১০ সেপ্টেম্বর হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে শুরু হবে দাবা অলিম্পিয়াড। জাতীয় দাবা প্রতিযোগিতায় শীর্ষ পাঁচ দাবাড়ু অলিম্পিয়াডের সুযোগ পাবেন। আগামীকাল রোববার থেকে শুরু হচ্ছে জাতীয় দাবার ৪৮তম আসর। সাইফ পাওয়ারটেক এই প্রতিযোগিতার পৃষ্ঠপোষক।

ঘরোয়া দাবার সর্বোচ্চ আসর জাতীয় দাবা প্রতিযোগিতা। গত বছর এটি অনুষ্ঠিত হয়নি। এক বছর পর আগামীকাল আবার শুরু হচ্ছে। আজ দাবা ফেডারেশনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাব উদ্দিন শামীম এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘গত বছর আমরা জাতীয় দাবা আয়োজন করতে পারিনি। এর পেছনে আর্থিক সংকট, ফেডারেশন ও জাতীয় নির্বাচন সহ নানা কারণ ছিল।’

পাঁচ গ্র্যান্ডমাস্টার ছাড়া বাকিদের বাছাই খেলে জাতীয় দাবায় জায়গা করে নিতে হয়। এক সময় ছিল গ্র্যান্ডমাস্টাররাই ছিলেন শীর্ষ রেটিংধারী। সাম্প্রতিক সময়ে ফিদে মাস্টার ও আন্তর্জাতিক মাস্টারের রেটিং গ্র্যান্ডমাস্টারদের চেয়েও বেশি। দাবা অঙ্গনে আলোচনা রয়েছে পদ্ধতি পরিবর্তনের। আজ সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি উথাপিত হলে সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সময়ের প্রেক্ষাপটে এখন বিষয়টি আলোচনার। সময়ের প্রয়োজন নিয়ম হয় আবার সময়ের জন্যই পরিবর্তন হয়। এই বিষয়টি আমরা পরবর্তীতে পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব।’

এক বছর পর জাতীয় দাবা শুরু হলেও দাবাড়ুদের জন্য অবশ্য আশাব্যাঞ্জক বার্তা নেই। গত আসরের প্রাইজমানি এখনো বকেয়া। শুরু হতে যাওয়া আসরের প্রাইজমানি বিগত টুর্নামেন্ট থেকে অর্ধেকের প্রস্তাব এসেছে ফেডারেশনের সর্বশেষ নির্বাহী কমিটির সভায়। সেই সভায় এমনও আলোচনা হয়েছিল, দাবাড়ুদের অংশগ্রহণ ফি’ও অর্ধেক করার। যদিও সেটি শেষ পর্যন্ত আগের আসরের সমানই থাকছে শেষ পর্যন্ত। ফেডারেশন কর্তাদের এমন আলোচনায় অবশ্য দাবাড়ু–রা আশাহত। 

আগামীকাল থেকে ওপেন জাতীয় দাবা শুরু হলেও মহিলা দাবা চ্যাম্পিয়নশীপ সমাপ্ত হয়েছে। সেই টুর্নামেন্টের শীর্ষ পাঁচ নারী দাবাড়ু–ও অলিম্পিয়াডে খেলবেন। সেপ্টেম্বর অলিম্পিয়াডের আগে কাজাখস্তানের এক গ্র্যান্ডমাস্টার বাংলাদেশে এসে প্রশিক্ষণ করানোর কথা ছিল। 

তবে সেটি আর হচ্ছে না বলে জানালেন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক, ‘কাজাখস্তান দাবা ফেডারেশনের আমাদের সহযোগী বন্ধু হিসেবে অলিম্পিয়াডের আগে একজন কোচ দিতে চেয়েছিল অনুশীলনের জন্য। যাকে ঠিক করেছে কাজাখস্তান ফেডারেশন তিনি ইংরেজীতে একেবারেই দুর্বল। ফেডারেশন তার বিকল্প হিসেবে অন্য কাউকে খুঁজছে কিন্তু পাচ্ছে না। অলিম্পিয়াডের আগে বিদেশি কোচ আর আসছে না।’

কাজাখস্তান থেকে কোচ না পেলেও অলিম্পিয়াডের প্রস্তুতি শীঘ্রই শুরু করবে বাংলাদেশ। জাতীয় দাবা চ্যাম্পিয়নশীপ শেষ হওয়ার পরপরই নারী দাবাড়ু–দের দুই গ্র্যান্ডমাস্টার এনামুল হোসেন রাজীব ও জিয়াউর রহমানের অধীনে অনুশীলন করবেন। কাজাখস্তানের কাছ থেকে কোচ না পেলেও এর বিপরীতে বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশন আর্থিক সহায়তা নেয়ার পরিকল্পনা করছে। 

অলিম্পিয়াডের আগে ইংল্যান্ডে একটি টুর্নামেন্টে খেলার আমন্ত্রণ রয়েছে। সেখানে গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়া, তার ছেলে ফিদে মাস্টার তাহসিন তাজওয়ার, আন্তর্জাতিক মাস্টার ফাহাদ রহমান ও ফিদে মাস্টার মনন রেজা নীড়ের অংশগ্রহণের সম্ভাবনা আছে। জাতীয় দাবার ফলাফলের উপর অংশগ্রহণকারী পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা।

গত বারের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন গ্র্যান্ডমাস্টার এনামুল হোসেন রাজীব। এবার বিগত আসরের চ্যাম্পিয়ন সহ আরো দুই গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমান, নিয়াজ মোর্শেদ অংশ নিচ্ছেন। বাছাই থেকে অন্য ১১ জন দাবাড়ু হলেন- ফাহাদ রহমান, মনন রেজা নীড়, আবু সুফিয়ান শাকিল, দেবরাজ চ্যাটার্জী, মিনহাজ উদ্দিন সাগর, শেখ নাসির, খন্দকার আমিনুল ইসলাম, তাহসিন তাজওয়ার জিয়া,অনত চৌধুরী, নাইম হক, অমিত বিক্রম চৌধুরী। গ্র্যান্ডমাস্টার রাকিব ব্যক্তিগত এবং রিফাত বিন সাত্তার পেশাগত ব্যস্ততায় জাতীয় দাবায় খেলছেন না। 

এজেড/জেএ