শিক্ষা ব্যবস্থাপনা ও শিক্ষা কার্যক্রমে আইসিটি এবং ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতের লক্ষ্যে কাজ করছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের ইনোভেশন টিম। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ১৬ হাজার ৪২০ শিক্ষকের আইসিটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ১৬ হাজার ৩০০ শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

বৃহস্পতিবার (৯ জুন) জাতীয় সংসদে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপনকালে অর্থমন্ত্রী এ তথ্য জানান।

বাজেট অধিবেশনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, মানসম্পন্ন শিক্ষণ কার্যক্রম ব্যাপকভাবে সম্প্রসারণের লক্ষ্যে টিচার্স পোর্টালে ইতোমধ্যে ৬২ হাজারের বেশি কনটেন্ট তৈরি করা হয়েছে। যার মাধ্যমে শিক্ষকগণ নিজেরাই কনটেন্টের বিষয়ে মানোন্নয়ন ঘটাতে পারছেন। অনলাইনে ভর্তি কার্যক্রম, নিবন্ধন, প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন ও পরীক্ষার ফল প্রকাশের দ্বারা সংশ্লিষ্টদের হয়রানি লাঘব হয়েছে। সনদের ভুল সংশোধন, স্বীকৃতি নবায়ন ও প্রতিনিধি মনোনয়ন কার্যক্রম অনলাইনে সম্পন্ন করা হচ্ছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০১৮-২০১৯ অর্থবছর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বিশেষ অনুদান প্রদানের আবেদন অনলাইনের মাধ্যমে গ্রহণ এবং মোবাইল ব্যাংকিংয়ের  মাধ্যমে অর্থ বিতরণ করা হচ্ছে। দেশের মোট ২০ হাজার ৪৯৯টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১৫ হাজার ৬৭৬টি এবং মোট চার হাজার ২৩৮টি কলেজের মধ্যে ৭০০টি কলেজে অনলাইন ক্লাস চালু হয়েছে।

এছাড়া, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনলাইনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম (জুম, ম্যাসেঞ্জার, ফেসবুক গ্রুপ, ইউটিউব) ব্যবহারের মাধ্যমে ক্লাস রেকর্ডিং করে কিশোর বাতায়ন, শিক্ষক বাতায়ন এবং ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা করছে। কোভিড-১৯ এর সংক্রমণকালে তথ্য প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষার ওপর নির্ভরশীলতা বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

‘কোভিডের অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন’ স্লোগান নিয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ছয় লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছে জাতীয় সংসদে। নতুন এ বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। এতে মূল্যস্ফীতি ধরা হচ্ছে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ।

এবারের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের তুলনায় ৭৪ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা বেশি। আর সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৮৪ হাজার ৫৬৪ কোটি টাকা বেশি। আগামী অর্থবছরের বাজেটে বড় ব্যয়ের বাজেট বাস্তবায়নে সরকারের আয়ের সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা হতে যাচ্ছে চার লাখ ৩৬ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। যেখানে বাজেটে অনুদান ছাড়া ঘাটতির আকার ধরা হয়েছে দুই লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। অনুদানসহ ঘাটতি থাকবে দুই লাখ ৪১ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা।

২০২২-২৩ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে আয়ের সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে চার লাখ ৩৬ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। যা চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরের তুলনায় ৪৪ হাজার ৭৯ কোটি টাকা বেশি।

প্রস্তাবিত বাজেটে সরকারের আয়ের খাতগুলো থেকে কর বাবদ তিন লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা আয় করার পরিকল্পনা করছে সরকার। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে তিন লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা।

নতুন অর্থবছরে এনবিআরকে ৪০ হাজার কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দিচ্ছে সরকার। এর মধ্যে এনবিআর বহির্ভূত কর থেকে আয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া কর ছাড়া আয় ধরা হয়েছে ৪৫ হাজার কোটি। বৈদেশিক অনুদান থেকে আয় ধরা হয়েছে তিন হাজার ২৭১ কোটি টাকা।

এএজে/এমএআর/