কয়েক বছর আগেও পল্টন ময়দানের অবস্থা ছিল যাচ্ছে তাই। সময়ের পরিবর্তনে পরিস্থিতি বদলেছে। পল্টন ময়দানে এখন বিভিন্ন পর্যায়ের খেলাধুলা চলে সব সময়। 

আজকের (বুধবার) সঙ্গে অন্য সব দিনের পল্টন ময়দানের চেহারা একেবারে ভিন্ন। সুন্দর কাবাডি কোর্ট, অসাধারণ লাইটিং, মঞ্চ ও ড্রোন। এক কথায় পল্টন ময়দান রূপ নিয়েছিল অপরূপে। মাঠে সচক্ষে যেমন সুন্দর লাগছিল, টিভি সম্প্রচারে আরও বেশি। 

কাবাডি ফেডারেশনের এমন আয়োজনে মুগ্ধ হয়েছেন বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা, ‘এত সুন্দর পরিবেশে খেলাধুলার আয়োজন সম্ভব সেটা বর্তমান কাবাডি ফেডারেশন দেখিয়েছে। এজন্য তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।’
 
বর্ণিল আয়োজনে শুরু হয়েছে ‘আইজিপি কাপ-২০২১ জাতীয় যুব কাবাডি চ্যাম্পিয়নশিপ’। চূড়ান্ত পর্বে বালক ও বালিকা বিভাগের ১৬টি করে ৩২ দল অংশগ্রহণ করছে। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগে রঙ-বেরঙের বেলুন হাতে খেলোয়াড়রা মার্চপাস্ট করেন। ছিল আতশবাজির রোশনাই ও মনোজ্ঞ ডিসপ্লে।

পুলিশের মহাপরির্দশক ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘৩০ লাখ শহীদের তাজা রক্তের বিনিময়ে আমরা এ ভূখণ্ড পেয়েছি। আমরা স্বাধীনতার ৫০ বছর উদযাপন করছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন পৃথিবীর ৩৬তম অর্থনৈতিক শক্তি। কাবাডি ফেডারেশন যে বিশাল আয়োজন করেছেন, তা দেখে বিস্মিত হয়েছি। আমরা তৃতীয় হতে চাই না, রানার্সআপ হতে চাই না, আমরা চ্যাম্পিয়ন হতে চাই।’

পল্টন ময়দানে চূড়ান্ত পর্বের উদ্বোধন করেন পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ। কাবাডি ফেডারেশনের সভাপতি ও র‌্যাব মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা। 

আঞ্চলিক পর্বে বালক বিভাগে ৫৮ ও বালিকা বিভাগে ৫১ জেলা দল অংশগ্রহণ করেছে। অংশগ্রহণকারী দলগুলোকে আট অঞ্চলে ভাগ করে আয়োজিত হয় প্রাথমিক পর্বের খেলা। বালক বিভাগে ৫৮ জেলার ৪১৭ উপজেলার ৪১৭১ ইউনিয়ন ও বালিকা বিভাগে ৫১ জেলার ৩৯৮ উপজেলার ৩৮৯৭ ইউনিয়ন অংশগ্রহণ করেছে। বালক বিভাগে মোট ৫০ হাজার ৫২ জন ও বালিকা বিভাগে ৪৬ হাজার ৭৬৪ জন খেলোয়াড় এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছে।

এ আয়োজন থেকে বাছাইকৃত খেলোয়াড়দের উন্নত প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হবে। পর্যায়ক্রমে এ দলকে আসন্ন যুব কাবাডি বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুত করা হবে। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত আইজিপি কাপ থেকে বাছাই করা খেলোয়াড়দের দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে সে দলকে ইরানে যুব বিশ্বকাপে পাঠানো হয়েছিল। সে আসরে ব্রোঞ্জ পাওয়া বাংলাদেশ এবার আরও ভাল করতে চায়। 

ফেডারেশনের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘যিনি কাবাডিকে জাতীয় খেলা হিসেবে ঘোষণা করেছেন, সেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি। মহান মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধা জানাচ্ছি, সমবেদনা জানাচ্ছি তাদের পরিবারের প্রতি। জাতীয় খেলাকে তৃণমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে আমরা আইজিপি কাপ জাতীয় যুব কাবাডি প্রতিযোগিতা আয়োজন করে থাকি। এ আয়োজন সফল করতে যারা নিরলসভাবে কাজ করেছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। পৃষ্ঠপোষক হিসেবে যারা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

এজেড/ওএফ