প্রবাস জীবন মানেই ব্যস্ততা। পুরো সপ্তাহ কাজ করার পর যতটুকু সময় পাওয়া যায়, সেটাকে উপভোগ করার জন্য আবার তাকিয়ে থাকতে হয় আবহাওয়ার দিকে। ইংল্যান্ডের আবহাওয়ার অবস্থা এই মেঘ, তো এই রৌদ্দুর। এখানে সকালের সূর্যের আলো দেখে সারা দিন কেমন যাবে তা নির্ধারণ করা কঠিন। তাইতো ইংল্যান্ডকে বলা হয় থ্রি ডব্লিউ দেশ। যেখানে ওয়েদার, উইমেন এবং ওয়েলথ এর কোনো নিশ্চয়তা নেই।

এবার মূল কথায় আসি। দিনটি ছিল রোববার। আবহাওয়াটাও ছিল চমৎকার। ইংল্যান্ডে এমন আলো ঝলমলে দিন পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার - বলা চলে অনেক প্রতীক্ষিত ও কাঙ্ক্ষিত। এমন রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে আমি ও রিয়া হুট-হাট করে রেডি হয়ে বের হয়ে গেলাম টেমস নদীর উপর একটা কাঠের ব্রিজ দেখতে।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর ব্রিজটির নির্মাণ শৈলী দেখে আমরা পুলকিত। যুগযুগ ধরে দাঁড়িয়ে থাকা ব্রিজটি এখনো কত শক্ত আর মজবুত তা নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। যখন দেখলাম ব্রিজটির নির্মাণ হয়েছে ১৭৭৩ সালে, তখন আমার মাথা ঘুরতে লাগলো। ভাবতে লাগলাম প্রায় আড়াই শত বছর আগের একটা কাঠের ব্রিজ এখনো কিভাবে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে? অবশ্য ১৯১৩ সালে ব্রিজটি কিছুটা সংস্কার করা হয়েছিল।

কাঠের ব্রিজটির বয়স ২৪৮ বছর

আমি যখন নদীর স্রোত, বাঁধ বেয়ে পড়তে থাকা পানির গর্জন আর ব্রিজটির অপরূপ শৈলী দেখায় লিপ্ত, পাশ থেকে রিয়া বলে উঠলো‘ আমাদের দেশে ইট, রড আর সিমেন্টের ব্রিজ নির্মাণের দুই তিন বছর পর ভেঙে যায় আর এখানে কাঠের ব্রিজ ঠায় দাঁড়িয়ে আছে শত শত বছর ধরে।’

সত্যিই তাই, ইংরেজদের নির্মাণ টেকসই আর আমাদের নির্মাণ ঠুনকো?  তাদের চিন্তা মানবতার জন্য আর আমাদের চিন্তা নিজের পকেট ভারী করার জন্য। তাইতো ইট, রড আর সিমেন্টের ব্রিজে নতুন রং উঠার আগেই ভেঙে পড়ে আমাদের চোখের সামনে!