আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জিমন্যাস্টিক্স জনপ্রিয় এবং গুরুত্বপূর্ণ খেলা হলেও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট একটু ভিন্ন। সম্ভাবনাময় এই খেলার সঙ্গে জনসম্পৃক্ততা একটু কমই। তাই বাংলাদেশ জিমন্যাস্টিক্স ফেডারেশন স্কুল পর্যায়ে জিমন্যাস্টিক্স প্রতিযোগিতা আয়োজন করছে প্রথমবারের মতো।

দিনাজপুর থেকে উঠে এসেছেন কিংবদন্তি জিমন্যাস্ট রওশন আক্তার ছবি। সেই জেলা থেকেই এবার স্কুল জিমন্যাস্টিকসে এসেছে ৩২ জন জিমন্যাস্টস। এদের মধ্যে ৬টা পদক জিতেছে স্কুলটি। দিনাজপুর কালেক্টরেট হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ঢাকায় এসেছে তাসকিন আহমেদ। পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র ফ্লোর এক্সারসাইজে প্রথম হওয়ার পর উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেন এভাবে, 'এখানে খেলতে এসে খুবই ভালো লাগছে। আমার আনন্দ আরও বেড়ে গেছে যখন মেডেলটি পেয়েছি।'

জ্যোতি সাহার মেয়ে নবনীতা সাহা পড়ছে ভিকারুন নিসা নূন স্কুলের পঞ্চম শ্রেণীতে। মোবাইল ফোন, ভিডিও গেমসসহ বিভিন্ন ডিজিটাল প্লাাটফর্মের আসক্তি ছেড়ে মেয়েকে জিমন্যাস্টিকসে দিতে পেরে আনন্দিত তিনি, 'এই প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, কম্পিউটার, ইউটিউবে আসক্ত হয়ে পড়ছে। কিন্তু এসব নেশা থেকে দূরে রাখতে আমি মেয়েকে জিমন্যাস্টিকসে এনেছি। সে এখানে সময় যেমন কাটাতে পারছে, খেলাধুলার মাধ্যমে শরীরও ফিট রাখতে পারছে। এটা অনেক ইতিবাচক দিক আমাদের জন্য।'

জিমন্যাস্টিকস খেলাটি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য কাজ করে চলেছে বাংলাদেশ জিমন্যাস্টিকস ফেডারেশন। ফেডারেশনের সভাপতি শেখ বশির আহমেদ মামুন দেশে জিমন্যাস্টিকসের নতুন প্রতিভা খোঁজার অন্যতম উদ্যোগ হিসেবে দেখছেন এই আয়োজন। সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান বলেন, 'সভাপতিকে পরিকল্পনা জানাতেই তিনি নানা ভাবে সহযোগিতা করেছেন। সারা দেশ থেকে আসা প্রচুর জিমন্যাস্টের আবাসান ও যাতায়াতের ব্যবস্থা করেছে ফেডারেশন। আমাদের কোরিয়ান কোচ নতুন প্রতিভাবান জিমন্যাস্ট বাছাই করে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে।'

আজ মঙ্গলবার দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়েছে বঙ্গবন্ধু ১ম আন্তঃস্কুল জিমন্যাস্টিক্স প্রতিযোগিতা। এতে অংশ নিয়েছে সারা বাংলাদেশ থেকে আসা ৫৬টি স্কুলের ২৫০ জন জিমন্যাস্টস। অংশগ্রহণকারী সবার জন্য ছিল সনদ। সকালে প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরিচালক (ক্রীড়া) এসএম শাহ হাবিবুর রহমান হাকিম। বিকেলে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন বাংলাদেশ মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি মাহবুব আরা গিনি। এ সময় ফেডারেশনের সভাপতি শেখ বশির আহমেদ মামুন উপস্থিত ছিলেন। প্রতিযোগিতার পৃষ্ঠপোষক ছিল শেলটেক ও ইলেকট্রোমার্ট।

এজেড/এইচজেএস