একজন পেলেন সহকারী প্রক্টরের দায়িত্ব, অন্যজন পেলেন না পিএইচডি ছুটি

২০২৪ সালের ১৯ জুলাই রংপুর শহরে ঘটে যাওয়া ছাত্র-জনতার উপর হামলা ও হত্যাচেষ্টার মামলায় দুই শিক্ষক আসামি থাকলেও তাদের প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভিন্নমুখী আচরণ ঘিরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক ও সমালোচনা।
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক শেখ মাজেদুল হক মালয়েশিয়ায় পিএইচডি করতে চান। এজন্য তিনি নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষা ছুটির আবেদন করেন। কিন্তু সম্প্রতি অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় তার ছুটি মঞ্জুর হয়নি।
অন্যদিকে, একই মামলার আরেক আসামি ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মনিরুল ইসলাম নতুন করে সহকারী প্রক্টরের দায়িত্ব পেয়েছেন। এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে উঠেছে প্রশ্ন ও অসন্তোষ।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, অধ্যাপক শেখ মাজেদুল হকের বিরুদ্ধে মামলা থাকায় তার ছুটি মঞ্জুর করা হয়নি। কিন্তু সহকারী প্রক্টরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মনিরুল ইসলামও একই মামলার ১৩৩ নম্বর আসামি। অন্যদিকে শেখ মাজেদুল হক ওই মামলার ৭৩ নম্বর আসামি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. ফেরদৌস রহমানের আস্থাভাজন হিসেবে মনিরুল ইসলামকে এই দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। একই বিভাগের হওয়ায় প্রক্টরের সুপারিশেই তাকে এই পদে নিয়োগ দিয়েছে প্রশাসন।
মামলার বিস্তারিত তথ্য বিশ্লেষণে জানা যায়, রংপুর শহরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় হামলায় আহত মো. শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীসহ মোট ১৪০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।
এজাহার অনুযায়ী, ১৯ জুলাই বিকেল ৩টার দিকে আন্দোলনকারীরা টাউন হল মোড়ে পৌঁছালে আসামিরা হামলা চালায়। এতে শহিদুল ইসলাম গুরুতর আহত হন এবং তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০ দিন ভর্তি রেখে চিকিৎসা দিতে হয়।
এ বিষয়ে অধ্যাপক শেখ মাজেদুল হকের মন্তব্য জানতে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
তবে কেন মামলার এক আসামিকে প্রশাসনিক দায়িত্ব দেওয়া হলো এমন প্রশ্নের জবাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. ফেরদৌস রহমান বলেন, এই মামলাটা ভুয়া। মামলার বাদী বলেছেন, এরা জড়িত না। সে এফিডেভিট দিয়ে দিয়েছে, তাই তাকে সহকারী প্রক্টর রাখা হয়েছে।
রেজিস্ট্রার ড. হারুন অর রশিদ এ বিষয়ে বলেন, প্রক্টর তার সহকারী নিজেই পছন্দ করেন। এই বিষয়ে তিনিই ভালো বলতে পারবেন।
এ ঘটনায় শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, একই মামলায় একজন শিক্ষককে ছুটি না দিয়ে অন্যজনকে প্রশাসনিক দায়িত্ব দেয়া প্রশাসনের দ্বিচারিতার প্রমাণ।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এআরবি