ড্যাফোডিল ও ব্র্যাক ব্যাংকের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো ‘ঐতিহ্যের হাট ২০২৫

বাংলাদেশের ৬৪ জেলার ঐতিহ্য, পণ্য, সংস্কৃতি ও খাদ্যের বৈচিত্র্য এক মঞ্চে প্রদর্শনের মাধ্যমে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে চতুর্থবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো ‘ঐতিহ্যের হাট ২০২৫’।
ডিপার্টমেন্ট অব ইনোভেশন অ্যান্ড এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ এবং ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসির যৌথ উদ্যোগে স্বাধীনতা সম্মেলন কেন্দ্রে দিনব্যাপী এ আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়। এ বছর অনুষ্ঠানটির থিম নির্ধারণ করা হয় ‘ব্র্যান্ডিং বাংলাদেশ’। এর লক্ষ্য ছিল দেশের ঐতিহ্যকে আধুনিক প্রজন্মের কাছে আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করা এবং স্থানীয় উদ্যোক্তাদের জন্য একটি কার্যকর প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর ড. এম. আর. কবির, উপাচার্য, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি; সৈয়দ আবদুল মোমেন, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান, এসএমই ব্যাংকিং, ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি; প্রফেসর মোহাম্মদ মাসুম ইকবাল, উপ-উপাচার্য, ডিআইইউ; ড. হামিদুল হক খান, ট্রেজারার, ডিআইইউ; জাকিরুল ইসলাম, প্রধান, এসএমই স্ট্র্যাটেজি, ইনোভেশন ও নিউ বিজনেস; খাদিজা মারিয়ম, প্রধান, উইমেন এন্ট্রাপ্রেনিউরস সেল; প্রফেসর ড. রকিবুল কবির, ডিন, ফ্যাকাল্টি অব বিজনেস অ্যান্ড এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ, ডিআইইউ; ড. কে. এম. হাসান রিপন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, গ্লোবাল এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ এবং মো. কামরুজ্জামান দিদার, প্রধান, ডিপার্টমেন্ট অব ইনোভেশন অ্যান্ড এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ, ডিআইইউ। এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উদ্যোক্তা, শিল্প খাতের প্রতিনিধি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, এবং বিভিন্ন জেলা থেকে আগত অংশগ্রহণকারী।
গ্লোবাল এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ উইকের অংশ হিসেবে আয়োজিত ইভেন্টটি তরুণদের উদ্যোক্তা মনোভাব, নেতৃত্ব, উদ্ভাবন ও স্বকীয়তাকে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এ বছর জেন বাংলাদেশ সারা দেশে ১০০টিরও বেশি উদ্যোক্তা কেন্দ্রিক ইভেন্ট আয়োজন করছে, যা লক্ষাধিক শিক্ষার্থীকে উদ্যোক্তা ইকোসিস্টেমে যুক্ত করবে।

ইভেন্টে প্রদর্শিত হয়েছে বাংলাদেশের ৬৪ জেলার ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ পণ্য, স্থানীয় খাবার, কারুশিল্প, ফোক সংস্কৃতি এবং ডিআইইউ শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল ব্র্যান্ডিং উপস্থাপনা। তরুণ উদ্যোক্তারা তাদের উদ্ভাবনী পণ্য ও ব্যবসায়িক ধারণা তুলে ধরেন, যা দর্শনার্থীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি করে। প্রচলিত ঐতিহ্য ও আধুনিক ব্র্যান্ডিংয়ের সুন্দর মিশেলে ‘ঐতিহ্যের হাট’ প্রতি বছরই নতুন তরুণ উদ্যোক্তাদের আকর্ষণের কেন্দ্র হয়ে উঠছে।
২০২২ সালে যাত্রা শুরু করার পর থেকে ‘ঐতিহ্যের হাট’ কপিরাইটপ্রাপ্ত হয়ে ডিআইইউর অন্যতম সফল বার্ষিক ফ্ল্যাগশিপ ইভেন্ট হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। দেশের প্রতিটি জেলার অনন্য ঐতিহ্য তুলে ধরার এই উদ্যোগ এখন তরুণ উদ্যোক্তা উন্নয়ন ও সাংস্কৃতিক ব্র্যান্ডিংয়ের একটি শক্তিশালী মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পাচ্ছে।
ড. মো. সবুর খান এ আয়োজনকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ঐতিহ্যের হাট তরুণ প্রজন্মকে দেশের শেকড়ের সাথে সংযুক্ত করে এবং উদ্যোক্তা ক্ষমতায়নের নতুন দ্বার উন্মোচন করে। এটি শুধু একটি প্রদর্শনী নয়, এটি বাংলাদেশের উদ্যোক্তা আন্দোলনের অংশ।
সৈয়দ আবদুল মোমেন বলেন, ব্র্যাক ব্যাংক দীর্ঘদিন ধরে এসএমই উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে কাজ করছে। ঐতিহ্যের হাট স্থানীয় উদ্যোক্তাদের সম্ভাবনাকে তুলে ধরার একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম।
প্রফেসর ড. এম. আর. কবির বলেন, ৬৪ জেলার বৈচিত্র্যময় ঐতিহ্যকে তরুণদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে এ আয়োজন বিশেষ ভূমিকা রাখছে। এটি জাতীয় পর্যায়ে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
প্রফেসর মোহাম্মদ মাসুম ইকবাল বলেন, ঐতিহ্যের হাট আমাদের সংস্কৃতি, শিল্পকলা ও উদ্যোক্তা সম্ভাবনাকে একত্রে তুলে ধরার অসাধারণ উদ্যোগ। নতুন প্রজন্মের অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবেই এটি প্রতিষ্ঠা পাবে।
চতুর্থবারের মতো সফলভাবে আয়োজিত ‘ঐতিহ্যের হাট ২০২৫’ দেশের ঐতিহ্যকে নতুন দৃষ্টিকোণে ব্র্যান্ডিংয়ের পাশাপাশি তরুণদের উদ্যোক্তা শক্তিকে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। আয়োজকদের প্রত্যাশা, আগামী বছরগুলোতে আরও বৃহৎ পরিসরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ঐতিহ্যকে তুলে ধরবে এই ব্র্যান্ড ইভেন্ট।
এসএসএইচ
