সরকারি ছুটির দিনেও বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনে খানিকটা ব্যস্ততা। সম্মেলন কক্ষে চারজন আরচ্যার হুইল চেয়ারে বসা। আগামী বুধবার তারা রওনা দেবেন আন্তর্জাতিক প্যারা আরচ্যারি টুর্নামেন্ট খেলতে। দুবাইয়ে অনুষ্ঠিতব্য সেই টুর্নামেন্টের পরপরই হবে প্যারিসের প্যারা অলিম্পিকের কোটা।

বাংলাদেশের চার আরচ্যারের মধ্যে একজন নারী আরচ্যার অংশগ্রহণ করবেন কম্পাউন্ড বিভাগে। বাংলাদেশ প্যারা আরচ্যারি দলের ভারতীয় কোচ নিশীথ দাশ ঝুমা আক্তারকে নিয়ে আশাবাদী হয়ে বলেন, ‘কম্পাউন্ডে তিনজন প্যারা অলিম্পিকে খেলতে পারবে। ঝুমার যে স্কোর সেটা আশা করছি প্যারা অলিম্পিকে খেলার মতো।’

বর্তমানে বাংলাদেশের আরচ্যারি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত। সেই আরচ্যারির শুরুটা এই ভারতীয় নিশীথের হাত ধরেই এসেছে। তাই তার পর্যবেক্ষণ একেবারে অমূলক নয়। কারণ ঝুমা আক্তার সম্প্রতি আরচ্যারির টুর্নামেন্টে স্বাভাবিক প্রতিযোগীদের সঙ্গে লড়ে ব্রোঞ্জ জিতেছেন। তাই নিজেকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছেন ঝুমাও, ‘আমি বাংলাদেশে উন্মুক্ত টুর্নামেন্টে কিছুদিন আগে সবলদের সঙ্গে লড়ে পদক জিতেছি। সেখানে আমার স্কোর ৩৪২ প্লাস ছিল। আরেকটু হলে আমার পক্ষে প্যারা অলিম্পিক খেলা সম্ভব।’

অন্য সবার মতো ঝুমাও ছিলেন সুস্থ-স্বাভাবিক। ২০১৮ সালে লিচু গাছ থেকে পড়ে ঝুমার জীবনে আসে দুর্ঘটনা। এরপর থেকে হুইল চেয়ার তার নিত্যসঙ্গী। শারীরিক অক্ষমতার মধ্যেও হুইল চেয়ার বাস্কেটবল খেলা শুরু করেন তিনি। গত বছর প্যারা আরচ্যারির কার্যক্রম শুরুর পর থেকে তিনি অবশ্য আরচ্যারিতেই রয়েছেন। এক বছরের মধ্যেই তিনি পরিণত হয়েছেন সেরা কম্পাউন্ড আরচ্যারে। আরচ্যারিতে মূল ইভেন্ট সাধারণত রিকার্ভ। তার কম্পাউন্ডে আসার কারণ সম্পর্কে বলেন, ‘আমার কোচ নিশীথ দাশ আমাকে ইভেন্ট বাছাই করে দিয়েছেন। বিকেএসপিতে তার অধীনে ভালোই অনুশীলন করেছি।’

আজ দুপুরে বিওএ ভবনে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ প্যারা আরচ্যারি এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহসান উল্লাহ বলেন, ‘আমরা প্যারা আরচ্যারির আনুষ্ঠানিক অনুমোদন পেয়েছি গত বছর। এর মধ্যে প্রায় নয় মাস বিকেএসপিতে নিবিড় অনুশীলন হয়েছে। গত বছর প্যারা এশিয়ান গেমসে আরচ্যারি দল অংশ নিয়েছিল। সবার সহযোগিতা পেলে অবশ্যই এই আরচ্যারিও এগিয়ে যাবে।’

বাংলাদেশ আরচ্যারি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রাজিবউদ্দিন আহমেদ চপল এই এসোসিয়েশনের সভাপতি। তিনিও প্যারা আরচ্যারির উন্নয়নে চেষ্টা করছেন। সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিতব্য টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের সমস্ত ব্যয়ভার নিয়েছে কেজিএন মেডিকেয়ার লিমিটেড। এই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. সৈয়দা তাসনীম জাহানও উপস্থিত ছিলেন সম্মেলনে। 

প্যারা বাংলাদেশ দল :
রিকার্ভ– খোরশেদ আলম,আল আমিন ও রুপালী আক্তার।
কম্পাউন্ড– ঝুমা আক্তার
প্রধান কোচ– নিশীথ দাস 
কোচ– হযরত আলী।

এজেড/এএইচএস