উদ্ভাবনী আইডিয়া দিয়ে সেরা উদ্ভাবক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন দেশের সাত জন। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিএএফ শাহীন হলে এসপায়ার টু ইনোভেট-এটুআই-এর আয়োজিত অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ‘ওয়াটার ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ কম্পিটিশন-২০২১’, ‘প্রেগনেন্সি মনিটরিং ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ ২০২২’ এবং ‘লেটার বিল্ডার ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ ২০২২’-এর বিজয়ী উদ্ভাবকদের মাঝে অর্থায়ন করা হয়। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী জনাব মো. তাজুল ইসলাম এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন  তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। সভাপতিত্ব করেন এটুআই-এর প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর। 

পুরস্কার হিসেবে বিজয়ী উদ্ভাবক খালেদ আশরাফকে (ডিজিটাল মাতৃত্ব) ৯০ লাখ, মেহেদী হাসানকে (মা ও নবজাতকের স্বাস্থ্য উন্নয়নে প্রযুক্তির ব্যবহার) ৬০ লাখ, হাসিব উদ্দীনকে (সেন্টিনেল টেকনোলজিস) ৩৩.২০ লাখ, আশিকুর রহমান তানিমকে (ওয়াটার ওয়াইজ থিঙ্ক) ১৮.৫০ লাখ, আহমেদ নাসিফ হোসাইন অয়নকে (এডভান্সড মিটারিং সিস্টেম) ২০ লাখ, মো. খালেদ হাসান মোর্শেদুল বারিকে (ওয়াশ মেট্রিক) ২৮.৩২ লাখ, জনাব এএইচএম রেজওয়ানুল ইসলাম (পানি_ধী) ২৫ লাখ টাকার সিডমানি এবং সার্টিফিকেট তুলে দেওয়া হয়।

প্রতিযোগিতাগুলোয় সারাদেশ থেকে আসা প্রায় হাজারো উদ্ভাবনী আইডিয়া থেকে প্রাথমিক যাচাই-বাছাই, বুটক্যাম্প, গ্রুমিং এবং টেকনিক্যাল ইভালুয়েশন প্যানেলসহ কয়েকটি ধাপের মাধ্যমে বিচারকমণ্ডলী সাতটি আইডিয়াকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেন।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী জনাব মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ রূপকল্প অর্জনে উদ্ভাবনকে প্রাধান্য দেয়ার প্রয়োজন রয়েছে। আমাদের ছোট আয়তনের দেশে জনসংখ্যা অনেক বেশি। এই মানুষগুলোকে উন্নত জীবন দেয়া, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ যে স্মার্ট হবে বা উন্নত করার লক্ষ্যে অনেকগুলো ইস্যু সামনে আনতে হবে। যাতায়াত, শিক্ষা, বিদ্যুৎ, পানিসহ নানান বিষয়ে আরও উন্নয়ন প্রয়োজন। ভবিষ্যতে অসংখ্য ইন্ডাস্ট্রি হবে, বাসা-বাড়ি বাড়বে। বাংলাদেশের সবাইকে উন্নত করতে হলে দেশের অভ্যন্তরীণ সম্পদের পাশাপাশি বিদেশের রিসোর্সকে আহরণ করে নিতে হবে। উন্নত দেশগুলো হাই টেকের দিকে এগিয়ে গেছে। হাইটেক প্রযুক্তির নির্ভর হয়েছে। সে জন্য সে দেশগুলো কম শ্রমের বিনিময়ে তাদের লক্ষ্য পূরণ করছে। এক্ষেত্রে ইন্ডাস্ট্রিলাইজেশনের উদ্ভাবন প্রয়োজন।’
         
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘আমরা সরকারি-বেসরকারি এবং একাডেমিয়ার পার্টনারশিপের ভিত্তিতে নতুন নতুন উদ্ভাবনকে অনুপ্রাণিত করছি। পাশাপাশি সেই উদ্ভাবকের স্বপ্ন বাস্তবায়নের সকল ধরনের সহযোগিতা প্রত্যেকটি ধাপে ধাপে দেয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। আইডিয়া থেকে কমার্শিয়ালাইজেশন কীভাবে করা যায় তা নিয়ে কাজ করছি। আজকের উদ্ভাবকের মধ্যে গর্ভকালীন নারীদের পর্যবেক্ষণ ও পানির ব্যবহার ও সরকারি-বেসরকারি অফিসে ডায়নামিক লেটার তৈরির ক্ষেত্রে উদ্ধাবন দেখতে পাচ্ছি। এই উদ্ভাবনগুলো মানুষের খরচ ও সময় কমিয়ে দেবে। দেশের স্বার্থে সবাইকে একযোগে কাজ করার মানসিকতা তৈরি করতে হবে।’

এটুআই-এর প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দর্শন ছিল অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ গড়া। এই দর্শন নিয়ে কাজ করে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তারই লক্ষ্যে এটুআই ইনোভেশন ফান্ড সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে একটি সেতুবন্ধন করে দেয়, একইসঙ্গে ইন্টারন্যাশনাল সেক্টরকেও যুক্ত করে চলেছে। নতুন নতুন উদ্ভাবনের মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশের যে রূপকল্প তা অর্জনে সর্বদা পাশে থাকবে এটুআই।’

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমআরএএইউ)-এর উপাচার্য এয়ার ভাইস মার্শাল এএসএম ফখরুল ইসলাম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবদুল হামিদ, ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক  প্রকৌশলী তাকসিম এ খান, এটুআই-এর পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী এবং এটুআই ইনোভেশন ফান্ড প্রধান নাঈম আশরাফী উপস্থিত ছিলেন।