প্রকাশিত সংবাদ নিয়ে বিমানের প্রতিবাদ ও প্রতিবেদকের বক্তব্য
“ঢাকার যাত্রীদের ১২ ঘন্টা ‘খালিমুখে’ দুবাই বসিয়ে রেখেছে বিমান”— শিরোনামে গত ৮ অক্টোবর ঢাকা পোস্টে প্রকাশিত সংবাদ নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক জনসংযোগ তাহেরা খন্দকার স্বাক্ষরিত প্রতিবাদলিপি গণমাধ্যমটির মেইলে পাঠানো হয়।
প্রতিবাদলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘গত ৮ অক্টোবর ২০২৩ তারিখ বিমানের দুবাই থেকে ঢাকাগামী ফ্লাইট বিজি৩৪৮ দুবাই স্থানীয় সময় রাত ১২টা ৫ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসার শিডিউল থাকলেও শেষ মুহূর্তে টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে ফ্লাইটটি স্থগিত হয় এবং যাত্রীদেরকে ডিসএমবার্ক করা হয়।
আরও উল্লেখ করা হয়, ফ্লাইটে মোট ২৫১ জন সম্মানিত যাত্রী ছিলেন। যাত্রীদেরকে বিমানের চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত গ্র্যান্ড হোটেলে রাখার চেষ্টা করা হয়। তবে পিক সিজনের কারণে হোটেলে সিট খালি না থাকায় এ হোটেলে যাত্রীদেরকে রাখা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে অন্যান্য হোটেলের সঙ্গে যোগাযোগ করে যাত্রীদের মধ্যে যাদের রেসিডেন্স ভিসা আছে এমন ১০১ জনকে পুলম্যান/নোভোটেল হোটেলে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। পরে ১৩ জন যাত্রী এমিরেটসের ফ্লাইটে যাত্রা করেন। ৮ জন যাত্রী যাত্রা বাতিল করে। অবশিষ্ট ১২৯ যাত্রীর মধ্যে কয়েকজনকে মারহাবা লাউঞ্জে প্রেরণ করা হয়। অন্যান্য যাত্রীদেরকে ম্যাক ডোনাল্ডসে লাঞ্চ সরবরাহ করা হয় এবং রাতে ডিনার দেওয়া হয়।
পরবর্তীতে উড়োজাহাজটির ত্রুটি মেরামত করে যাত্রীদেরকে ঢাকায় পৌঁছে দেওয়া হয়। সুতরাং সম্মানিত যাত্রীদেরকে খাবার বা হোটেল সরবরাহ করা হয়নি এমন তথ্য সঠিক নয়।
ঢাকা পোস্ট প্রতিবেদকের বক্তব্য
প্রতিবেদনটি করেছেন ঢাকা পোস্টের প্রধান প্রতিবেদক আদনান রহমান। বিমানের রোববারের দেওয়া বক্তব্য ও মঙ্গলবারের দেওয়া প্রতিবাদকে সাংঘর্ষিক ও বিভ্রান্তিকর বলে উল্লেখ করেন তিনি।
আদনান রহমান জানান, প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করা হয়েছে বাংলাদেশ সময় সকাল ১১টায়। তখন দুবাইয়ের স্থানীয় সময় ছিল সকাল ৯টা। প্রতিবেদক সেসময় ফ্লাইটের ৩জন যাত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। ভুক্তভোগীরা ঢাকা পোস্টকে জানায়, রাতভর দুবাই বিমানবন্দরে বসে ছিলেন তারা। সকাল ৯টা পর্যন্ত বিমানের পক্ষ থেকে খাবার দেওয়া হয়নি, এমনকি বিমানের কেউই তাদের কাছে যায়নি।
আরেক প্রবাসী বলেন, ‘ফ্লাইট ছাড়ার কথা বলে আমাদের বিমানে বসানো হয়েছে। ১ ঘণ্টা বিমানে থাকার পর আমাদের খাওয়ানোর কথা বলে প্লেন থেকে নামানো হয়। আমাদের খাবারের জন্য একজায়গায় যেতে বলা হয়, সেখানে গিয়ে দেখি খাবারের কোনো ব্যবস্থা নেই, আবার বোর্ডিং ব্রিজে ফিরে দেখি ব্রিজের সঙ্গে বিমানও নাই। কেউ কোনো কথা বলছে না, যারা এই ফ্লাইটের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আছেন আমরা তাদের শাস্তি চাই।’
এছাড়া দুবাই বিমানবন্দরের ফ্লোরে প্রচুর সংখ্যক প্রবাসীকে চাদর বিছিয়ে ঘুমিয়ে থাকতে দেখা যায় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এ বিষয়ে ঢাকা পোস্টের পক্ষ থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) তাহেরা খন্দকারের সঙ্গে দুপুর ১২টা ১ মিনিটে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, যাত্রীদের সকালের নাস্তা ও দুপুরের খাবার দেওয়া হয়েছে। তবে হোটেলের সিট না পাওয়ায় তাদের এখনো হোটেলে নেওয়া সম্ভব হয়নি।
তাহেরা খন্দকার যখন ঢাকা পোস্টকে বক্তব্য দেন তখন দুবাইয়ের স্থানীয় সময় ১০টা ৪৩মিনিট। ঢাকা পোস্টের পক্ষ থেকে প্রবাসীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, বিমানের পক্ষ থেকে তাদের লাঞ্চ (দুপুরের খাবার) বা কোনও ধরনের খাবার দেওয়া হয়নি। এমনকি তাদের কোনো হোটেলেও নেওয়া হয়নি।
এআর/এমজে