আন্তর্জাতিক ব্যাডমিন্টনে বাংলাদেশের কোনো জুটি আগে কখনো ফাইনালে উঠতে পারেনি। ইউনেক্স-সানরাইজ টুর্নামেন্টে আল আমিন জুমার-ঊর্মি আক্তার মিশ্র বিভাগে স্বর্ণের লড়াইয়ে ছিল। আজ শনিবার মিশ্র দ্বৈতের ফাইনালে মালয়েশিয়ান জুটির কাছে সরাসরি ২-০ সেটে হেরেছেন তারা। প্রথম সেটে ( ২৭-২১) লড়াই করলেও, পরের সেটে (২১-১৪) আর পেরে ওঠেননি বাংলাদেশের জুটি।

টুর্নামেন্টে দারুণ ছন্দে থাকা উর্মি ও ঝুমার ফাইনালে খানিকটা ছন্দহীন ছিলেন। আজ মালয়েশিয়ান জুটির বিপক্ষে একটি সেটও জিততে পারেনি। ফাইনাল শেষে উর্মি আক্তার পৃষ্ঠপোষকহীনতা ও কম প্রশিক্ষণকে দায়ী করলেন, 'ওদের সঙ্গে আমাদের অনেক পার্থক্য। ওদের ড্রেস দেখলেই বুঝবেন। ওরা বড় বড় স্পন্সর নিয়ে খেলে। আমাদের সেভাবে কোনো স্পন্সর নেই। দীর্ঘ মেয়াদী ট্রেনিংয়ের সুবিধা নেই। আমরাও যদি ওদের মতো সব ধরনের সুবিধা পেতাম, তাহলে আরও অনেকদূর যেতে পারতাম। কারণ ওরাও মানুষ, আমরাও মানুষ।'

বাংলাদেশ কখনো ইউনেক্স-সানরাইজ ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টে ফাইনালে উঠতে পারেনি। উর্মি-জুমারের এই সাফল্যের পেছনে ইন্দোনেশিয়ান কোচকে অবদান দিয়েছেন, 'এসএ গেমস সামনে রেখে আমরা যে তিন মাসের ট্রেনিংয়ে ছিলাম, সেটা অনেক কাজে দিয়েছে। ওই কারণেই এই টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠতে পেরেছি।'

চ্যাম্পিয়ন হওয়ার খুব কাছাকাছি থেকেও হেরেছে বাংলাদেশ। খানিকটা মিশ্র প্রতিক্রিয়া জুমারের, 'প্রথমবারের মতো আমরা কোনো আন্তর্জাতিক ইভেন্টের ফাইনালে উঠতে পেরেছি এটা যেমন আনন্দের, তেমনি চ্যাম্পিয়ন হতে না পেরে একটু তো খারাপ লাগছেই।'

একক, দ্বৈত ও মিশ্র তিন বিভাগেই খেলেছেন জুমার। ফাইনালে চাপ ও ক্লান্তি নিয়ে তার বক্তব্য, 'একক, দ্বৈত এবং মিশ্র দ্বৈত তিন বিভাগেই আমি খেলেছি। আমি কোনো ক্লান্তি অনুভব করেনি, আনন্দ নিয়েই খেলেছি। এবার পারিনি, ভবিষ্যতে অবশ্যই দেশের জন্য স্বর্ণ পদক জিতে আনব।'

রাষ্ট্রীয় শোক দিবসের কারণে ফাইনালে কোনো আনুষ্ঠানিকতা রাখা হয়নি। কালো ব্যাজ ধারণ করে প্রত্যেক শাটলার এবং কোচ-কর্তারা মাঠে যে যার কাজ সম্পন্ন করেছেন। তবে ফাইনালে ওঠার কারণে অর্থ পুরস্কার পেয়েছেন বাংলাদেশের মিশ্র দ্বৈতের তারকা জুটি জুমার-ঊর্মি। বাংলাদেশ ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের সভাপতি হাবিব উল্যা ডন দুজনকে পাঁচশত করে মোট ১ হাজার ডলার অর্থ পুরস্কার দিয়েছেন। একই সঙ্গে শাটলারদের উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য বিদেশী কোচসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা প্রদানেরও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

মিশ্র দ্বৈতের পাশাপাশি আজ আরও চারটি ইভেন্টের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়। পুরুষ এককে দুই ভারতীয়র লড়াইয়ে মেইরাবা মাইসনাম ২১-৭ ও ২১-১২ পয়েন্টে নুমাইর শাইককে পরাজিত করেন। নারী এককে চ্যাম্পিয়ন হন যুক্তরাষ্ট্রের ইসিকা জয়সোয়াল। ভারতের তানভি রেড্ডিকে ২২-২০, ২১-২৩ এবং ২১-১৫ পয়েন্টে পরাজিত করে স্বর্ণ জেতেন ইসিকা।

পুরুষ দ্বৈতের ফাইনালে ভিয়েতনামের ড্যাং খাহ-ট্রান হোং জুটিকে ২১-১৯ ও ২১-১২ পয়েন্টের ব্যবধান হারান ভারতের নিরঞ্জন- রুবান কুমার জুটি। সবশেষ নারী দ্বৈতের ফাইনালে থাইল্যান্ডের পাত্থারিন- সারিসা জানপেং জুটির কাছে মালয়েশিয়ার গ্যান মিন-তান জিং জুটিকে ২১-৭, ২০-২২ ও ২১-১৫ পয়েন্টে পরাজিত করেন।

এজেড/এইচজেএস