জবি শিবির সভাপতির মোনাজাতে অঝোরে কাঁদলেন শিক্ষার্থীরা

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের এমপি পদপ্রার্থী, গুলিবিদ্ধ শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর পাওয়ামাত্রই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিকভাবে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিল শেষে অনুষ্ঠিত মোনাজাতে শিক্ষার্থীরা অঝোরে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত ১১টার দিকে ক্যাম্পাস থেকে বিশ্বজিৎ চত্বরে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সভা ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। পরে হাদির রুহের মাগফিরাত কামনায় মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন জবি শাখা শিবিরের সভাপতি রিয়াজুর ইসলাম।
এ সময় শাখা ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি ইভান তাহসিন বলেন, হাদি ভাইয়ের এই মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। হাদির এই হত্যাকাণ্ড গোটা গণঅভ্যুত্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। ইন্টারিম সরকার কেন বিপ্লবীদের নিরাপত্তা দিতে পারল না, তার পূর্ণ দায়ভার তাদেরই নিতে হবে। হাদির হত্যাকারীদের বিচার নিশ্চিত করাই হবে এ সরকারের সবচেয়ে বড় সফলতা।
শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য আতিকুর রহমান তানজিল বলেন, হাদি ভাই আমাদের বিপ্লবের অগ্রপথিক। তাকে কাপুরুষের মতো হত্যা করে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ভেবেছিল, আমরা ভয় পেয়ে ভারতের আধিপত্যবাদ ও খুনি হাসিনার বিরুদ্ধে মুখ বন্ধ রাখব। কিন্তু আজ হাদি মারা গেলেও জুলাই বিপ্লবের পর দেশের ঘরে ঘরে হাদির জন্ম হয়েছে।
শাখা ছাত্রশক্তির আহ্বায়ক ফয়সাল মুরাদ বলেন, এই ইন্টারিম সরকার জুলাই বিপ্লবীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। শুধু হাদি ভাইকে হত্যা করেই সন্ত্রাসীরা ক্ষান্ত হয়নি; হাসনাত আবদুল্লাহসহ দেশের সব বিপ্লবীকেই টার্গেট করা হচ্ছে। অবিলম্বে রাষ্ট্রকে বিপ্লবীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। হাদিকে হত্যা করে ভারত ও পতিত আওয়ামী লীগ ভেবেছিল বিপ্লবীদের ভয় দেখাবে; কিন্তু আজ এক হাদি চলে গেলেও তার উত্তরসূরীরা জেগে উঠেছে।
আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য মাসুদ রানা বলেন, হাদি ভাই আমাদের বিপ্লবের অনুপ্রেরণা এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামের প্রতীক। সন্ত্রাসীরা ভেবেছিল, একজন হাদিকে হত্যা করলে বিপ্লবীদের দমিয়ে রাখা যাবে। কিন্তু হাদি ভাইয়ের মৃত্যুসংবাদ পাওয়ার পর আবারও জুলাইয়ের চেতনা ফিরে এসেছে। জনতা প্রমাণ করছে, খুনি হাসিনা ও ভারতীয় আধিপত্যবাদের এই দেশে কোনো স্থান নেই।
এ সময় জবি ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক নূর মোহাম্মদ বলেন, প্রতি শতাব্দীতে হাদির মতো একজন বিপ্লবীর জন্ম হয়। ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে হাদি যে কঠোর অবস্থান নিয়েছিল, গণঅভ্যুত্থানের পর সেই কারণেই ‘র’ ও পতিত খুনি আওয়ামী লীগ তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। তারা ভেবেছিল, হাদীকে শেষ করলে ভারতবিরোধী কণ্ঠরোধ সম্ভব হবে। কিন্তু তারা ভুলে গেছে, একজন হাদিকে হত্যা করে জাতির কণ্ঠরোধ করা যায় না। আজ বাংলাদেশের প্রতিটি ইঞ্চি মাটি হাদির চেতনায় উজ্জীবিত। এবার দেখা যাবে, তারা কতজন হাদিকে হত্যা করতে পারে।
এমএল/এআরবি