ব্যাডমিন্টন কোর্ট নিরুত্তাপ থাকলেও ফেডারেশনের নির্বাচন নিয়ে সরগরম। আজ ছিল নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার দিন। বিকেলে দুইটি প্যানেল আলাদাভাবে তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে। ২৪ কার্যনির্বাহী সদস্যের বিপরীতে ৪৯টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। 

এক সপ্তাহের বেশি সময় চেষ্টা করেও সমঝোতার একক প্যানেল তৈরী করতে পারেনি ক্রীড়া সংগঠক পরিষদ। ফুটবল, ক্রিকেট বাদে অন্য ফেডারেশনগুলোর নির্বাচনে আকষর্ণ থাকে সাধারণ সম্পাদক পদ ঘিরে। সাধারণ সম্পাদকে ফেনীর বাহার, বরগুনার আলমগীর ও সাবেক জাতীয় ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক জোবায়েদুর রহমান রানার মধ্যে একজনকে সাধারণ সম্পাদক করে একক প্যানেলের চেষ্টা করেছিল সংগঠক পরিষদ। 

নেত্রকোণার কামরুন্নেছা আশরাফ দিনা ও বর্তমান অ্যাডহক কমিটির সাধারণ সম্পাদক কবিরুল ইসলাম শিকদার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচনে শেষ মুহূর্তে বেশ সক্রিয় হন। শীর্ষ পর্যায়ের মন্ত্রীর শরণাপন্ন হয়েছিলেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। বহুমুখী সমীকরণ ও চাপে সংগঠক পরিষদ ব্যর্থ হয়ে উন্মুক্ত নির্বাচনের দিকে হেটেছে। 

সাধারণ সম্পাদকে আজ পাঁচটি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। এর মধ্যে জোবায়েদুর রহমান রানা, দিনা ও আলমগীর সাধারণ সম্পাদকের পাশাপাশি সহ-সভাপতি পদেও মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। ফোরামের প্যানেলে বাহার ও বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক কবীরুল ইসলাম শিকদার শুধুমাত্র সাধারণ সম্পাদকেই ফরম জমা দিয়েছেন।

মনোনয়ন পত্র জমা দেয়ার সময় নাটকীয় ঘটনা ঘটেছে। জোবায়েদুর রহমান রানা তার প্যানেল সহ জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে এসে ১৮ জনের ২২ টি ফরম জমা দেন। রানার প্যানেল জমা দেয়ার পর ফোরাম নির্বাচন কমিশনে প্রবেশ করে। তারা ২৫ টি ফরম জমা দিয়ে স্থান ত্যাগ করে। কামরুন্নেছা আশরাফ দিনা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে এসেছিলেন ফোরামের সঙ্গেই। তার দু’টি ফরম (সাধারণ সম্পাদক ও সহ-সভাপতি) ফোরামকে দিয়েছিলেন। ফোরাম তাদের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আলমগীরের ফরম দুইটি পদে জমা দিলেও দিনার শুধু সহ-সভাপতি ফরম জমা দেয়। পরবর্তীতে আধ ঘণ্টা সময় ব্যয় করে ফোরামের কাছ থেকে দিনা তার সাধারণ সম্পাদকের ফরম উদ্ধার করে জমা দেন। আরেক সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী কবীর শিকদার একা এসে তার ফরমটি জমা দিয়ে যান। 

২৬ জানুয়ারি মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন। একাধিক পদে মনোনয়নের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩-৪ জনে। এই কয়েক দিন আবার বিভিন্ন মেরুকরণ ও সমঝোতা চলবে। ২৬ জানুয়ারি প্রত্যাহারের পর চূড়ান্ত প্রার্থীতা পাওয়া যাবে। তবে এখন পর্যন্ত নির্বাচনী অঙ্কে সাধারণ সম্পাদক পদে মূলত লড়াইটা রানা বনাম ফোরামের। ফোরাম শেষ পর্যন্ত বাহার নাকি আলমগীরকে প্রার্থী করে সেটি এখনো চূড়ান্ত করতে পারেনি। দিনা তাদের প্রার্থী নন সেটা মনোনয়ন জমা দেয়ার সময়ই স্পষ্ট। আরেক প্রার্থী কবীরের প্রস্তাবক-সমর্থক খুজে পেতে কষ্ট হয়েছে বলে জানা গেছে।

ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনে ১০২ জন কাউন্সিলর। এর মধ্যে ৭০ কাউন্সিলরের জেলা ও বিভাগের। জেলা ও বিভাগীয় সংগঠক পরিষদের উপরই মূলত নির্বাচনের ফলাফল নির্ভর করবে। জেলা-বিভাগের প্রার্থীর চেয়ে প্রতিটি মানদণ্ডে এগিয়ে জোবায়েদুর রহমান রানা। নির্বাচনের চাবিকাঠি ফোরামের হাতে থাকলেও ব্যাডমিন্টনে পরিবর্তন আনতে আশাবাদী এই কৃতি খেলোয়াড় ও সংগঠক, ‘একটি সমঝোতার প্যানেল হলে ভালো হতো। চেষ্টাও হয়েছে নানাভাবে। শেষ পর্যন্ত হয়নি। ব্যাডমিন্টনে পরিবর্তন ও উন্নয়ন আনতে আবার দায়িত্ব নিতে আগ্রহী হলাম।’ 

রানাকে সহ-সভাপতি করে তার পছন্দের ব্যক্তিকে পাঁচ-ছয়টি পদ দিয়ে একটি একক প্যানেল করার চেষ্টা করেছিল ফোরাম। যেটা রানা মেনে নেননি। আবার শুধু রানাকে সেক্রেটারি সমর্থন দেয়ার বিষয়টি মৃদু ভাবলেও তখন রানার কোনো ব্যক্তি কমিটিতে রাখতে চায়নি ফোরাম। 

ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের নির্বাচনে ২৪ কার্যনির্বাহী কমিটির মধ্যে সহ-সভাপতি চারটি, সাধারণ সম্পাদক একটি, যুগ্ম সম্পাদক দুইটি, কোষাধ্যক্ষ একটি ও সদস্য ১৬টি পদ রয়েছে। সভাপতি সরকার কর্তৃক মনোনীত হন। ৩১ জানুয়ারি দেশের অন্যতম শীর্ষ এই ফেডারশেনের ভোটাভুটির দিনক্ষণ।
 
এজেড/এনইউ