আন্তর্জাতিক ফ্লাইট ৫ মে পর্যন্ত বন্ধ, চলবে বিশেষ ফ্লাইট
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে দেশে চলমান সরকারি বিধিনিষেধের সাথে সমন্বয় করে আন্তর্জাতিক রুটের নিয়মিত ফ্লাইট ৫ মে পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। তবে অভ্যন্তরীণ রুটের ফ্লাইটগুলো আগের মতোই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে।
তবে প্রবাসীদের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আগের মতোই সাতটি দেশে বিশেষ ব্যবস্থায় ফ্লাইট চলবে। আজ (মঙ্গলবার) এই সিদ্ধান্ত নেয় বেবিচক।
বেবিচক চেয়ারম্যান এম মফিদুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আমরা ফ্লাইট চালুর বিষয়টি নিয়ে এখনও আলোচনা করছি। লকডাউন যেহেতু সাত দিন বৃদ্ধি করা হয়েছে, এ জন্য ফ্লাইট চলাচলের বিধিনিষেধও পরবর্তী সাত দিনের জন্য অব্যাহত থাকবে।
এর আগে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
বেবিচক চেয়ারম্যান আরও বলেন, আমাদের অনেক প্রবাসী ভাই এই ৭ দেশ ছাড়াও অন্যান্য দেশে আটকা পড়ে আছেন। আমরা দেখছি তাদের জন্য কোনো রুট খুলে দেয়া যায় কি-না। এ সংক্রান্ত সার্কুলারে নির্দেশনাগুলো থাকবে।
গত ৫ এপ্রিল থেকে সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধের মধ্যে অভ্যন্তরীণ রুটের ফ্লাইট চলাচল বন্ধ ছিল। পরে ২১ এপ্রিল থেকে সীমিত পরিসরে কক্সবাজার বাদে অন্য রুটে ফ্লাইট চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়। অপরদিকে সর্বাত্মক লকডাউনের কারণে ১৪ এপ্রিল থেকে আন্তর্জাতিক রুটের ফ্লাইটও বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
পরবর্তীতে প্রবাসী শ্রমিকদের আসা-যাওয়া ও ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ১৭ তারিখ থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, ওমান, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর এবং ২৫ তারিখ থেকে কুয়েত, বাহরাইন ও চীনে বিশেষ ফ্লাইট চালুর অনুমতি দেওয়া হয়।
গত বছর বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ার পর ২২ মার্চ থেকে থেকে ১০ রুটের বিমান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। প্রথমে ১০ দিনের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলেও পরবর্তীতে সেটা কয়েক দফা বাড়িয়ে দুইমাস পর্যন্ত আন্তর্জাতিক বিমান যোগাযোগ বন্ধ থাকে।
দেশে করোনার সর্বশেষ পরিস্থিতি
করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ৫ এপ্রিল থেকে মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা শুরু হয়। প্রথম দফায় তা কার্যত ব্যর্থ হয়। পরে ১৪ এপ্রিল থেকে দোকানপাট, শপিংমল, গণপরিবহন বন্ধ রেখে বিধিনিষেধ আরোপ করা। দ্বিতীয় দফায় শুরু হওয়া এ বিধিনিষেধের দু’সপ্তাহের মাথায় এসে এপ্রিলের শুরুর দিকের তুলনায় সংক্রমণ ও মৃত্যু কিছুটা কমেছে।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত আরও ৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ পর্যন্ত করোনায় দেশে মোট মৃত্যু হয়েছে ১১ হাজার ২২৮ জনের। এ সময় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৩১ জন। এতে মোট শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৭ লাখ ৫১ হাজার ৬৫৯ জনে।
এপ্রিলের ১ তারিখ থেকে ১৪ তারিখ পর্যন্ত প্রত্যেকদিনই দৈনিক করোনা সংক্রমণ ৫ হাজারের বেশি ছিল। ১৯ এপ্রিল সর্বোচ্চ ১১২ জনের মৃত্যু হয় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে।
এআর/এনএফ