প্রায় দুই দশক পর বাংলাদেশ ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাবেক জাতীয় চ্যাম্পিয়ন কামরুন নাহার ডানা। ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় হলেও গত দুই দশকে তিনি বিভিন্ন ক্রীড়া সংস্থা, সংগঠনে জড়িত ছিলেন। ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেননি। দুই যুগ পর তার নিজ খেলা ব্যাডমিন্টনের ফেডারেশনের নির্বাচনে এসেছেন। আজ বিকেলে আরেক সাবেক জাতীয় চ্যাম্পিয়ন শাটলার জোবায়েদুর রহমান রানা তার প্যানেলে ডানার সহ-সভাপতি মনোনয়নপত্র জমা দেন। 

এত দিন পর ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের নির্বাচনে আসার কারণ সম্পর্কে ডানা বলেন, ‘ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের কার্যক্রম দেখছিলাম কয়েক বছর। এই ফেডারেশন ঠিকভাবে চলছিল না। নিজের তাগিদ থেকেই নির্বাচনে আসা। গত বিশ বছর যাবৎ-ই আমি ব্যাডমিন্টনের কাউন্সিলর। কখনো নির্বাচন করিনি। এবার নির্বাচনে আসলাম ব্যাডমিন্টনের সামগ্রিক পরিস্থিতি এবং অন্য কোনো সংস্থায় আমি সক্রিয় দায়িত্বে না থাকায় এখানে সময় দিতে পারব এজন্যও।’

বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে অনেক নারী ক্রীড়াবিদ অংশ নিলেও সংগঠক হিসেবে এসেছেন অল্প কয়েকজনই। কামরুন নাহার ডানা এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তিনি প্রায় চার দশক যাবৎ ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে কাজ করছেন। বিশেষ করে ক্রীড়াঙ্গনে নারী অধিকার রক্ষায় তিনি সব সময় সোচ্চার। জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারও পেয়েছেন ক্রীড়াবিদ ও সংগঠক হিসেবে। 

ডানার সাংগঠনিক ক্যারিয়ার মোহামেডান ক্লাব ও ব্যাডমিন্টন ফেডারেশন দিয়ে শুরু হলেও গত দুই দশকে তিনি বিভিন্ন ক্রীড়া ফেডারেশন ও সংস্থায় অনেক পদে ছিলেন। মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনের নির্বাহী সদস্য, হ্যান্ডবল ফেডারেশনের সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের নির্বাহী সদস্য, দেশের ঐতিহ্যবাহী ক্লাব মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের পরিচালক, স্পেশাল অলিম্পিকসের সদস্য হিসেবে ছিলেন এই কৃতি ক্রীড়াবিদ।

গত বিশ বছরের বেশি সময় ব্যাডমিন্টনের কমিটি থেকে দূরে থাকলেও আশি-নব্বইয়ের দশকে ব্যাডমিন্টনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন ডানা। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে কোনো ফেডারেশনে প্রথম নারী সাধারণ সম্পাদকের নির্বাচন করার রেকর্ডও এই ডানার, ‘মোহামেডান ক্লাবে খেলোয়াড় থাকাবস্থায় ক্লাবের দলগঠন সহ বিভিন্ন বিষয় দেখতাম। এরপর ফেডারেশনে আসি। ফেডারেশনে ১৯৮৬-৯৭ পর্যন্ত বিভিন্ন পদে ছিলাম। যুগ্ম সম্পাদকও ছিলাম অনেক দিন। আমার সাধারণ সম্পাদক হওয়ার কথা ছিল। শেষ পর্যন্ত অ্যাডহক কমিটি করা হয়। সেখানে সহ-সভাপতি করে আমাকে। এরপর নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক করেছিলাম। শেষ পর্যন্ত আমি অল্প ভোটে হারি।’

প্রায় দুই যুগ পর নির্বাচন করছেন ডানা। এবারের নির্বাচন অনেক মেরুকরণের। ফোরাম সমর্থিত একটি প্যানেল থেকে কয়েকজন সহ-সভাপতি প্রার্থী রয়েছেন। আবার জোবায়ের রহমান রানার প্যানেলেও সহ-সভাপতি রয়েছেন কয়েকজন। চার সহ-সভাপতি পদের বিপরীতে ততোধিক প্রার্থী রয়েছেন। আবার অনেকে সমঝোতায় প্রত্যাহারও করবেন। নির্বাচন সম্পর্কে তার বক্তব্য, ‘ফেডারেশনগুলোর মূল পদ সাধারণ সম্পাদক। এখানে রানা সবচেয়ে যোগ্য ব্যক্তি। ক্রীড়াঙ্গনের চালিকা শক্তি যোগ্যদের হাতেই থাকা উচিত। এখন পর্যন্ত নির্বাচন করার লক্ষ্যেই রয়েছি।’ 

এজেড/এনইউ