সাজানো মামলায় ফাঁসানো হয়েছে জবি শিক্ষার্থীদের, দাবি পরিবারের
গত ৩ মার্চ নীলফামারী থেকে ঢাকায় আসেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগে সদ্য ভর্তি হওয়া প্রথম বর্ষের (১৬তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী রওশনুল ফেরদৌস রিফাত। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের জন্য কোনো আবাসিক হল না থাকায় এই শিক্ষার্থী উঠেন বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন একটি ভাড়া মেসে।
গত ২৪ মার্চ ভোরে ‘রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন ও সরকারবিরোধী স্লোগান’ দেওয়ার অভিযোগে কোতোয়ালি থানা পুলিশ মেসটিতে অভিযান চালিয়ে শিবির সন্দেহে তাকেসহ ১২ শিক্ষার্থীকে আটক করে। পরে আদালতের নির্দেশে তাদের তিন দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়।
মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে এসে এই শিক্ষার্থীর পিতা নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মোরশেদুল করিম কল্লোল দাবি করেন, তার ছেলেকে সম্পূর্ণ সাজানো মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির আগে থেকেই তার ছেলে ছাত্রলীগ করতেন। কখনো শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না।
এদিকে ১নং পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ওয়াহেদুন্নবী ও সাধারণ সম্পাদক জাফর আলী এক লিখিত বিবৃতিতে জানিয়েছেন, গ্রেপ্তার হওয়া ওই শিক্ষার্থী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। আলাদা বিবৃতিতে উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক আবু সায়েম সরকারও একই দাবি জানান।
শুধু রিফাতের পরিবার নয়, একই দাবি জানিয়েছেন গ্রেপ্তার হওয়া রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে সদ্য ভর্তি হওয়া আব্দুর রহমান অলির পরিবার। অলির বাবা মো. জাহাঙ্গীর ইসলাম নিজেও একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।
গ্রেফতার ওই শিক্ষার্থীর বড় ভাই আমিনুল ইসলাম বলেন, আমাদের পুরো পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। আমার বাবা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি দেশের হয়ে যুদ্ধ করেছেন। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। অথচ আমার ভাইকে সাজানো মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। আমার ভাইয়ের মুক্তি চাই।
পুলিশের অভিযোগ অনুযায়ী, সরকারবিরোধী শ্লোগান দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে অভিযোগে ১১ শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এ নিয়ে সমালোচনার মুখেও পড়তে হয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে। আদালত জামিন দিলে শিক্ষার্থীরা তাদের ছাত্রত্ব ফিরে পাবেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে সাময়িক বহিষ্কারের আদেশ দেওয়া হয়। যদি আদালত মাধ্যমে তারা নির্দোষ প্রমাণিত হয় তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাদের বহিষ্কারের আদেশ প্রত্যাহার করা হবে।
এমটি/ওএফ