ঢাবিকে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলা হবে : উপাচার্য

Dhaka Post Desk

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক, ঢাবি

২৫ জুন ২০২১, ০১:৫৬ এএম


ঢাবিকে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলা হবে : উপাচার্য

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে দ্বিতীয় শতবর্ষের উপযোগী বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন সিনেটের চেয়ারম্যান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।

বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ঢাবি সিনেটের বার্ষিক অধিবেশনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। 

অধিবেশনে ২০২১-২০২২ অর্থবছরের জন্য ৮৩১ কোটি ৭৯ লাখ টাকার রাজস্ব ব্যয় সংবলিত প্রস্তাবিত বাজেট এবং ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের ৭৭৪ কোটি ২৮ লাখ ৪২ হাজার টাকার সংশোধিত বাজেট অনুমোদন করা হয়।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিক নির্দেশনায় প্রথমবারের মতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন করা হয়েছে। এর আওতায় ছাত্রীদের জন্য ‘জয় বাংলা হল’ ও ‘শহিদ এথলেট সুলতানা কামাল হল’ নির্মাণসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। 

এছাড়াও ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব উপযোগী বিশ্ববিদ্যালয় বিনির্মাণ ও দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি’ শীর্ষক প্রতিপাদ্য ধারণ করে বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

উপাচার্য বলেন, শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল সংস্কার ও সম্প্রসারণ, একাডেমিক ও আবাসিক ভবনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক অবকাঠামো উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর অবারিত অবদান ও নজরদারি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত। সম্প্রতি যুগোপযোগী, আধুনিক ও পরিবেশ বান্ধব ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র নির্মাণেও তার অবদান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।

তিনি বলেন, নারীর মর্যাদা, অবদান ও ক্ষমতায়নের গুরুত্ব ও তাৎপর্য পর্যালোচনা করে সমাজকে আলোকিত করা এবং দেশ ও জাতির উন্নয়ন ঘটানোর লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা সেন্টার ফর উইমেন, জেন্ডার অ্যান্ড পলিসি স্টাডিজ’ নামে একটি সেন্টার প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর পিস অ্যান্ড লিবার্টির কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু
হয়েছে।

উপাচার্য আরও বলেন, মৌলিক ও প্রায়োগিক গবেষণার তহবিল গঠন ও গবেষণাগারের আধুনিকায়ন, মল চত্বরের ল্যান্ডস্কেপিংসহ ‘সেন্টিনারি মনুমেন্ট’ তৈরি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশের ওপর মৌলিক গ্রন্থ প্রকাশের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষপূর্তি উদযাপনের বিভিন্ন কর্মসূচি তুলে ধরে উপাচার্য বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২১ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে এসব কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। আগামী ১ নভেম্বর শতবর্ষপূর্তির মূল অনুষ্ঠান এবং মধ্য নভেম্বরে লন্ডন কনফারেন্স আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

Dhaka Post

তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে গত ১ বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তবে অনলাইন ও অফলাইনের সমন্বয়ের মাধ্যমে যাবতীয় শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখা হয়েছে। সেশনজটের ঝুঁকি মোকাবিলায় ‘ক্ষতি পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা’ প্রণয়ন করা হয়েছে। এই দুর্যোগ মোকাবিলায় সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ধৈর্য, সাহস ও সঠিক পরিকল্পনায় সমন্বিত প্রচেষ্টা চালাতে হবে। শিক্ষার সামগ্রিক ব্যবস্থাকে ডিজিটাইজেশনের আওতায় আনতে ‘ইউনিভার্সিটি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ তৈরি করা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

উপাচার্য আরও বলেন, গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক ও প্রায়োগিকভাবে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ‘গ্র্যাজুয়েট প্রমোশন অ্যান্ড স্কিল ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তামুখী বিশ্ববিদ্যালয় তথা বাংলাদেশ তৈরির লক্ষ্যে ইনোভেশন, ক্রিয়েটিভিটি অ্যান্ড এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ সেন্টার (আইসিই) কাজ করে যাচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে একটি জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির গবেষণাগার স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির (আইআইটি) মাধ্যমে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রকল্প প্রস্তাবনা তৈরি করে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রদান করা হয়েছে।

এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ‘আইটি হাব’ তৈরি হবে বলে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, এর মাধ্যমে দেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে সমন্বিত করে জাতীয় উন্নয়নে ভূমিকা রাখার সুযোগ সৃষ্টি হবে। এটি হবে শিক্ষাখাতে বাংলাদেশের পরিবেশবান্ধব সবুজ প্রযুক্তির তৈরি প্রথম ভবন।

অধিবেশনে প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ ও প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বক্তব্য রাখেন। উপাচার্যের অভিভাষণ ও কোষাধ্যক্ষের বাজেট বক্তৃতার ওপর সিনেট সদস্যরা আলোচনা করেন।

এইচআর/ওএফ

Link copied