প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে ৭০ জন ফ্রিল্যান্সার শিগগিরই স্বীকৃতি পাবেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ফ্রিল্যান্সার ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান ডা. তানজিবা রহমান।

বুধবার (১১ মে) নগরীর বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) মাল্টি পারপাস হলে অনুষ্ঠিত `আইসিটি ফ্রিল্যান্সিং ইন বাংলাদেশ: প্রেজেন্ট স্ট্যাটাস, চ্যালেঞ্জিং অ্যান্ড অপরচুনিটি’ শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনে তিনি এ কথা জানান। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আওতাধীন জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এনএসডিএ) এ সেমিনারের আয়োজন করে।

তিনি বলেন, ফ্রিল্যান্সারদের মধ্যে ৭০ শতাংশ তরুণ। এটা কাজে লাগাতে চাই। আমাদের ৭৫ শতাংশ বেকার তরুণ আছে, তাদের মধ্যে ৪০ শতাংশ যদি ফ্রিল্যান্সিং করেন তাহলে দেশ আরও এগিয়ে যাবে। গ্লোবাল মার্কেটিং সাইজ দিন দিন বাড়ছে। আমাদের তরুণদের এটাতে ভাগ বসাতে হবে। গ্লোবাল মার্কেটে আমাদের পদচারণা বাড়াতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা খুব কমন স্কিলে কাজ করি। যে স্কিলে কাজ করার দরকার সেগুলো করছি না। খুব শিগগিরই ৭০ জন ফ্রিল্যান্সার আমাদের প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছেন। এটা আমাদের জন্য চমৎকার একটা পাওয়া। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেন নিজের বস নিজেই হতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম বলেন,  ৬৪টি জেলায় শেখ কামাল আইটি সেন্টার হবে। এখানে ফ্রিল্যান্সারদের আলাদা স্পেস বরাদ্দ দেওয়া হবে। প্রতিটা স্কুলে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব দিচ্ছি। তৃণমূল থেকে আইসিটি শিক্ষা এগিয়ে নিচ্ছি। ফ্রিল্যান্সারদের জন্য ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করছি। ফ্রিল্যান্সারদের জন্য একটা পৃথক পলিসি বা গাইড লাইন দরকার। পলিসি সাপোর্ট থাকলে ফ্রিল্যান্সাররা আরও এগিয়ে যাবে। তাদের জন্য একটা কোর্সেরও ব্যবস্থা করেছি।

সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান (সচিব) দুলাল কৃষ্ণ সাহা বলেন, আমি এই প্রতিষ্ঠানে যোগদানের ১৫ দিনের মাথায় নির্দেশনা আসে ফ্রিল্যান্সারদের সনদ দেওয়ার জন্য। আমরা সেই কাজটা এখন এগিয়ে নিচ্ছি। এখন চাইলে ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কাছে সনদের জন্য আবেদন করা যায়। অনেকে এখানে আবেদন করছে এবং সনদ পাচ্ছেন। আমাদের শিক্ষিত বেকার আছে, আমাদের তরুণ জনগোষ্ঠী আছে। এই শক্তি কাজে লাগিয়ে সোনার বাংলা তৈরি হবে।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে দক্ষ জনশক্তির ক্রমবর্ধমান চাহিদা বাংলাদেশের সামনে বিপুল সম্ভাবনা তৈরি করেছে। দেশের বিশাল যুব জনগোষ্ঠীকে বিদ্যমান ও সম্ভাবনাময় পেশাসমূহে উপযুক্ত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে গড়ে তোলার মাধ্যমে তাদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা যায়। দেশের বিপুল জনশক্তির কর্মসংস্থান তৈরিতে ফ্রিল্যান্সিং একটি নতুন দুয়ার উন্মোচন করেছে। বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সাররা প্রতি বছর বড় অংকের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছেন। কিন্তু এ পর্যন্ত ফ্রিল্যান্সিংকে পেশা হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়নি। জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এনএসডিএ) ফ্রিল্যান্সিংকে পেশা হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানসহ এর সামাজিক ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব অনুধাবন করে ফ্রিল্যান্সারদের রেজিস্ট্রেশন ও সনদায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং রেমিট্যান্স বৃদ্ধিসহ ফ্রিল্যান্সারদের সামাজিক ও পেশাগত মর্যাদা বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের জেনারেল ম্যানেজার মো. মেজবাউল হক, বুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

এসআর/এসকেডি