সাঁতারু তৈরির কারিগর মাসুদ
৩৭তম জাতীয় বয়সভিত্তিক সাঁতার প্রতিযোগিতায় সব মিলিয়ে ১৫ জন সাঁতারু ঢাকায় এনেছেন মাসুদ রানা। বগুড়ার সাত মাথা পার্ক পুকুরে এক দল সাঁতারু নিয়ে সারা বছর অনুশীলন করান মাসুদ রানা। বগুড়া শহরের সাতমাথা গোয়াল রোডে এক সময় জ্বালানী তেল বিক্রি করতেন। এখন অবশ্য সেই ব্যবসা ছেড়ে পুরো সময় সাঁতারু তৈরির পেছনে দেন।
১৯৮৮ সাল থেকে সাঁতারের কোচিং করান তিনি। এর আগে সাঁতারু ছিলেন। তবে সাফল্য অনেক পরে এসেছে, '২০১৭ সাল থেকে আমার সাঁতারুরা সোনা জেতা শুরু করে। এ পর্যন্ত দুই বার সেরা সাঁতারুর পুরস্কার পেয়েছে আমার সাঁতারু।'
বিজ্ঞাপন
বয়সভিত্তিক সাঁতারে নিজের ও বিভিন্ন ক্লাবে এ পর্যন্ত ১০৪টি সোনা জিতেছেন মাসুদ রানার হাতে গড়া সাঁতারুরা। তিনি সাঁতারুদের অনুশীলনের জন্য কোনও টাকা পয়সা নেন না। 'আমি সাঁতার শেখাতে কারও কাছ থেকে কোনও টাকা পয়সা নিই না। আমি মৃত্যু পর্যন্ত এটাই করে যাব। বড় টিমকে অনেক সোনার পদক দিয়েছি। ২২ রেকর্ড সহ এ পর্যন্ত ১০৪টি সোনা জিতেছে আমার ছেলে মেয়েরা', বেশ তৃপ্তি নিয়ে বলেন মাসুদ।
সব মিলিয়ে প্রায় ১২ হাজার সাঁতারু তৈরি করেছেন মাসুদ রানা। তথ্যটি জানিয়ে গর্বের সঙ্গে বলেন, 'আমার হাত দিয়ে এ পর্যন্ত বয়সভিত্তিক ও সিনিয়র জাতীয় সাঁতারে সব মিলিয়ে ১২,২৩৭ জনকে রেজিস্ট্রেশন করিয়েছি। অনেককে সাঁতারে এনেছি নিজ উদ্যোগে জেলা ক্রীড়া সংস্থারও সহযোগিতা নেইনি।'
বিজ্ঞাপন
এসএ গেমসে সোনাজয়ী মাহফুজা খাতুন শিলার রেকর্ড ভেঙেছেন তার হাতেগড়া সাঁতারু মরিয়ম খাতুন। এছাড়া বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌ বাহিনী, বাংলাদেশ বিমান ও আনসারে কর্মসংস্থান হয়েছে তার শিষ্যদের। মাসুদ রানার এখন একটাই স্বপ্ন, 'যদি আমার কোনও সাঁতারু এসএ গেমসে সোনা জিতত তাহলে আমার এত দিনের কষ্ট স্বার্থক হতো।'
মিরপুর সুইমিং কমপ্লেক্সে পা রাখলেই দেখা যায় মাসুদ রানা ও নীলুফার ইয়াসমিন দম্পতিকে। মাসুদ রানার হাতে থাকে স্টপ ওয়াচ। পুলের এক থেকে অন্য প্রান্তে দৌড়ে বেড়ান সারাক্ষণ। কোন সাঁতারু কত টাইমিং করলো, কোন ক্লাব থেকে পদক জিতল সব তথ্যই মাসুদের নখদর্পণে।
এজেড/এইচজেএস