আমি কি আর অলিম্পিয়াড খেলতে পারব : রাণী হামিদ
দাবা তো বটেই, দেশের ক্রীড়াঙ্গনে অন্যতম কিংবদন্তি রাণী হামিদ। ৮১ বছর বয়সেও তিনি দাবা খেলে চলছেন। এই বয়সেও তরুণ-তরুণীদের সঙ্গে দেশে ও বাইরে লড়ছেন এই প্রবীণ দাবাড়ু। আজ (শুক্রবার) জাতীয় মহিলা দাবায় ছিল পঞ্চম স্থান নির্ধারণী প্লে-অফ। যেখানে নৌবাহিনীর মহিলা ক্যান্ডিডেট মাস্টার আহমেদ ওয়ালিজার কাছে হেরে আসন্ন হাঙ্গেরি অলিম্পিয়াডে যাওয়া হচ্ছে না দেশের দাবার রাণীর।
দুই বছর পরপর দাবা অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হয়। এই প্রতিযোগিতায় পুরুষ ও মহিলা উভয় বিভাগেই বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করে আসছে। দুই বিভাগে জাতীয় দাবায় শীর্ষ পাঁচজন দাবাড়ু অলিম্পিয়াডে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেন। জাতীয় মহিলা দাবা গতকাল শেষ হলেও, পঞ্চম স্থানে রাণী হামিদ ও ওয়ালিজা সমান পয়েন্ট থাকায় আজ প্লে-অফ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওয়ালিজা ১.৫-০.৫ গেমে বাংলাদেশ আনসারের মহিলা আন্তর্জাতিক মাস্টার রাণী হামিদকে পরাজিত করে পঞ্চম স্থান লাভ করেন।
বিজ্ঞাপন
বয়স আশি পার হলেও দাবার বোর্ডে হার এখনও বেশ পোড়ায় রাণী হামিদকে। বেশ হতাশ কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘জেতা গেম ছিল। নিজের ভুলে হারলাম। খুব খারাপ লাগছে।’ জাতীয় মহিলা দাবায় সর্বাধিক ২০ বারের চ্যাম্পিয়ন রাণী হামিদ। ১৯৭৯-৮৫ পর্যন্ত টানা চ্যাম্পিয়ন ছিলেন। এবার ৪২তম আসরে তিনি তার স্বাভাবিক খেলাই খেলতে পারেননি। এর কারণ সম্পর্কে বলেন, ‘গরমের মধ্যেই খেলতে হয়েছে। এসি সেভাবে ছিল না। প্রতিপক্ষের কৃতিত্বের চেয়ে আমার ভুলই বেশি।’
বিজ্ঞাপন
আশির দশকে বাংলাদেশের দাবা অলিম্পিয়াডের সূচনালগ্ন থেকেই অংশগ্রহণ করে আসছেন রাণী হামিদ। ২০২০ সালে ডেঙ্গুজ্বরের কারণে বাজে পারফরম্যান্সে সেবার অলিম্পিয়াডে জায়গা করে নিতে পারেননি। এবারও শেষ পর্যন্ত বাদ পড়লেন প্লে-অফে। তাই সামনে আর অলিম্পিকে খেলতে পারবেন কি না এই শঙ্কা ভর করেছে রাণী হামিদের কণ্ঠে, ‘এখন আমার বয়স ৮১। এখনই মাঝেমধ্যে চালে ভুল হয়। নতুনরাও উঠে আসছে। দুই বছর পর তো আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। আমি কি আর অলিম্পিয়াড খেলতে পারব?’
অলিম্পিয়াড খেলাটা কঠিন হলেও আমন্ত্রণমূলক টুর্নামেন্ট খেলতে দেশের বাইরে যাওয়ার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত রাণী হামিদ। সামনে ভারত যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তার, ‘দাবা আমার জানপ্রাণ। দাবা খেলতে ভালোবাসি। অলিম্পিয়াড না হলেও অনেক টুর্নামেন্টে আমি আমন্ত্রণ পাই, সেগুলো খেলব।’
রোল অব অনার
১৯৭৯- আন্তর্জাতিক মহিলা মাস্টার রানী হামিদ
১৯৮০- আন্তর্জাতিক মহিলা মাস্টার রানী হামিদ
১৯৮১- আন্তর্জাতিক মহিলা মাস্টার রানী হামিদ
১৯৮২- আন্তর্জাতিক মহিলা মাস্টার রানী হামিদ
১৯৮৩- আন্তর্জাতিক মহিলা মাস্টার রানী হামিদ
১৯৮৪- আন্তর্জাতিক মহিলা মাস্টার রানী হামিদ
১৯৮৫- ইয়াসমীন বেগম
১৯৮৬- ইয়াসমীন বেগম
১৯৮৮- আন্তর্জাতিক মহিলা মাস্টার রানী হামিদ (১৯৮৭ সালে হয়নি)
১৯৮৯- মহিলা ফিদে মাস্টার সৈয়দা শাবানা পারভীন নীপা
১৯৯০- আন্তর্জাতিক মহিলা মাস্টার রানী হামিদ
১৯৯১- মহিলা ফিদে মাস্টার তনিমা পারভীন
১৯৯২- আন্তর্জাতিক মহিলা মাস্টার রানী হামিদ
১৯৯৩- মহিলা ফিদে মাস্টার জাকিয়া সুলতানা
১৯৯৪- মহিলা ফিদে মাস্টার তনিমা পারভীন
১৯৯৫- মহিলা ফিদে মাস্টার সৈয়দা শাবানা পারভীন নীপা
১৯৯৬- আন্তর্জাতিক মহিলা মাস্টার রানী হামিদ
১৯৯৭- মহিলা ফিদে মাস্টার সৈয়দা শাবানা পারভীন নীপা
১৯৯৮- আন্তর্জাতিক মহিলা মাস্টার রানী হামিদ
১৯৯৯- আন্তর্জাতিক মহিলা মাস্টার রানী হামিদ
২০০০- মহিলা ফিদে মাস্টার নাজরানা খান ইভা
২০০১- আন্তর্জাতিক মহিলা মাস্টার রানী হামিদ
২০০২- মহিলা ফিদে মাস্টার সৈয়দা শাবানা পারভীন নীপা
২০০৩- মহিলা ফিদে মাস্টার সৈয়দা শাবানা পারভীন নীপা
২০০৪- আন্তর্জাতিক মহিলা মাস্টার রানী হামিদ
২০০৫- আন্তর্জাতিক মহিলা মাস্টার শামীমা আক্তার লিজা
২০০৬- আন্তর্জাতিক মহিলা মাস্টার রানী হামিদ
২০০৭- আন্তর্জাতিক মহিলা মাস্টার রানী হামিদ
২০০৮- আন্তর্জাতিক মহিলা মাস্টার রানী হামিদ
২০০৯- মহিলা ফিদে মাস্টার শারমীন সুলতানা শিরিন
২০১০- আন্তর্জাতিক মহিলা মাস্টার শামীমা আক্তার লিজা
২০১১- আন্তর্জাতিক মহিলা মাস্টার রানী হামিদ
২০১২- মহিলা ফিদে মাস্টার শারমীন সুলতানা শিরিন
২০১৪- আন্তর্জাতিক মহিলা মাস্টার শামীমা আক্তার লিজা (২০১৩ সালে হয়নি)
২০১৫- আন্তর্জাতিক মহিলা মাস্টার শামীমা আক্তাার লিজা
২০১৬- মহিলা ফিদে মাস্টার নাজরানা খান ইভা
২০১৭- মহিলা ফিদে মাস্টার শারমীন সুলতানা শিরিন
২০১৮- আন্তর্জাতিক মহিলা মাস্টার রানী হামিদ
২০১৯- আন্তর্জাতিক মহিলা মাস্টার রানী হামিদ
২০২২- মহিলা ফিদে মাস্টার নোশিন আঞ্জুম (২০২০ সালে অনুষ্ঠিত হয়নি)
২০২৪- মহিলা ফিদে মাস্টার নোশিন আঞ্জুম
এজেড/এএইচএস