অন্যায় প্রস্তাব না মানায় জবি অধ্যাপককে ছাত্রলীগ কর্মীর হুমকি

অন্যায়প্রস্তাব মেনে না নেওয়ায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শাহ নিস্তার জাহান কবিরকে প্রকাশ্যে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন জবি ছাত্রলীগের এক কর্মী। হুমকিদাতা সাইদুল ইসলাম সাইদ বর্তমানে ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি ও জবি শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি মো. ইব্রাহীম ফরাজীর অনুসারী।
মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) অধ্যাপক ড. শাহ নিন্তার জাহান কবীর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, সোমবার বিকাল ৪ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্ত চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভুক্তভোগী শিক্ষক বাসায় ফিরছিলেন। এসময় তার পথ আটকে সাইদ ওই অধ্যাপককে উচ্চস্বরে প্রশ্ন করেন—তার পছন্দের প্রার্থীকে সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে ডিবেটিং সোসাইটির ভোটের জন্য কেন নিয়োগ দেওয়া হয়নি? এসময় অধ্যাপক নিস্তার জাহান বলেন, প্রতিনিধি মনোনয়নের জন্য আলাদা শিক্ষক রয়েছেন। তারা বাছাই করে বিভাগের ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে প্রতিনিধি হিসেবে দেয়। তার অন্যায় দাবি না মানায় এসময় ওই অধ্যাপকের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পরেন অভিযুক্ত সাইদ।
এক পর্যায়ে সাইদ ওই শিক্ষককে অকথ্য ভাষায় বলেন, ‘আপনার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে। আপনাকে আমি দেখে নেব।’
এসময় সাঈদের কথার প্রতিবাদ করেন একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ইব্রাহীম বিন হারুন। তিনি বলেন, ‘আমি তাকে বলেছি আপনি এভাবে কথা বলতে পারেন না। তখন সে বলে, তাকে বললে আপনার গায়ে লাগে কেন? আমি বললাম, অবশ্যই আমার গায়ে লাগে। আমার সিনিয়র স্যারের সঙ্গে এভাবে কথা বললে কেন আমার গায়ে লাগবে না? আপনার যদি তার সঙ্গে ব্যক্তিগত কথা থেকে থাকে আপনি তাকে পার্সোনালি বলেন, আপনি তাকে এভাবে জুনিয়র শিক্ষকদের সামনে বলতে পারেন না। পরে ফের তিনি দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন।’
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী অধ্যাপক ড. শাজ নিস্তার জাহান কবীর বলেন, ‘সে তার পছন্দের লোককে অবৈধভাবে ডিবেটিং সোসাইটির নির্বাচনে প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়ার জন্য বলেছিল। কিন্তু আমি তার অন্যায় দাবি মেনে নেইনি। পরবর্তীতে আমাকে প্রকাশ্যে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। আমার ডিপার্টমেন্টের সিদ্ধান্ত তো সে নিতে পারে না? বিষয়টি নিয়ে আমি বিব্রত। শিক্ষার্থী হয়ে এভাবে সে একজন শিক্ষকের সঙ্গে আচরণ করতে পারে না।’
অভিযুক্ত সাইদুল ইসলাম সাইদ বলেন, ‘আমার কিছু কথার জন্য স্যার হার্ট ফেইল করেছে। আমি কাল গিয়ে মাফ চেয়ে আসবো। এটা নিয়ে আপাতত কিছু করার দরকার নেই।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘একজন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করা খুবই অন্যায়। অভিযোগ পেলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। সে যেই হোক না কেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে যেই এমন করেছে তার শাস্তি হয়েছে।’
এমএল/এমএসএ