টেনিস বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় খেলা হলেও বাংলাদেশে এর প্রচার-প্রসার সেভাবে নেই। পৃষ্ঠপোষকতার সংকটও ব্যাপক। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক মাস্টার্স টেনিস টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই টুর্নামেন্টের পৃষ্ঠপোষকতা করছে বিসিবি। 

নাজমুল হাসান পাপন যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী, পাশাপাশি তিনি বিসিবি সভাপতিও। পাপন ক্রীড়া মন্ত্রী হওয়ার পর তার কাছ থেকে প্রথম পৃষ্ঠপোষকতা পেল টেনিস ফেডারেশন। এই প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘যেহেতু আমার (আমার মাধ্যমে) প্রথম স্পন্সরশিপ এসেছে এই ফেডারেশনে। এটার প্রতি তো অবশ্যই আমাদের নজর থাকবে। না থাকার কোনো কারণ-ই নেই। আমার ধারণা টেনিস সঠিক হাতেই আছে। আমরা সকলে চেষ্টা করি, টেনিস এখন যা আছে তার চেয়ে আরও এগিয়ে নেওয়া সম্ভব।’

প্রায় মাস দেড়েক হয় ক্রীড়ামন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছেন পাপন। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি ফেডারেশনের সঙ্গে বসেছেন ক্রীড়াঙ্গনের সর্বোচ্চ এই ব্যক্তি। এর প্রেক্ষিতে ৪-৫টি ডিসিপ্লিনকে তিনি অত্যধিক গুরুত্ব দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। ফুটবল, হকি, শ্যুটিং ও আরচ্যারি— সেই তালিকায় রয়েছে অনেকটাই স্পষ্ট। পঞ্চম কোনটি এই প্রসঙ্গে আজ প্রশ্ন করা হলে মন্ত্রী বলেন, ‘যতগুলো দেখা হয়েছে এর মধ্যে চারটা রয়েছে। যারা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভালো করতে পারে। এখনও অনেক ফেডারেশন বাকি রয়েছে। তাদের অবস্থা ও সমস্যা জানব সামনে। এরপর আমরা কি করতে পারব সেটাও দেখব। তখন সেই তালিকায় আরও কিছু খেলা যোগ হবে।’

সেই সম্ভাবনার তালিকায় জাতীয় খেলা কাবাডিকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন নতুন মন্ত্রী। টেনিস কমপ্লেক্সে দাঁড়িয়ে কাবাডির কথা তিনি বিশেষভাবে বলেছেন, ‘কাবাডিতে আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এটি ব্যাপকভাবে ছড়ানো উচিৎ। সব খেলায় যে আন্তর্জাতিকভাবে ভালো করতে হবে তাই নয়। কাবাডি দেশীয় খেলা। কাবাডিকে আরও জনপ্রিয় করতে হবে। কাবাডি জনপ্রিয় হলে, আন্তর্জাতিকভাবে ভালো না করার কোনো সুযোগ নেই।’

দেশের অনেক জেলায় টেনিস কোর্ট রয়েছে। সেগুলো অবশ্য খেলার জন্য উন্মুক্ত নয়। সংসদীয় কমিটির একটা সুপারিশ ছিল টেনিস কোর্ট উন্মুক্তকরণ নিয়ে। এই প্রসঙ্গে ক্রীড়ামন্ত্রী বলেন, ‘এটা আমি জানি না। তবে এর চেয়ে ভালো উদ্যোগ আর হতে পারে না। টেনিস কোর্ট আছে, অথচ মানুষ খেলতে পারছে না, টেনিস শিখবে কিভাবে। রাজশাহী, সিলেটসহ অনেক জেলায় টেনিস কোর্ট রয়েছে। সিনিয়ররা এবং সরকারের অনেক কর্মকর্তা কিন্তু টেনিস খেলে। যখন তারা খেলে না, সেই সময়টা তো ছেড়ে দিতেই পারে। এতে কোনো সমস্যা দেখি না। এটা করতে পারলে ভালো উদ্যোগ হবে।’

দেশের অনেক স্টেডিয়ামই জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত নয়। ফলে অনেক জেলা শহরে শিশু-কিশোররা মাঠে যাওয়া থেকে বঞ্চিত। মন্ত্রী হয়ে তাই ‘‘স্টেডিয়াম নয়, খেলার মাঠ চাই’’ স্লোগানে বিশ্বাসী পাপন, ‘আমি একটা কথা প্রায়ই বলি। আমার এলাকায় মাঠ ছিল। যেখানে বিকেল হলে শয়ে শয়ে বাচ্চারা খেলত। কেউ ক্রিকেট, কেউ ফুটবল। এখন স্টেডিয়াম হওয়ার পর তালা। খেলার মাঠও নেই। বাচ্চারা খেলতে পারছে না। তাই আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বলছি স্টেডিয়াম নয়, খেলার মাঠ চাই।’

এজেড/এএইচএস