বাংলাদেশের নারী অ্যাথলেটিক্সে এখন চলছে শিরিন অধ্যায়। এক দশক আগে সেই জায়গায় ছিলেন নাজমুন নাহার বিউটি। জাতীয় চ্যাম্পিয়নশীপ মানেই বিউটির শ্রেষ্ঠত্ব। দ্রুততম মানবের পরিবর্তন হলেও বিউটির সময় দ্রুততম মানবী হতেন তিনিই। এখন পর্যন্ত তার ১৮ বার দ্রুততম মানবী হওয়ার রেকর্ডই সর্বোচ্চ।

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের ট্র্যাকের সঙ্গে বিউটির নাড়ির টান। জাতীয়–আন্তর্জাতিক অনেক কীর্তি গড়েছেন এই ট্র্যাকে। সেই ট্র্যাক থেকে হঠাৎ করে উধাও হয়ে গিয়েছিলেন বিউটি। জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে সাবেক–বর্তমান অ্যাথলেটদের মিলনমেলা হয়। গত কয়েকটি জাতীয় বা সামার কোনো মিটেই দেখা যায়নি বিউটিকে। 

অ্যাথলেটিক্সের প্রতি বিমুখতার বিষয়টি আজ (শনিবার) খোলাসা করলেন তিনি, ‘২০১৩ বাংলাদেশ গেমসে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ট্র্যাক থেকে গিয়েছি। এবারও আসলাম। ওই আসরে আমার নোয়াখালী জেলার এক মেয়ের রেজাল্ট নিয়ে সমস্যা হওয়ায় কথা বলেছিলাম। এতে ফেডারেশনের এক কর্মকর্তা বাজে ব্যবহার করে আমার সঙ্গে। তাই রাগ করে আর আসিনি।’

এক দশক পর এবারের চ্যাম্পিয়নশিপে এসেছেন বিউটি। অ্যাথলেট থেকে অবসর নিয়েছেন অনেকদিন আগেই। এবার বিচারক হিসেবে কাজ করেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মন্টু ভাই (ফেডারেশনের সেক্রেটারি) কয়েকটি আসরেই আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। নানা কারণে আসা হয়নি, এবার সময়-সুযোগ পেলাম, তাই এসে জাজিং করলাম। ভালোই লাগল।’ রানিং ইভেন্টগুলোর জাজ হিসেবে কাজ করা বিউটিকে ফেডারেশন সম্মানও দিয়েছে জাতীয় প্রতিযোগিতার মশাল বহনের মাধ্যমে।

সময়ের পরিবর্তনেও অবশ্য অ্যাথলেটিক্সের চিত্র পরিবর্তন হয়নি। তার মতো শিরিনেরও একক আধিপত্য চলছে বর্তমানে। এটি অ্যাথলেটিক্সের জন্য ভালো চিত্র নয় বলে মনে করেন সাবেক এই দ্রুততম মানবী, ‘এটি সুন্দর চিহ্ন নয়। প্রতিদ্বন্দ্বিতা জানানোর মতো অ্যাথলেট থাকা প্রয়োজন। এজন্য অন্য অ্যাথলেটদেরও সমান অনুশীলন ও অন্য সুবিধা প্রদান করা উচিৎ।’

জাতীয় পর্যায়ে শিরিন-বিউটিদের শ্রেষ্ঠত্ব থাকলেও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সেই দাপট থাকে না। এর কারণ সম্পর্কে বিউটি বলেন, ‘রানিং ইভেন্টে উচ্চতা একটা বিষয়। অন্য দেশের অ্যাথলেটরা আমাদের চেয়ে উচ্চতায় এগিয়ে। এছাড়া দীর্ঘমেয়াদী সুযোগ-সুবিধার পার্থক্য তো রয়েছেই।’

সাবেক দ্রুততম মানবী নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শারীরিক শিক্ষা বিভাগে ক্রীড়া অফিসার হিসেবে কর্মরত। বছর কয়েক আগে তিনি জীবনের নতুন এই ইনিংস শুরু করেছেন।

এজেড/এএইচএস