায়ের গোড়ালিতে (অ্যাঙ্কেল) ব্যথা পান তিনি। এক সপ্তাহের বেশি সময় পার হলেও এখন ব্যাথা অনুভব করায় এখনো শঙ্কিত তুষার।

তিনি বলেন, ‘ঢাকার ডাক্তার বলছিল, ব্যাথা হলে আবার এমআরআই করতে। এমআরআইতে যদি খারাপ কিছু ধরা পড়ে তখন তো অপারেশন করতে হতে পারে। এত টাকা আমি পাব কোথায়?’

তরুণ এই শাটলার নিজের চিকিৎসা খরচ নিয়ে বেশ শঙ্কিত। এখন পর্যন্ত প্রায় সব মিলিয়ে ২৫ হাজারের বেশি খরচ হয়েছে। এর মধ্যে ফেডারেশন দিয়েছে হাজার দশেক। অর্থের সংস্থানের ব্যাপারে তুষার বলেন, ‘ফেডারেশন বলেছিল, ঢাকায় কিছুদিন থাকতে। তারা বিষয়টি দেখবে। ঢাকায় আমার বাসা বা আত্মী নেই। হোটেলে থাকার খরচ, আবার খাওয়া-দাওয়া কষ্ট। তাই অনেক ভাড়া দিয়ে গাড়ি করে বাসায় এসেছি। ফেডারেশনের সেক্রেটারি দুই বার পাঁচ হাজার করে দশ হাজার টাকা দিয়েছে। এখন আমি ঢাকার বাইরে আসায় হয়তো অলিম্পিক আর দেখবে না।’ 

তুষারের মতো শঙ্কায় ছিলেন নড়াইল জেলা ক্রীড়া সংস্থার নারী হকি খেলোয়াড় সিমি কর্মর্কার। তিনিও বাংলাদেশ গেমসে খেলতে গিয়ে ব্যথা পেয়েছিলেন কনুইতে। সিমি কর্মকারের দেখাশোনা করছিলেন নড়াইল হকি দলের ম্যানেজার শান্ত ও ঢাকা জেলা ক্রীড়া অফিসার তারিকউজ্জামান নান্নু। 

নড়াইলের হকি ম্যানজোর গেমসে মেডিক্যাল ব্যবস্থা নিয়ে বড় প্রশ্নই তোললেন, ‘অন্য ভেন্যু বা ডিসিপ্লিনে কি হয়েছে জানি না। তবে হকির মেডিক্যাল ব্যবস্থা ভালো ছিল না। খেলোয়াড় ব্যথায় কাতরাচ্ছে, ছিল না স্ট্রেচার, অ্যাম্বুলেন্স। ফেডারেশন বলে অলিম্পিকের দায়িত্ব, অলিম্পিক বলে তারা ফেডারেশনকে বুঝিয়ে দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আমরাই কর্মকারের এখন পর্যন্ত চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করেছি।’ 

এত দিন যাওয়ার পর আজ (মঙ্গলবার) বিষয়টি শান্ত নড়াইল জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান মিকুর কাছে উত্থাপন করেছেন। মিকু অলিম্পিকের উপমহাসচিব হওয়ায় তিনি আশ্বস্ত করেছেন কর্মকারের চিকিৎসার বিষয়টি অলিম্পিক থেকে দেখার। সেক্ষেত্রে শান্তর প্রশ্ন, ‘আমাদের জেলায় না হয় মিকু ভাই আছে বলে রক্ষা, অন্য জেলা বা দলের আহত খেলোয়াড়দের কি হবে?’ 

সাবেক হকি খেলোয়াড় ও মহিলা হকির অন্যতম সমন্বয়ক তারিকউজ্জামান নান্নু অবশ্য কিছুক্ষণ আগে ভালো খবর পেয়েছেন, ‘সর্বশেষ এক্সরে রিপোর্ট ভালো এসেছে। বিশ্রামে থাকলেই কর্মকার সেরে উঠবে। অস্ত্রপাচার বা অন্য কিছু করার প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছে ডাক্তার’ বলেন নান্নু। 

বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিশেয়নের মেডিকেল কমিটির সদস্য সচিব ডা.শফিকুর রহমান গেমসের সামগ্রিক মেডিক্যাল ব্যবস্থা নিয়ে বলেন, ‘আমরা প্রতিটি ডিসিপ্লিনকে সমানভাবে গুরুত্ব ও সমান ব্যবস্থাপনার মধ্যে রেখেছিলাম। আহত ক্রীড়াবিদের ঢাকা মেডিকেল কলেজে সাময়িক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এরপরও যদি কেউ গুরুতর অবস্থায় থেকে থাকে। তাহলে সংশ্লিষ্ট ফেডারেশনের মাধ্যমে আমাদের কাছে আসলে আমরা সহায়তা করব।’

এজেড/এমএইচ